আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4,386 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
edited by

আসসালামু আ'লাইকুম সম্মানিত শাইখ... আশা করি আল্লাহ আপনাকে ভালো রেখেছেন 

আমার প্রশ্নঃ

এক যুবকের মাথার চুল এবার সে খুব বড় রেখেছে আলহামদুলিল্লাহ... এখন চুল বড় থাকার কারণে এলোমেলো হয়ে যায় । এখন সে কি চুলের শেইপ ঠিক রাখার জন্য মাথায় নরমাল ব্যান্ড ইউজ করতে পারবে? যেগুলো সাধারণত ছেলেরা ইউজ করে না কিন্তু যাদের মাথার চুল বড় তারা ইউজ করে থাকে।। এটা করলে কি নারীদের পোশাক আশাকের সাথে সেটা সাদৃশ্যপূর্ন হবে ?

উল্লেখ্য বাজারে ছেলেদের চুলের ব্যান্ড নামে আলাদা এক প্রকারের ব্যান্ড পাওয়া যায় ...

 শাইখ নিচের  ছবিটাই 

বাজারে দোকানে জিজ্ঞেস করায় তারা বলে যে এই জাতীয় ব্যান্ড যেকেউ পড়তে পারে হউক ছেলে বা মেয়ে ( নিচে আমি পিকচার দিয়েছি ) 

এখন এটা যদি কোনো ছেলে ইউজ করে তাহলে কি সে গুনাহগার হবে ? 

 [ যেহেতু হাদিসে বলা হয়েছে পুরুষ নারীর পোশাক পরিধান করবে না আর নারী পুরুষের টা না ]

তার চুলে কোনো প্রকার স্টাইল করা নেই, কোনো অমুসলিম এর অনুসরন করা হয় নাই... শুধু চুল টা বড় এই যা। অনুগ্রহ করে জানাবেন সম্মানিত শাইখ । জাযাকাল্লাহু খইর সম্মানিত শাইখ । 

 

Buy Kayoos Life Simplified Men's and Women's Metal Zig Zag Hair ...

by
আমার বাবরি চুল প্রায় কাদ পর্যন্ত ! এখন আমি কি আমার চুল ফিতা বা রাবার দিয়ে  বাধঁতে  পারবো????

1 Answer

0 votes
by (684,040 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحمن


পুরুষরা মাথায় ব্যান্ড বাধলে এটা মহিলাদের মতো হয়ে যায়।
তাদের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন হয়ে যায়, আর যেহেতু চুল সোজা রাখার জন্য অন্য পদ্ধতিও রয়েছে,(  টুপি ইত্যাদি পরিধান,নিয়মিত তৈল বা অন্য কিছু লাগিয়ে চুলের যত্ন নেওয়া)

তাই শরীয়ত পুরুষদের জন্য মাথায় ব্যান্ড বাধার  অনুমতি দেয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছে 
    حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
تَابَعَهُ عَمْرٌو ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ

যে সমস্ত পুরুষেরা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,আর যে সমস্ত মহিলারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,তাদের উপর রাসুল সাঃ লা'নত করেছেন। (বুখারী শরীফ ৫৮৮৫)   

তবে ঘরের মধ্যে এটি পড়া সংক্রান্ত কিছু উলামায়ে কেরামগন অনুমতি দিয়েছেন।   
আরো জানুনঃ 

★পুরুষদের চুল রাখার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আহকামঃ  

পুরুষের মাথার চুল রাখার ক্ষেত্রে বিধান হল, বাবরি চুল রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নাত। আর মাথা কামিয়ে রাখা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত। এটিকেও সুন্নাহ বলা যাবে। তবে সাহাবীদের সুন্নাহ। রাসূল সাঃ থেকে সরাসরি প্রমাণিত সুন্নাহ নয়। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুধু হজ্ব শেষে মাথার  চুল কামিয়েছেন মর্মে হাদীস পাওয়া যায়। এছাড়া আর কখনো চুল কামিয়েছেন মর্মে বর্ণনা না পাওয়া যায় না।
যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম রাঃ গণকেও অনুসরণীয় সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই মাথা কামিয়ে রাখাও সুন্নাহের অন্তর্ভূক্ত।

বাবরি রাখার তিনটি পদ্ধতি
এ বিষয়ে তিন ধরণের বর্ণনা এসেছে। যথা-
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল।
লিম্মা তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর বড় রাখা।
জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত আলম্বিত চুল।

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4185)
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল।  {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৫}

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوْقَ الْوَفْرَةِ، وَدُونَالْجُمَّةِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث–
4187)
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল ঘাড়ের উপর এবং কানের নীচ পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৭}

عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ: «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ: «لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4183)
হযরত বারা বিন আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে কান পর্যন্ত বাবরীধারী, লাল ইয়ামেনী চাদরের আবরণে রাসূল সাঃ থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ রহঃ অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন যে, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩}

এছাড়া চুল রাখার বাকি তরীকাগুলো জায়েজ পর্যায়ের। তবে এর মাঝে কতিপয় সূরত নিষিদ্ধ। 
যেমন-
মাথার এক অংম কামিয়ে ফেলা, অপর অংশে চুল রাখা।
কোন বিধর্মীদের অনুকরণে চুল রাখা।
কোন ফাসিক ব্যক্তির চুলের হেয়ার ষ্টাইল নকল করে চুল রাখা।
ইত্যাদি সূরত নাজায়েজ।

কিন্তু এছাড়া চুল ছোট করে রাখা, যে কোন পদ্ধতির চুল রাখাই জায়েজের আওতাধীন হবে।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ القَزَعِ»، وَالْقَزَعُ: أَنْ يُحْلَقَ رَأْسُ الصَّبِيِّ فَيُتْرَكَ بَعْضُ شَعْرِهِ (سنن ابى داود، رقم الحديث-4193)
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ কুযা করতে নিষেধ করেছেন। “কুযা”  বলা হয়, বাচ্চার মাথার একাংশ কামিয়ে ফেলা, আরেকাংশের  চুল না কামানো। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৩}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَتْ لِي ذُؤَابَةٌ، فَقَالَتْ لِي أُمِّي: لَا أَجُزُّهَا، «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمُدُّهَا، وَيَأْخُذُ بِهَا» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4197)
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মাথায় চুলের খোঁপা ছিল। আমার মা বলেন, আমি তা কাটবো না। কেননা, রাসূল সাঃ তা ধরে লম্বা করতেন এবং কাছে টেনে নিতেন। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৯৭}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...