আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
450 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

প্রশ্নটি আমার এক বোনের।

তার বয়স বর্তমানে ২৭ বছর পেরিয়েছে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বোনটি অনার্স ২য় বর্ষে পরাকালীন অর্থাৎ ২১ বছর বয়সে তার পরিচয় হয় এক ব্যক্তির সাথে। (যিনি বর্তমানে তার স্বামী)। তখন তিনি শরীয়ি পর্দা না করলেও বিবাহ ব্যাতীত সম্পর্কের ভয়াবহতা বুঝতেন আলহামদুলিল্লাহ। তাই তার স্বামী এবং তার পরিবারকে বলেন বাসায় প্রস্তাব পাঠাতে। প্রস্তাব পাঠানো হলে বোনটির পিতা মাতা অগ্রাহ্য করেন বয়স কম এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠার অভাবে। বলা বাহুল্য বোনটির শিক্ষাগত যোগ্যতা তার স্বামীর চাইতে বেশী। বারবার প্রস্তাব দেয়ার পরেও বোনটির পরিবার রাজী না হওয়ায় তারা পরস্পর থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা কঠিন হয়ে পরায় তারা ইজাব কবুল এবং ৭-৮ জন স্বাক্ষী যারা সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক এর উপস্থিতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ৬ বছর আগে যখন বোনটির বয়স ছিল ২১ বছর।

তারা দুজনে সিদ্ধান্তে উপনীত হন তারা বোনটির বাবা মাকে রাজী করিয়েই সংসার শুরু করবেন। তাই তারা বিয়ের ব্যাপারটি গোপন করে আলাদা থাকা শুরু করেন। এবং প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে থাকনে মেয়ের পরিবারকে রাজী করানোর। কিন্তু বোনটির পিতা মানতে নারাজ। তিনি পাত্র হিসেবে এমন কাউকে চান যিনি অঢেল সম্পদের মালিক। বোনটির পিতা কথায় কথায় তার পরিবারের সকলকে গালমন্দ করেন কারণ অকারণে। এবং তিনি মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে মোটেও চিন্তিত নন। বর্তমানে তিনি সংসারে কোন খরচ দেন না। বোনটির বেতন এবং তার স্বামীর সহয়তায় তার পিতা মাতার সংসার চলে বর্তমানে। তবুও তার পিতা তার স্বামীকে মানতে নারাজ। বোনটির পিতা ইসলামের সকল মুলনীতির ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল নয়। নামাজে অনিয়মিত।
আজ ৬ বছর ধরে তারা আলাদা বসবাস করছেন রাব্বুল আলামীন কখনো সব ঠিক করবেন তার আশায়। বর্তমানে বোনটিকে হতাশা গ্রাস করছে, যদিও তারা আশা ছাডেননি। নিয়মিত সালাতুল হাজত আর ইস্তেগফারের মাধ্যমে দোয়া করে যাচ্ছেন দুজনেই। তবে বোনটি অসুস্থ হয়ে পডছেন প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছেন। কিন্তু পিতার অসন্তোষকেও ভয় পাচ্ছেন তাহারা।
এমতাবস্থায় তাদের করণীয় কি।


এত বড প্রশ্নের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। জাযাকাল্লাহুল খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (710,440 points)
ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1524

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মাতাপিতাকে বিয়ের জরুরত বুঝাবে।মাতাপিতার পরামর্শে বিয়ে করবে।এক্ষেত্রে দ্বীনদারিত্বকে প্রদাণ্য দেয়াই দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি অর্জনের উত্তম মাধ্যম হবে।হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/18

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণমতে যেহেতু পাত্রীর বয়স ২৭ পেরিয়ে যাচ্ছে, এদিকে মেয়ে সম্পর্কে মাতাপিতার কোনো খেয়াল-ই নাই। মাতাপিতা টাকা এবং সম্পদকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তাই আমরা বলব, প্রশ্নে উল্লেখিত ঐ বোন তার স্বামীর সাথে সংসার করতে পারবে। এক্ষেত্রে মাতাপিতার বদ’দুআ কে অগ্রাহ্য করে সংসারের দিকে অগ্রসর হওয়ারই কাম্য ও উচিৎ। কেননা জীবন আর কয়দিনের । তাছাড়া গোনাহমুক্ত থাকার জন্য সাংসারিক জীবন অতিবাহিত করা একান্ত জরুরী। তাই এখন সংসার করার জন্য যদি মাতাপিতা বদ দুআ দেয়,তাহলে আশা করা যায়,তা কবুল হবে না। তবে মাতাপিতার  দেখভাল, খোজখবর অবশ্যই রাখতে হবে। তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে কোনোরূপ ত্রুতি করা যাবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...