আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
871 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (98 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
১.ভাংতি রোজা ১১ টা থাকলে তা রেখে শাওয়ালের ৬ রোজা রাখার সময় আছে এখনো?!  বর্তমানে ভাংতি রোজা রাখছি, আজকে সহ ৩ টা হবে! বাকি রোজাগুলো রেখে ৬ রোজা রাখার মতো সময় পাওয়া যাবে নাকি শেষ হয়ে যাবে?
২.যদি ৬ রোজা রাখার সময় না পাওয়া যায় তবে উক্ত অবস্থায় কি  ভাংতি রোজার আগে ৬ রোজা আগে রেখে নিবো?

৩. রমাদান মাসে রোজা থাকাবস্থায় যদি কানের লতির ছিদ্র থেকে সামান্য পুঁজের মতো কিছু বের হয় তাহলে কি সেই রোজা ভেঙে যায়?  ভাংতি রোজার সাথে সেই রোজা কাজা করে আবার রাখতে হবে?  ( কানের ছিদ্রে কিছুদিন চিকন শলার কাঠি পরেছিলাম! কয়েকদিন পর সেখানে হালকা ব্যাথা হচ্ছিলো,  আর ওজু / গোসল করার সময় কাঠি টি নাড়া দিলে কাঠির সাথে সামান্য পুঁজের মতো  কিছু লেগে আসতো! এতে কি রোজা ভেঙে গিয়েছে?)
৪. রামাদানের শেষ দশদিনের যে কোনো একদিন ইতিকাফ করবো ভেবেছিলাম,  মা কে বলেছিলাম রাজি হয়েছিলেন!  কিন্তু বাসায় গেস্ট থাকায় সেরকম সিচুয়েশন পাই নি তাই একদিন ও ইতিকাফে বসি নি, কিন্তু প্রায় প্রতিদিন ই ভাবতাম কালকে বা পরশু বসবো!  এখন কি উক্ত ইতিকাফে বসতেই হবে আমার কাজা করে?!
শুনেছি রোজা রেখে ইতিকাফ করতে হয়!  যদি কাজা করতে হয় ইতিকাফ সেটা কি ভাংতি রোজা  বা শাওয়ালের ৬ রোজা  রাখাবস্থায় করা যাবে?  নাকি কাজা ইতিকাফের জন্য আলাদা রোজা রেখে করতে হবে? তাহলে উক্ত কাজা ইতিকাফের দিন যে রোজা রাখবো সেই রোজার নিয়ত কেমন হবে, কি নিয়তে রোজা  রাখবো বুঝিয়ে বলবেন দয়া করে!
জাযাকিল্লাহ খাইরান!

1 Answer

0 votes
by (717,920 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১+২)
সালেহ আল-মুনজ্জিদ বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:

 مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّامِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ

رواه مسلم (1164)

“যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখল অতঃপর এ রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।” [সহিহ মুসলিম (১১৬৪)]

হাদিসে উল্লেখিতثُمَّ শব্দটিحرف عطف যাالترتيب (বিন্যাস) ও التعقيب (ক্রমধারা) অর্থে ব্যবহৃত হয়।এদিক থেকেহাদিসটি প্রমাণ করছে যে, আগে রমজানের রোজাপূর্ণ করতে হবে। সেটা সুনির্দিষ্ট সময়ে আদায় হিসেবে হোক অথবা (শাওয়াল মাসে) কাযাপালন হিসেবেহোক। অর্থাৎ রমজানের রোজা পূর্ণ করার পর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখতে হবে। তাহলে হাদিসে উল্লেখিত সওয়াব পাওয়া যাবে।কারণ যে ব্যক্তির উপর রমজানের কাযা রোজা বাকী আছে সেতো পূর্ণ রমজান মাস রোজা রাখেনি। রমজান মাসের কিছুদিনরোজা রেখেছে। তবে কারো যদি এমন কোন ওজর থাকে যার ফলে তিনি শাওয়াল মাসে রমজানের কাযা রোজা রাখতে গিয়ে শাওয়ালের ছয়রোজা রাখতে পারেননি। যেমন কোন নারী যদি নিফাসগ্রস্ত (প্রসবোত্তর স্রাবগ্রস্ত) হন এবং গোটা শাওয়াল মাস তিনি রমজানের রোজা কাযা করেন তাহলে তিনি জিলক্বদ মাসে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখতে পারবেন। কারণ এ ব্যক্তির ওজর শরিয়তেগ্রহণযোগ্য। অন্য যাদের এমন কোন ওজর আছে তারা সকলে রমজানের রোজা কাযা করার পর শাওয়ালের ছয় রোজা জিলক্বদ মাসে কাযা পালন করতে পারবেন। কিন্তু কোন ওজর ছাড়া কেউ যদি ছয় রোজা না রাখে এবং শাওয়াল মাস শেষ হয়ে যায় তাহলে সে ব্যক্তি এই সওয়াব পাবেন না। শাইখ উছাইমীনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল: কোন নারীর উপর যদি রমজানের রোজার ঋণ থেকে যায় তাহলে তার জন্য কি রমজানের ঋণের আগে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা জায়েয হবে; নাকি শাওয়ালের ছয়রোজার আগে রমজানের ঋণের রোজা রাখতেহবে? জবাবে তিনি বলেন: যদি কোন নারীর উপর রমজানের কাযা রোজা থাকে তাহলে তিনি কাযা রোজা পালনের আগে ছয়রোজা রাখবেন না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

  مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّامِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ 

رواه مسلم (1164)

“যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখল এবং এ রোজার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।” [সহিহ মুসলিম (১১৬৪)]

যার উপর কাযা রয়ে গেছে সেতো রমজানের রোজা পূর্ণ করেনি। সুতরাং সে কাযা আদায়ের আগে এই রোজা পালনের সওয়াব পাবে না। যদি ধরে নেয়া হয় যে, কাযা রোজা পালন করতে গোটা মাস লেগে যাবে(যেমন-কোন নারী যদি নিফাসগ্রস্ত হন এবং তিনি গোটা রমজানে একদিনও রোজা রাখতে না পারেন, শাওয়াল মাসে তিনি রমজানের কাযা রোজা রাখা শুরু করেন, কিন্তু কাযা রোজা শেষ করতে করতে জিলক্বদ মাস শুরু হয়ে যায়) তাহলে তিনিজিলক্বদ মাসে ছয়রোজা রাখবেন।এতে করে তিনি শাওয়াল মাসে ছয় রোজা রাখার সওয়াব পাবেন। কেননা তিনি বাধ্য হয়ে এই বিলম্ব করেছেন (যেহেতু শাওয়াল মাসে তার পক্ষে রোজা রাখা সম্ভবপর ছিল না)। তাই তিনি সওয়াব পাবেন।[ফতোয়া সমগ্র ১৯/২০] দেখুন ফতোয়া নং- 4082 ও 7863।

(৩) কানের ছিদ্র থেকে পুজ বা রক্ত নির্গত হলে এতে অজু ভঙ্গ হবে না। 

(৪) ইতিকাফ করতে পারবেন। যেহেতু নিয়ত করেছিলেন, তাই নিয়তকে পূর্ণ করা জরুরী। আপনি আলাদা রোযা রেখে ইতিকাফ করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 257 views
...