আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)

আসসালামু'আলাইকুম, 

১। নামাজে কিরাত যদি আগে পরে হয় তাহলে নামাজে কি সমস্যা হয়? যেমনঃ ১ম রাকাতে সুরা ইখলাস পরের রাকাতে সুরা আছর। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাহ, নফল যেকোনো নামাজে যদি এমন হয় তাহলে কি নামাজের কোনো ক্ষতি হবে?

২। অনেক সুরার আয়াতের মাঝে মধ্যে মিল থাকার দরুন যদি নামাজে এক সুরা পাঠের মাঝে অন্য সুরার আয়াত পাঠ করে ফেলি তাহলে কি নামাজে সমস্যা হয়? যেমনঃ নামাজে সুরা লাইল এর ১ম আয়াত "وَٱلَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰ" পড়তে গিয়ে সুরা আস-শামস এর "وَٱلَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰهَا" পড়ে বাকিটুকু সুরা আল-লাইল পাঠ করলাম। এতে কি নামাজে সমস্যা হবে?

৩। মাঝে মধ্যে এমন হয় যে, সিজদা দু'টা দিলাম না একটা দিলাম এমন চিন্তা পরের রাকাতে চলে আসে, কিংবা শেষ রাকাতে চলে আসে। এমন চিন্তা আসলে কি করদার? সিজদা সাহু কি করতে হবে?

৪। জামাতে নামাজ পড়তে গিয়ে দেখি সবাই রুকুতে। তাড়াহুড়ো না করে নামাজে দাড়ালাম। আল্লাহু আকবার বলে যখন রুকুতে যাচ্ছি, তখন ই ইমাম সামি'আল্লাহুলিমান হামিদাহ বলল। এমতাবস্থায় কি রুকুর তাসবীহ পাঠ করে কওমার জন্য দাড়াব? না ইমামের সাথে কওমায় যাব। আর এ অবস্থায় কি রুকু কি পাওয়া গেল? নামাজের শেষে কি ওই রাকাত পড়া লাগবে?

জাযাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

(০১)
ইচ্ছাপূর্বক ভাবে এমনটি করা মাকরুহ।
অনিচ্ছায় এমন হয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবেনা। 

নফল,সুন্নাত নামাজের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। 

বিস্তারিত জানুনঃ  
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।
তবে অর্থ বিকৃত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই এহেন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
,     

(০৩)
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।কিন্তু যদি কারো প্রায় এরকম সন্দেহ হয়,তাহলে উনার বিধান হলো,

"وإن كثر الشك" تحرى و "عمل" أي أخذ "بغالب ظنه" لقوله صلى الله عليه وسلم: "إذا شك أحدكم فليتحر الصواب فليتم عليه" وحمل على ما إذا كثر الشك للرواية السابقة "فإن لم يغلب له ظن أخذ بالأقل" لقوله صلى الله عليه وسلم: "إذا سها أحدكم في صلاته فلم يدر واحدة صلى أو اثنتين فليبن على واحدة فإن لم يدر اثنتين صلى أو ثلاثا فليبن على اثنتين فإن لم يدر ثلاثا صلى أو أربعا فليبن على ثلاث ويسجد سجدتين قبل أن يسلم"

যদি কারো নামাযে সংখ্যা নিয়ে প্রায় সন্দেহ হয়,তাহলে উনি তাহাররি(সঠিক বিষয়ে পৌছার জন্য চিন্তাভাবনা করা) করে গালিবে যান্ন(প্রবল ধারণা) এর উপর আ'মল করবেন।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ নামাযে সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ করে,তাহলে সে যেন সঠিক বিষয়ে পৌছার চেষ্টা করে সে হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।তবে যদি চিন্তাভাবনার পরও কোনো সংখ্যার দিকে মনে প্রবল ধারণা না জন্মে, তাহলে সে যেন,কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সেই হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ নামাযে সন্দেহ করে,এক রা'কাত পড়েছে না দুই রা'কাত পড়েছে? তাহলে সে যেন এক রা'কাত ধরে নিয়ে সেই হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।এভাবে দুই/তিন বা তিন/চার নিয়ে সন্দেহ হলে কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সে নামাযকে সম্পন্ন করবে।এবং শেষে যেন সে সেজদায়ে সাহু দেয়।(মারাকিল ফালাহ-১/৪৭৭)

বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1797

প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সচরাচর এমন হলে সে কম সংখ্যাকে ধরবে,যখনই মনে আসবে, তখন সেই বাকি সেজদাহ আদায় করবে ,এবং শেষে সেজদায়ে সাহু দিবে।
,
শরীয়তের বিধান হলো ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

(০৪)
এখানে মাসয়ালা হলো সোজা হয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলে তাকবির বলে রুকুতে গিয়ে ইমামকে সামান্য সময়ের জন্য হলেও পেতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনার রুকুতে যাওয়ার পূর্বেই ইমাম সাহেব উঠে গিয়েছে,তাই সেই রাকাত আদায় হয়নি।
তাসবিহ পাঠ করতে হবেনা।
সরাসরি উঠে যাবেন,শেষে আরো এক রাকাত আদায় করতে হবে।       

বিস্তারিত জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...