আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
394 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (47 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

মুহতারাম, বর্তমানে মুসলমান লোকসকলের মধ্যে হালাল ও হারাম বিষয়ে সম্যক ধারণা বা সচেতনতার স্বল্পতা খুবই প্রবল। দীর্ঘদিন ধরে কোন কাজ হালাল মনে করে করছে কিন্তু আদতে তা হারাম - এমনটি তো প্রায়ই দেখা যায়। এই প্রেক্ষিতে কিছু প্রশ্ন:

১) দাওয়াতে তাবলীগের মেহনতে বিভিন্ন সময়ে যখন সফরে বের হওয়া হয় এসব সফরের জামাতে সদ্য দ্বীনের ওপর চলার চেষ্টা করছে এমন সাথীদের কিংবা একেবারেই নতুন সাথীদের একটি বড় অংশ দেখা যায়।

বাস্তব অভিজ্ঞতায় প্রত্যক্ষভাবে দেখা যায় যে তারা অনেকেই হালাল হারাম সম্পর্কে সম্যক অবগত ও সচেতন নয় (দুঃখজনকভাবে কিছু পুরাতন সাথীদের মধ্যেও এমনটি দেখা যায়) কিন্তু এসব সফরে খাওয়ার খরচ, যাতায়াতের খরচ ইত্যাদি খেদমতের সকল খরচে জামাতের সকলের সমান অংশগ্রহণ থাকে। তাহলে এখানে এ আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে বিদ্যমান যে এই খরচের মধ্যে কারো হারাম টাকা অন্তর্ভুক্ত আছে (এবং বাস্তবে এমনটি হতে আমি দেখেছিও); আবার অনেকসময় মেহমানদারীও হয় যখন দেখা যায় মেজবানের উপার্জন সম্পর্কে সম্যক ধারণা অনেক সময়ই নেওয়া হয় না।

এসব বিষয় সামনে রেখে করণীয় কি?এসব আশঙ্কায় জামাতের সাথে সফরে না যাওয়া কি ঠিক হবে?

২) মসজিদগুলোতে 'মুক্ত হস্তে দান করুন' না লিখে 'হালাল হস্তে দান করুন' লেখা উচিত - শ্রদ্ধেয় এক শিক্ষকের কাছ থেকে একবার এমনটিই শুনেছিলাম। বাস্তবেও বর্তমানে মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণের সময় কিংবা সাধারণ সময়ে যেসব দানের টাকা আসে তারমধ্যে হারাম টাকা থাকার আশঙ্কা মোটেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তাহলে এমন অর্থ দিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ, পরিচালনা ও ইমাম, মোয়াজ্জিন, শিক্ষকবৃন্দ ও খাদেমদের হাদিয়া দেওয়ার বিধান কি?

৩) মসজিদে বিভিন্ন সময়ে বৈধ ও অবৈধ বিভিন্ন উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে খাবার বিতরণ করা হয়। কেউ সম্পদশালী হলেই, তার সম্পদ হয়তো হারাম হবে - এমন বদধারণা করা নিশ্চয়ই কঠিন গুনাহের কাজ। কিন্তু তারপরও অনেকসময় মনের মধ্যে আশঙ্কা থাকেই। এক্ষেত্রে করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (686,840 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

,

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো উপার্জন পুরোপুরিভাবে হারাম হয়,এবং সেটা পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে সেই খাবার খাওয়া,জায়েজ নেই।

আর যদি তার উপার্জন হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,  তাহলে সেই খাবার খাওয়া জায়েয আছে। 

(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/৬৭)      


ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে  

أہدی إلیٰ رجلٍ شیئًَا أو أضافہ إن کان غالب مالہ من الحلال، فلا بأس إلا أن یعلم بأنہ حرام، فإن کان الغالب ہو الحرام ینبغي أن لا یقبل الہدیۃ، ولا یأکل بالطعام إلا أن یخبرہ بأنہ حلال ورثتہ أو استقرضتہ من رجل۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۵؍۳۴۲)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি কাহারো কাছে কোনো কিছু হাদিয়া পাঠায়,তাহলে দেখতে  হবে যে তার অধিকাংশ উপার্জন হালাল নাকি হারাম।

যদি অধিকাংশই হারাম হয়,তাহলে সেই হাদিয়া গ্রহন করা যাবেনা। 

আর যদি অধিকাংশই হালাল হয়,তাহলে সেই হাদিয়া গ্রহন করা যাবে।      

,

সুতরাং তাবলীগের সাথী ভাইদের  মধ্যে যদিও পুরোপুরিভাবে আপনার বিশ্বাস হয় যে কাহারো উপার্জন হারাম,তারপরেও সেই খাবারে হালাল টাকাই বেশি হওয়ার কারনে সেই খাবার খাওয়া জায়েয হবে।

 আর মেহমান হয়ে অন্যে বাসায় খাবার খাওয়ার ব্যাপারেও উপরোক্ত নীতি ফলো করতে হবে।

সেটা হলো 

  যদি কাহারো উপার্জন পুরোপুরিভাবে হারাম হয়,এবং সেটা পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে সেই দাওয়াত খাওয়া,জায়েজ নেই।

আর যদি তার উপার্জন অধিকাংশ হালাল হয়, তাহলে সেই দাওয়াত খাওয়া জায়েয আছে।


★অতএব এমন আশংকায় জামাতের সাথে যেতে কোনো সমস্যা নেই। 

দাওয়াত খাওয়ার আগে তার উপার্জন সম্পর্কে ধারনা নিয়ে নিলে সব স্পষ্ট হবে।

আর হারাম উপার্জন কারী হলে তাকে বলবেন যে আপাতত আপনি অন্য কাহারো থেকে ঋন নিয়ে আমাদের এখানে টাকা দিন,বা আমাদেরকে দাওয়াত দিন।

,

      

(০২) যদি কাহারো উপার্জন পুরোপুরিভাবে হারাম হয়,এবং সেটা পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে তার টাকা মসজিদে দান হিসেবে নেওয়া জায়েয নেই। 

আর যদি তার উপার্জন অধিকাংশ হালাল হয়, তাহলে তার টাকা দান হিসেবে মসজিদে নেওয়া জায়েয আছে।

এবং তা দিয়ে মসজিদ নির্মান,ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতন ইত্যাদি দেওয়া জায়েজ আছে।

,

(০৩) উপরোক্ত নীতির ভিত্তিতেই মসজিদে দেওয়া খাবার খেতে হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...