আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,


‌১. ওয়াটসআপে নন-মাহরাম নারীকে ব্লক করতে গিয়ে ভুল করে ব্লকের সাথে রিপোর্ট দিয়ে ফেলেছি।এখন এতে কি তার হক নষ্ট হয়েছে? তার কাছে কি ক্ষমা চাইতে হবে?

২.যদি নামাজে ভুল করে সাহু সিজদা দেওয়া শুরু করলাম কিন্তু মাঝপথে তা বুঝতে পারলাম।ঐ সময় আমার করণীয় কি?(বি:দ্র: নামাজে কোনো ভুল হয়নি)

৩. যদি না জেনে কারো জিনিস ব্যাবহার করি। তবে তার জন্য যদি ৫-১০ টাকা যদি ছাদকা করি তবে কি আমি দায়মুক্ত হবো?

৪.কোন ব্যাক্তি এক বা একাধিক গুণাহে লিপ্ত। কিন্তু সে তা ছাড়ার চেষ্টা করছে।সে কি দাওয়াতি কাজের জন্য ঐ গুণাহ থেকে মানুষ কে সতর্ক করতে পারবে? যেমন কেউ হস্তমৈথুন করে কিন্তু সে তা ছাড়তে চায়।সে প্রত্যেকবার হস্তমৈথুন এর পর তওবা করে।সে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় হস্তমৈথুন করবে না। কিন্তু ১ বা ২ দিন পর সে তা করে বসে।এখন সে কি মানুষকে হস্তমৈথুন না করার জন্য দাওয়াতি কাজের উদ্দেশ্যে আহ্বান করতে পারবে?

৫. নামাজে সাহু সিজদা দিতে ভুলে গিয়ে সালাম ফিরাই। সালাম ফিরানোর পর আমি উঠতে নিয়েছিলাম আর কোনো কথা বলিনি (তখনো পুরোপুরি উঠিনি)।পরে মনে করার পর আবার সাহু সিজদা দিয়ে তাশাহুদ দরূদ ইত্যাদি পড়ে সালাম ফিরাই। নামাজ কি হয়েছে?(ফজরের সুন্নত ৪ ই ডিসেম্বর ২০২৫)

৬. যদি পাশের রুমে স্বামী স্ত্রী সহবাস করে আর কেউ যদি আড়িপেতে শুনে তবে কি বান্দার হক নষ্ট হবে?

৭.খেলতে গিয়ে যদি মাগরিব এর জামাতের ১ম রাকাত যদি মিস হয় তবে কি গুণাহ হবে?

৮.খেলার সময় আমরা দুই টিমে ছিলাম। আমার টিমে একজন আউট হয়েছিল কিন্তু অপর টিম তা বুঝতে পারেনি।তাই সে খেলা চালিয়ে যেতে থাকে। অবশ্য ম্যাচে আমার টিম হেরেছিল।এখন এই কারণে কি অপর টিমের হক নষ্ট হয়েছে?(আমি সম্ভবত ক্যাপ্টেন ছিলাম)

৯. ৮ নং প্রশ্ন বর্ণ অবস্থায় যদি হক নষ্ট হয়ে থাকে আমার করণীয় কি?

১০. আমার আম্মু অনেক সময় আমার ফোনে আন্টি, আমার কাজিনদের সাথে কথা বলে।এই কারণে তাদের সাথে ওয়াটসআপ,ইমু ও ফোন কনটেক্টে এড থাকা কি জায়েয?(আমি তাদের সাথে কথা বলিনা ও কোনো ফেতনার আশঙ্কা নাই)

১১. খাবারে ফু দিয়ে খাওয়া কি মাকরুহ?

১২. যদি কেউ নামাজ পড়ার সময় বসার জায়াগায় ভুল করে দাঁড়িয়ে যায় কিন্তু পুরোপুরি দাড়ায়নি।এরপর সে ভুল বুঝতে পেরে বসে পরে। এক্ষেত্রে তাকে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (704,310 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ الزُّبَيْرِ أَبِي عَبْدِ السَّلَامِ عَنْ أَيُّوبَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مِكْرَزٍ الْفِهْرِيِّ عَنْ وَابِصَةَ بْنِ مَعْبَدٍ الْأَسَدِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِوَابِصَةَ جِئْتَ تَسْأَلُ عَنْ الْبِرِّ وَالْإِثْمِ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَجَمَعَ أَصَابِعَهُ فَضَرَبَ بِهَا صَدْرَهُ وَقَالَ اسْتَفْتِ نَفْسَكَ اسْتَفْتِ قَلْبَكَ يَا وَابِصَةُ ثَلَاثًا الْبِرُّ مَا اطْمَأَنَّتْ إِلَيْهِ النَّفْسُ وَاطْمَأَنَّ إِلَيْهِ الْقَلْبُ وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي النَّفْسِ وَتَرَدَّدَ فِي الصَّدْرِ وَإِنْ أَفْتَاكَ النَّاسُ وَأَفْتَوْكَ 

ওয়াবিসা ইবনু মা’বাদ আল আসাদী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াবিসাকে বলেন, “তুমি আমাকে পাপ ও পুণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছ?” তিনি বলেন, হাঁ। তিনি বলেন, তখন তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলি মুষ্টিবদ্ধ করে তা দ্বারা তার বুকে আঘাত করে বললেন: “হে ওয়াবিসা! তুমি তোমার নাফসকে জিজ্ঞেস কর, তোমার অন্তরকে জিজ্ঞেস কর।”- একথা তিনি তিনবার বললেন। “তোমার নাফস বা মন যে বিষয়ে প্রশান্তি বা নিশ্চিন্ততা লাভ করে, তোমার অন্তর যে বিষয়ের প্রতি প্রশান্ত- নিশ্চিন্ত হয়-তা-ই হলো পূণ্য। আর তোমার মন যে বিষয়ে চিন্তিত হয়, তোমার অন্তরে যা ইতস্ততবোধ বা দ্বিধা সঞ্চার করে-তা-ই হলো পাপ। লোকেরা যদি তোমাকে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, তবে তুমি তা গ্রহণ করবে।”

(সুনানে আদ দারেমী ২৫৭১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি যদি তাকে এমনিতেই রিপোর্ট মেরে থাকেন রিপোর্ট করার মত যদি তার দ্বারা কোন দোষ সংঘটিত না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি আপনার মাহরাম কোন নারীর মাধ্যমে তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবেন।

(০২)
এক্ষেত্রে সাহু সিজদা পূর্ণ না করলেও নামাজ হয়ে যাবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে মূল মাসয়ালা হলো যার জিনিস আপনি ব্যবহার করেছেন, তাকে বিষয়টি জানাতে হবে। তিনি যদি মাফ না করে ক্ষতিপূরণ চান, সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

(০৪)
সে মানুষকে হস্তমৈথুন না করার জন্য দাওয়াতি কাজের উদ্দেশ্যে আহ্বান করতে পারবে।

(০৫)
নামাজ হয়েছে।

(০৬)
এক্ষেত্রে বান্দার হক নষ্ট হবে।
তবে যদি এমনিতেই শোনা যায় তাহলে বান্দার হক নষ্ট হবে না, তবে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।

(০৭)
এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
তবে তাকবিরে উলা মিস হওয়ার দরুন ফজিলত কম হব।

(০৮)
এতে ঐ ব্যাক্তির গুনাহ হয়েছে,ধোকা দেয়ার গুনাহ।

(০৯)
উক্ত কাজ তো আপনি করেননি,তাই আপনাকে কিছুই করতে হবেনা।

(১০)
প্রশ্নের বিবরন মতে এই কারণে তাদের সাথে ওয়াটসআপ,ইমু ও ফোন কনটেক্টে এড থাকা নাজায়েজ নয়। 

(১১)
খাবারে ফু দিয়ে খাওয়া মাকরুহ।

النتف في الفتاوى (1/ 245):
"وأما الكراهية فأولها النفخ في الطعام."

(১২)
যদি সে দাঁড়ানোর নিকটতম হয়ে থাকে তাহলে তাকে সেজদায়ে সাহু দিতে হবে।

আর যদি সে বসার নিকটতম হয়ে থাকে তাহলে তাকে সেজদায় সাহু দিতে হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (704,310 points)
مسند أحمد ت شاكر (3/ 251):

"عن ابن عباس قال: نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن النفخ في الطعام والشراب."

عمدة القاري شرح صحيح البخاري (21/ 200):

"وقال الملهب: التنفس إنما نهى عنه كما نهى عن النفخ في الطعام والشراب والله أعلم من أجل أنه لا بد أن يقع فيه شيء من ريقه فيعافه الطاعم له ويستقذر أكله فنهى لذلك لئلا يفسد على من يريد تناوله، وهذا إذا أكل أو شرب مع غيره، وإذا كان وحده أو مع من يعلم أنه لا يستقذر شيئا منه فلا بأس بالتنفس في الإناء."

البحر المحيط الثجاج في شرح صحيح الإمام مسلم بن الحجاج (34/ 176):

"وقال الحافظ: و الأولى تعميم المنع؛ لأنه لايؤمَن مع ذلك أن تَفْضلفضلة، أو يحصل التقذر من الإناء، أو نحو ذلك."

النتف في الفتاوى (1/ 245):

"وأما الكراهية فأولها النفخ في الطعام."

الموسوعة الفقهية الكويتية (41/ 24):

"ويرى أبو يوسف من الحنفية : أنه لايكره النفخ في الطعام إلا ما له صوت مثل أف وهو تفسير النهي."

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6/ 340):

"وعن الثاني أنه لايكره النفخ في الطعام إلا بما له صوت نحو أف وهو محمل النهي."

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...