জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
পোশাক পরিচ্ছেদের ব্যাপারে শরীয়তের কিছু মূলনীতি রয়েছে।
তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ
নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ না করা।
এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে অত্যন্ত কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
,
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : ( ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﺑِﺎﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬَﺎﺕِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﺑِﺎﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ) .
তরজমাঃ নবীজী সাঃ মহিলার সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষ ও পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারী মহিলার উপর লা'নত দিয়েছেন। সহীহ বুখারী-৫৪২৫।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: «لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ»
নারীর পোষাক পরিধানকারী পুরুষকে এবং পুরুষের পোষাক পরিধানকারী নারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন।-আবু দাউদ,হাদীস(শামেলা): ৪০৯৮
বেশ ধারণ করার অন্যতম মাধ্যম হল পোষাক। অতএব নারীর জন্য পুরুষের পোষাক পরিধান করা আর পুরুষের জন্য নারীর পোষাক পরিধান করা হারাম ও কবীরা গুনাহ।
আরো জানুনঃ
,
★সুতরাং কোনো পোশাক যদি এমন হয় যেটা সাধারণত প্রায়ই জায়গাতেই নারী পুরুষ উভয় পড়ে,তাহলে সে পোশাক পরিধান করাতে সাদৃশ্য থাকার গুনাহ হবেনা।
,
(০২)
ক্যাপ, হ্যাট ইত্যাদি যদি কাফের ফাসেকদের পোশাক হয়,তাহলে এর দ্বারা তাদের সাদৃশ্যতার কারনে এটি পরিধান করা নাজায়েজ হবে।
,
আর যদি এটি ফাসেকদের পোশাক না হয়,তাহলে কোনো গুনাহ হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ «ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ »
তরজমাঃ-রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি যার অনুসরণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।সুনানে আবু-দাউদ৩৫১২
,
ক্যাপ ইত্যাদি যেহেতু বর্তমানে অনেক মুসলমান কাজ ইত্যাদির মধ্যে পরিধান করে থাকে,তাই তার ব্যবহার নাজায়েজ হবেনা।
,
(০৩)
মনের মধ্যে তাকে নিয়ে ভাবনা আসলে সেটি গুনাহ হবে।
যদি কোনো ভাবনা না আসে,তাহলে কোনো গুনাহ হবেনা।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
,
(০৪)
এটার ব্যবহার নাজায়েজ নয়।
তবে পরিক্ষার ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার জায়েজ নেই।
কেননা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এটার অনুমতি নেই।