আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
১। ২০২৫ সালের জুন মাসে আমার বিয়ে হয়েছে। আমার বিয়ের কাবিনের কাগজে মোহরানা লিখা হয়েছিলো ৪লাখ টাকার সোনার গয়না। আমার মোহরানা আমার শ্বাশুড়ির গয়না থেকে আদায় করা হয়েছিলো। সেই সময় তারা স্বর্নের দাম অনুযায়ী আমাকে ৪লাখ টাকার গয়না দেন। কিন্তু আমাদেরকে জানানো হয়নি সেখানে স্বর্ণের পরিমাণ কতটুকু ছিলো। আমাদের পক্ষ থেকে কেউ জানতেও চায়নি। আমাকে গয়না দেওয়ার সময়ও তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আর আমাকে মৌখিক মালিকানাও দেওয়া হয়নি। শুধু আমার গায়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আমি এখনও জানি না আমাকে কি পরিমাণ গয়না দেওয়া হয়েছিলো। শুধু জানতাম সেই সময়ের ৪লাখ টাকার গয়না দেওয়া হয়েছিল। এখন সেগুলোর বাজার মূল্য কত হবে তাও জানি না।
আর গয়না গুলো আমি আমার শ্বশুর বাড়ি আসার পর থেকে আমার শ্বাশুড়ির কাছেই আছে। গয়না গুলো আমার মোহরানার নাম করে দেওয়া হলেও সম্ভবত এর প্রকৃত মালিকানা আমাকে দেওয়া হয়নি। কারণ আমি আমার ইচ্ছামত এই গয়নার ব্যবহার করতে পারি না। আমাকে বিয়ের সময় আমার শ্বাশুড়ি এমন কথা বলেছিলেন যে, আমার শ্বাশুড়ি আমাকে তার গয়না দিয়ে বিয়ে করিয়ে নিয়েছেন তবে আমি যেন এই গয়না আমার দেবরের বিয়ের সময় তার বউকে দেই।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে এতে কি আমার মোহরানা আদায় হয়েছে?
২। যেহেতু গয়না এখন আমার শ্বাশুড়ির কাছেই রাখা আছে! উনি তার নিজ ইচ্ছায় আমার সেই গয়না বিক্রি করে উনার জন্য নতুন গয়না কিনতে চাইছেন। আমাকে শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন আমার এতে কোন সমস্যা আছে কি না! আমি তার সামনে কিছু বলতে পারিনি। তবে আমার মনের মধ্যে কিছু কষ্ট লাগে৷ আমি যদি মন থেকে অনুমতি না দিয়ে শুধু ভদ্রতার খাতিরে তার কথায় সায় দেই তাহলে কি তার জন্য আমার স্বর্ণ বিক্রি করে নিজের জন্য কাজে লাগানো জায়েয হবে?


৩। আমার মনের মধ্যে সুপ্ত আশা ছিলো যে আমি আমার মোহরানার টাকা থেকে স্বামীকে সাথে নিয়ে উমরাহ করতে যাব। তবে আমার সেই ইচ্ছা কখনোই পূরণ হবে না। আমার শ্বশুর বাড়ির মানুষ কখনোই ওই গয়না বিক্রি করতে দিবেন না।
এখন আমার জন্য কি এই মোহরানার গয়নার দাবি ছেড়ে দেওয়াই কি উত্তম হবে ?
৪। যদি দাবি ছেড়ে না দেই আর আমাকে আমার মোহরানার প্রাপ্য সম্পদ ভোগের সুযোগও দেওয়া না হয় তাহলে কি আমার স্বামীর গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (683,400 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

মোহরানার টাকার হকদার স্ত্রী।
এর একচ্ছত্র মালিকানা স্ত্রীর।
মোহরানার টাকা যদি স্বামী আদায় না করে,সেক্ষেত্রে উক্ত মোহরানার টাকা স্বামীর জিম্মায় ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে।

স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া জরুরী।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   
  
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ [٥:٥] 

তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর। [সূরা মায়িদা-৫] 

وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ  [٦٠:١٠] 

তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। [সূরা মুমতাহিনা-১০]

যদি আপনার স্ত্রী তার সন্তুষ্টি চিত্তে মাফ করে দেয়,বা কমিয়ে দেয়,তাহলে তা জায়েজ হবে।
তার থেকে জোড় করে কমিয়া নেওয়া যাবেনা।
,    
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  

واحل لكما ما وراء ذلكم ان تبتغوا باموالكم محصنين غير مسافحين فما استمتعتم به منهن فاتوهن اجورهن فريضة ولا جناح عليكم فيما تراضيتم به من بعد الفريضة ان الله كان عليما حكيما

উল্লিখিত নারীরা ছাড়া অন্যদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, যে স্বীয় সম্পদ দ্বারা প্রয়াসী হবে তাদের সাথে বিবাহবন্ধনে, ব্যভিচারে নয়। অতএব তাদের নিকট থেকে তোমরা যে আনন্দ উপভোগ করেছ (সে কারণে) তাদের ধার্যকৃত মোহর তাদেরকে প্রদান করবে। আর মোহর নির্ধারিত থাকার পরও কোনো বিষয়ে পরস্পর সম্মত হলে তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।-সূরা নিসা : ২৪

واتوا النساء صدقاتهن نحلة فان طبن لكم عن شيئ منه نفسا فكلوا هنيئا مرئيا

এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে  দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর।-সূরা নিসা : ৪
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার মোহরানা আদায় হয়নি। পুনরায় মোহরানা আদায় করতে হবে। এটি আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক। 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তার জন্য উক্ত স্বর্ণ বিক্রি করে নিজের জন্য কাজে লাগানো জায়েয হবেনা।

(০৩)
এটি আপনার ব্যাক্তিগত বিষয়। 

(০৪)
প্রশ্নের  বিবরণ মতে আপনার স্বামী আপনাকে মোহরানা দেয়নি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যদি আপনাকে মোহরানা না দেয়, এক্ষেত্রে তিনি গুনাহ্গার হবেন।

কিয়ামতের ময়দানে মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে তাকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...