আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (98 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ!
কোনো বিষয়ে কোনো দ্বীনি বোনের থেকে পরামর্শ নেয়ার জন্য পরামর্শ দাতাকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে  পরিপূর্ণ ভাবে অবগত করতে হয়!
কিন্তু সে বিষয়টি সম্পুর্ন খুলে বলতে গেলে তার রিলেটেড কিছু  আগের জীবনের গুনাহের কথা বলা প্রয়োজন!  হেদায়েত পাওয়ার আগের জীবনে হারাম রিলেশন ছিলো কারো সাথে তা জানানো প্রয়োজন প্রসঙ্গক্রমে!  এটা না জানালে হয়তো  ভুল  পরামর্শ পেতে পারি, শিওর না!
প্রশ্ন হচ্ছে  তাকে কি হেদায়েতের আগের জীবনের হারাম রিলেশনের গুনাহের কথা জানানো যাবে?!  আল্লাহ তো গুনাহকে গোপন রাখতে বলেছেন!  তা প্রকাশ করা বড় গুনাহ!
এখন করনীয় কি?! পরামর্শ নেয়ার বিষয় টি যেহেতু গুনাহ সম্পর্কিত৷
জাযাকাল্লাহ খাইরান!

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মানুষ স্বভাবতই গুনাহ বা অপরাধপ্রবণ হয়। এটি মানব চরিত্রের সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য। আর মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল, তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তবে শর্ত হলো, গুনাহের পর সেটি গোপন রেখে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

أَنَّهُ مَنْ عَمِلَ مِنكُمْ سُوءًا بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِن بَعْدِهِ وَأَصْلَحَ فَأَنَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

তোমাদের মধ্যে যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কর্ম সম্পাদন করবে, অতঃপর তাওবা করবে এবং সংশোধন করে নেবে, তাহলে তো তিনি ক্ষমাপরায়ণ, দয়াশীল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৪)

ক্ষমার এত সর্বব্যাপী ঘোষণা থাকার পরও মহান আল্লাহ কিছু মানুষকে ক্ষমা করবেন না। মহানবী (সা.) সেই শ্রেণির মানুষের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ الْمَجَانَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ ".

আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহটিকে গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হলে সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক! জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়া মাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সে ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)

হাদিসের ঘোষণা থেকে এ কথা পরিষ্কার প্রতীয়মান হয় যে কোনো ব্যক্তি যদি অনিচ্ছায় কোনো গুনাহ করে বসে আর তা গোপন রাখে; তাহলে আল্লাহ তাআলাও ওই ব্যক্তির পাপ কাজ গোপন রাখেন। অতঃপর মানুষটি তাওবা করলে তিনি ওই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। পবিত্র কোরআনে সুরা নিসার ১৪৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ কোনো মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না।’

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


অতীতের গুনাহের কথা না বলে যদি পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হয় তাহলে পিছনের গুনাহের কথা না বলাই উত্তম হবে। এর পরও যদি না হয় তাহলে শোধরানোর নিয়তে কোনো দ্বীনদার মহিলার নিকট বলে পরামর্শ নিতে পারেন৷ (তবে অনেক ক্ষেত্রে এমন হয় যে, অন্যকে গুনাহের কথা বলে পরে নিজে অনেক আফসোস করতে হয় যে, কেন তাকে আমার গুনাহের কথা জানাতে গেলাম। তাই বলার আগে ভালোভাবে চিন্তা ভাবনা করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...