(ক)
শরীয়তের বিধান হলো কুরবানীর প্রানী যদি প্রথম থেকেই লালন পালন করা হয়,সেক্ষেত্রে তার খাবার যদি ঘর থেকেই দেওয়া হয়,তাহলে দুধ খাওয়া,অন্যান্য ভাবে তার থেকে উপকৃত হওয়া জায়েজ আছে।
فتاوی ہندیہ
"فإن كان يعلفها فما اكتسب من لبنها أو انتفع من روثها فهو له، ولايتصدق بشيء، كذا في محيط السرخسي."
(الباب السادس،ج:5،ص:301،ط:مکتبه رشیدیه)
সারমর্মঃ
যদি তার খাদ্য দেওয়া হয়,তাহলে তার দুধ,গোবর থেকে যাহা উপার্জন করবে,সেটক তারই।
সেটি আর ছদকাহ করতে হবেনা।
(খ)
কুরবানীর পশুর বাচ্চা হলে, কুরবানীর পশু বাচ্চা দিলে ওই বাচ্চা জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। যদি সদকা না করে তবে কুরবানীর পশুর সাথে বাচ্চাকেও জবাই করবে এবং গোশত সদকা করে দিবে। [ আলমগীরী ৫/৩০১, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩]
(গ)
গরীব হলে (যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়) তার পশু হারিয়ে গেলে তার জন্য আরেকটি পশু কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীয়তের বিধান হলো, কুরবানীর নিয়তে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কুরবানী জায়েয হয় না তাহলে ওই পশুর কুরবানী সহীহ হবে না। এর স্থলে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। তবে ক্রেতা গরীব হলে ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাই কুরবানী করতে পারবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, ফাতাওয়া নাওয়াযেল ২৩৯, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গরিব উক্ত ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়েই কুরবানী দিবে।
ধনী নতুন করে আরেকটি পশু ক্রয় করবে।
(ঘ)
যদি ভুলক্রমে হয়,তাহলে উভয় কুরবানীতেই কোনো সমস্যা নেই।
,
কেননা শরীয়তের বিধান হলোঃ
জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দিলে সে পশু খাওয়া হারাম হয়ে যাবে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ
যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় নি, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। (সুরা আনআম-১২১)
তবে ভুলে বিসমিল্লাহ ছুটে গেলে জবাই সহীহ হয়ে যায়। ‘বিসমিল্লাহ’ ভুলে যাওয়ার কারণে জবাইকৃত পশু-পাখি হারাম হয়ে যায় না।
ভুলবশত বিসমিল্লাহ না পড়ে জবাই করা সম্পর্কে তাবিঈ ইবরাহীম নাখায়ী রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৮৫৪০)
হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
নিশ্চয় আল্লাহ আমার উম্মতের ভুল, বিস্মৃতি এবং বাধ্য হয়ে করা বিষয় ক্ষমা করেছেন। (ইবন মাজাহ ২০৪০)
(ঙ)
হ্যাঁ উক্ত টাকা প্রয়োজন অতিরিক্ত হলেই কুরবানী ওয়াজিব হবে।
যদিও এর পর নেসাব আর বাকি না থাকে।
,
(চ)
নফল হলো অতিরিক্ত আমল।
যে কেউ চাইলে আদায় করতে পারে।
(ছ)
অছিয়তের কুরবানী ঈদুল আযহার কুরবানীতে দেওয়া যাবে।
মান্নতের কুরবানীর ক্ষেত্রে যেহেতু কোনো পশুকেই মান্নত করা হয়,তাই মান্নত কৃত পূর্ণ এক পশুই কুরবানী দিতে হবে।
কুরবানীর দিন গুলোতে সেটি আদায় করবে।
শরীকানা কুরবানীতে অংশ নিবেনা।
,
(!!)
অছিয়তের কুরবানী সকলেই খেতে পারবে।
মান্নতের কুরবানীর গোশত ইত্যাদি সবই গরিব মিসকিনকে দিয়ে দিতে হবে।
(ঝ)
না,দেওয়া যাবেনা।
,
(ঞ)
হ্যাঁ জায়েজ আছে।
,
(ট)
হ্যাঁ সেই পশুর কুরবানী ছহীহ হবে।
,
(ঠ)
হ্যাঁ কুরবানীর পশুতে আকীকা করা যাবে।
আকীকার ভাগ নেওয়া যাবে।
সবটাই দান করতে হবেনা।
এটি সকলেই খেতে পারবে।
,
আকীকার গোশত পিতা-মাতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই খেতে পারবে। হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, (আকীকার গোশত) নিজে খাবে, অন্যদের খাওয়াবে এবং সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮)