আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
300 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (35 points)
edited by
১।পিতা-মাতা যদি টাকা চায় তাহলে টাকা দেওয়া কি ওয়াজিব?

২।পিতা-মাতা যদি কোনো কারণ ব্যতীত বা ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে এই শঙ্কায় ব্যবসা করতে নিষেধ করে তাহলে সে আদেশ কি মানতে হবে?

৩।পিতা মাতা যদি রসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর  সুন্নাত বাবরি চুল রাখতে নিষেধ করে তাহলে কোনটা করব?সুন্নত পালন নাকি পিতা মাতার কথা শোনা।

৪।১০ বছরের পর কোনো ছেলে কি তার মাতা,বোন,খালা,নানী তাদের সাথে এক বিছানায় ঘুমাতে পারবে?

৫। কোনো অমুসলিম জীবিত থাকলে এবং তার গিবত করা হলে তার জন্য কি দোয়া করা যাবে?যেহেতু কোনো মুসলিমের গিবত করা হলে তার জন্য ক্ষমার দোয়া করা যায়।

৬।কোনো অমুসলিম অন্য দেশের বা নিজ দেশেরই খেলোয়াড়। তাদের গিবত করা হলে তা থেকে কিভাবে ক্ষমা পেতে হবে? তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকলে।

৭।শরীরের অবাঞ্ছিত লোম কাটার ক্ষেত্রে পায়খানার রাস্তার লোমও কি কাটতে হবে?

৮।আমার বয়স যখন প্রায় ১২ বছর তখন আনুমানিক ২৩-২৫ টি রোযা রাখেনি।এখন কি রোযাগুলোর কাযা আদায় করতে হবে?তখন বালেগ ছিলাম কিনা মনে নেই।

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1722 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধি-নিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭) (শেষ)

https://www.ifatwa.info/3712 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
يُشْتَرَطُ لِوُجُوبِ الإِْنْفَاقِ عَلَى الأُْصُول مَا يَأْتِي
নিম্নবর্ণিত মূলনীতির আলোকে নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে।
أ - أَنْ يَكُونَ الأَْصْل فَقِيرًا أَوْ عَاجِزًا عَنِ الْكَسْبِ، فَلاَ يَجِبُ عَلَى الْفَرْعِ نَفَقَةُ أَصْلِهِ إِنْ كَانَ أَصْلُهُ غَنِيًّا أَوْ قَادِرًا عَلَى الْكَسْبِ، لأَِنَّهَا تَجِبُ عَلَى سَبِيل الْمُوَاسَاةِ وَالْبِرِّ، وَالْقَادِرُ عَلَى الْكَسْبِ كَالْمُوسِرِ مُسْتَغْنٍ عَنِ الْمُوَاسَاةِ
(ক)পিতা-মাতা সহ সমস্ত উসূল বা মূল জ্বড়(বাপ-দাদা তার এবং উপরের জন) গরিব, উপার্জনে অক্ষম হওয়া শর্ত।সুতরাং উসূল ধনী বা উপার্জনে সক্ষম অবস্থায় ফুরু' বা সন্তানাদির উপর না নাফক্বাহ দেওয়া ওয়াজিব হবেনা।তখন নেকী অর্জন ও আত্মীয়তার বন্ধনকে দৃঢ়তর করতে নাফক্বাহকে ওয়াজিব করা হবে।(যাকে মুস্তাহাব বলা যাবে)
ب - أَنْ يَكُونَ الْفَرْعُ مُوسِرًا وَهَذَا بِاتِّفَاقِ الْفُقَهَاءِ، أَوْ قَادِرًا عَلَى التَّكَسُّبِ وَهُوَ مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الْحَنَابِلَةُ وَهُوَ الأَْصَحُّ عِنْدَ الشَّافِعِيَّةِ، وَالرِّوَايَةُ الَّتِي جَزَمَ بِهَا صَاحِبُ الْهِدَايَةِ عِنْدَ الْحَنَفِيَّةِ (٣) ، وَأَنْ يَكُونَ فِي مَالِهِ أَوْ كَسْبِهِ فَضْل عَنْ نَفَقَةِ نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَامْرَأَتِهِ، فَإِنْ لَمْ يَفْضُل مِنْهُ شَيْءٌ لاَ تَجِبُ عَلَيْهِ النَّفَقَةُ
(খ) ফারা' বা সন্তানাদি ধণী হওয়া। এটা সমস্ত উলামায়ে কেরামদের অভিমত।(আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়-৪১/৭৫) (শেষ)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) মাতাপিতা স্বাবলম্ভী হওয়ার পরও সন্তানের নিকট টাকা চাইলে সন্তানের জন্য মাতাপিতাকে টাকা দেওয়া ওয়াজিব নয়। আর স্বাবলম্ভী না হলে মাতাপিতার ভরণপোষণ সন্তানের উপর ওয়াজিব। 

(২) যেহেতু ব্যবসায় ক্ষতি হওয়া নিশ্চিত নয়, তাই মাতাপিতার আদেশকে এক্ষেত্রে মানা ওয়াজিব হবে না। 

(৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত পালানার্থে মাতাপিতার বিধি-নিষেধের কোনো তোয়াক্কা করা যাবে না। সুতারাং বাবড়ি চুল রাখা যাবে। 

(৪)সহীহ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত রয়েছে যে,সন্তানদের বয়স দশ হয়ে গেলে তাদের শয়নস্থল-কে পৃথক করে দিতে হবে।
যেমন হযরত আমর বিন শুয়াইব তার সুত্রে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣُﺮُﻭﺍ ﺃَﻭْﻟَﺎﺩَﻛُﻢْ ﺑِﺎﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﺳَﺒْﻊِ ﺳِﻨِﻴﻦَ ، ﻭَﺍﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﻋَﺸْﺮٍ ، ﻭَﻓَﺮِّﻗُﻮﺍ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻀَﺎﺟِﻊِ ) .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানাদিকে নামাযের আদেশ দাও যখন তারা সপ্ত বর্ষে উপনীত হয়।নামায না পড়ার ধরুণ তাদেরকে প্রহার করো যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হয়।এবং সাথে সাথে তাদের শয়নস্থল কে পৃথক করে দাও।(সুনানু আবি-দাউদ-৪১৮) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/757

(৫) কোনো অমুসলিমের গিবত করা হলে তার জন্য ক্ষমার দুআ করা যাবে না। তবে তার হেদায়তের দুআ করা যাবে। 

(৬) আল্লাহর কাছে তাওবাহ করতে হবে। 

(৭) যেহেতু পায়খানার রাস্তার লোম নাজাসতকে বিস্তার করতে সহায়কের ভূমিকা পালন করবে, তাই উক্ত লোমকে কর্তন করতে হবে। 

(৮) দেখনু ভাবুন মনে করুন তখন কি আপনি বালেগ ছিলেন। আপনি আপনার মা বা বড় ভাই বোনকে জিজ্ঞাসা করুন। যদি বালিগ অবস্থায় ঐ রোযাগুলি কাযা হয়ে থাকে, তাহলে কাযা করা লাগবে। নুতবা লাগবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2187


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...