আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
168 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ

১) কয়েকদিন পর আমাদের কলেজে জুনিয়রদেরকে স্বাগতম জানানোর জন্য নবীনবরণ হবে। সেখানে কলেজের প্রত্যেক স্টুডেন্ট এর টাকা দেওয়া বাধ্যতামুলক। ওই অনুষ্ঠানে নাচ গান ছেলে-মেয়ের অবাধ মেলামেশা থাকবে, আল্লহুম্মাগফিরলী। আমি ওখানে যাবনা নাচ গান থাকবে তাই। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের জন্য আমার টাকা দিতে হবে। এতে কি আমার গুনাহ হবে? গুনাহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে করনীয় কি?

২) আমাদেরকে প্রতি মাসেই কলেজ থেকে সরকারী ভাতা দেওয়া হয়। ওই টাকা থেকে প্রতিমাসেই ২০-৩০ টাকা রেখে দেওয়া হয় স্টুডেন্টদের বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য। এটা সবার থেকেই রেখে দিয়ে তারপর বাকি টাকা টা আমাদের দেয়া হয়। এই টাকা দিয়ে স্টুডেন্টদের ভালোর জন্য কাজ করা হয়, আবার কখনো কখনো এমন কাজ করা হয় যা ইসলাম সাপোর্ট করেনা যেমন উপরে বর্নিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানেও এই খাত থেকে কিছু টাকা দেয়া হবে। এখন এই যে ২০-৩০ টাকা প্রতিমাসেই আমাদের থেকে রেখে দেয়া হয় তা আলাদা করে রাখা হয় না যে এই টাকাগুলো স্টুডেন্ট দের জন্য আর এই টাকাগুলো বিভিন্ন কালচারাল প্রোগ্রামের জন্য। যেহেতু আলাদা করা নাই বিষয়টা তাই আমিও বলতে পারিনা যে কালচারাল এর টাকা আমি দিবো না। মোটকথা, আমার টাকা টাও বিভিন্ন ইসলামবিরোধী কাজে খরচ করা হচ্ছে। এতে কি আমার গুনাহ হবে? আমার করনীয় কি এক্ষেত্রে?

৩) কিছুদিন পর আমাদের কলেজ থেকে সিলেট পিকনিকে যাওয়া হবে। কলেজ থেকে পিকনিক স্পটের দূরত্ব ৭৮ কিমি এর বেশী। আমরা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করি, হোস্টেল থেকেই পিকনিকে যাওয়া হবে। স্যার, ম্যাম, ছেলে, মেয়ে সবাই যাবে একসাথে। যেহেতু আমরা হোস্টেলে থাকি তাই মাহরাম কেও সাথে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। একদিন রাতে রওনা দিয়ে পরেরদিন সারাদিন ঘুরে ওইদিন রাতে রওনা দেয়া হবে কলেজের উদ্দেশ্যে হয়তো পরেরদিন সকাল হবে কলেজে পৌছাতে। ফ্রেন্ডদের সাথে ও টিচারদের সাথে মাহরাম ছাড়া এই পিকনিকে যাওয়া কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
গুনাহের কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,গুনাহের কাজে অন্যকে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}


হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★প্রশ্নে উল্লেখিত অনুষ্ঠানে যেহেতু নাচ গান হবে,তাই এতে টাকা দেওয়া নাজায়েজ হবে।
যদি বাধ্যতামূলক আপনাকে টাকা দিতেই হয়,তাহলে আপনি ইস্তেগফার চালিয়ে যাবেন। 
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন।
,
(০২)
যেহেতু এক্ষেত্রে সেই টাকার উপরে আপনার হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই,তাই আপনার গুনাহ হবেনা।
কর্তৃপক্ষকেই এর দায় বহন করতে হবে।

(০৩)
না,এই পিকনিকে যাওয়া কোনো ভাবেই জায়েজ হবেনা। 
ইসলাম এ ধরনের পিকনিক সমর্থন করেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...