আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
165 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
১) ইসলামে বংশ কিভাবে তৈরী হয়? ছেলে থেকে নাকি মেয়ে থেকে? যদি ছেলে থেকে হয় তাহলে নবিজী (সঃ) এর বংশধর কিভাবে দাবী করা যেহেতু উনার ছেলের দ্বারা বংশ হয় নি।
২) হাদিসে পদ -পদবী চাইতে না করা হয়েছে। এটা কি শুধু মসজিদ কমিটি অথবা ইসলামিক সংগঠনের জন্য প্রযোজ্য নাকি দুনিয়াবি সকল কিছুর জন্য প্রযোজ্য?

৩) অনেকেই বলেন গনতন্ত্র হারাম, গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দল এর সদস্য হয়ে সংসদ সদস্য/ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া যাবে কিনা?

৪) স্ত্রী বাচ্চা হওয়ার পর থেকে স্বামীর সাথে সহবাস এ অনিচ্ছুক প্রায় দীর্ঘদিন। স্বামীর এক্ষেত্রে গোনাহ এ লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। এদিকে স্ত্রী জানিয়ে সামাজিকভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করাও সম্ভব নয়। কাউকে না জানিয়ে দেশের বাইরে দ্বিতীয় বিয়ে করলে তা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

হাদীস শরীফে এসেছে-

مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْوَلَدُ لِصَاحِبِ الْفِرَاشِ

 

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সন্তান হল শয্যাধিপতির। [৬৮১৮; মুসলিম ১৭/১০, হাঃ ১৪৫৮, আহমাদ ৭৭৬৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬২৯৪) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

 মহান আল্লাহ তায়ালা ঈসা আ. কে তার মায়ের নামের সাথে যুক্ত করে বলেন-

..وَآتَيْنَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ ۗ أَفَكُلَّمَا جَاءَكُمْ رَسُولٌ بِمَا لَا تَهْوَىٰ أَنفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْ فَفَرِيقًا كَذَّبْتُمْ وَفَرِيقًا تَقْتُلُونَ

...আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে শক্তিদান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছেযা তোমাদের মনে ভাল লাগেনিতখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ। (সূরা বাকারাআয়াত ৮৭)

 

 মহান আল্লাহ তায়ালা মারইয়ামকে তার পিতার নামের সাথে যুক্ত করে বলেন-

وَمَرْيَمَ ابْنَتَ عِمْرَانَ الَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهِ مِن رُّوحِنَا وَصَدَّقَتْ بِكَلِمَاتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِ وَكَانَتْ مِنَ الْقَانِتِينَ

আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মেরযে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিল। অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিল। সে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন। (সূরা তাহরীমআয়াত ১২)

 হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَوْلَمَ عَلَى صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَىٍّ بِسَوِيقٍ وَتَمْرٍ .

আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (উম্মুল মুমিনীন) সাফিয়্যা বিনত হুয়াই রাদিয়াল্লাহু আনহা এর (বিবাহে) ওয়ালিমা করেছিলেন শুকনা খেজুর ও ছাতু সহযোগে। - ইবনু মাজাহ ১৯০৯বুখারিমুসলিমতিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১০৯৫ [আল মাদানী প্রকাশনী]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ لِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ سَمُرَةَ لاَ تَسْأَلِ الإِمَارَةَ فَإِنَّكَ إِذَا أُعْطِيتَهَا عَنْ مَسْأَلَةٍ وُكِلْتَ فِيهَا إِلَى نَفْسِكَ وَإِنْ أُعْطِيتَهَا عَنْ غَيْرِ مَسْأَلَةٍ أُعِنْتَ عَلَيْهَا " .

আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ! রাষ্ট্রীয় পদ চেয়ে নিবে না। কারণ তোমার চাওয়ার কারণে তোমাকে পদ দেয়া হলে এর দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই বর্তাবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য পাবে না) আর চাওয়া ছাড়া তোমাকে নেতৃত্ব পদ দেয়া হলে তুমি দায়িত্ব পালনে (আল্লাহর পক্ষ হতে) সাহায্য পাবে। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং- ২৯২৯ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

হাদীসটি তিরমিযী শরীফে এসেছে -

عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

তালক ইবনু আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা পূরণের জন্য তার স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া দেয়। ’ ইমাম আবূ ইসা(রহঃ) বলেনএই হাদীসটি হাসান-গারীব। - মিশকাত ৩২৫৭সহিহাহ ১২০২তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৬০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

 

সহীহ ইবনে হিব্বানে এসেছে-

عَنْ طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتجبه وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ " .

তালক ইবনু আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা পূরণের জন্য তার স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া দেয়। ’ (সহীহ ইবনে হিব্বান৪১৬৫)  হাদীসটি আরো কিতাবে রয়েছে- মুসনাদে আহমদ, ১৬৩৩১আল- মুহাল্লা১০/৪১আস সুনানুল কুবরা৮৯৭১আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩/১০৩

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

. ইসলামে বংশ পরিচয় বাবার থেকে এবং বংশের ধারাবাহিকতা ছেলের থেকেই হয়। তবে কখনো কখনো বাবা বা ছেলে না থাকলে তখন মা বা মেয়ের থেকেও ধরা হয়। যেমন ঈসা আ. কে তার মায়ের দিকে নিসবত করা হয়। তেমনী ভাবে রাসূল সা. এর কোন ছেলে না থাকার কারণে মেয়ের দিক থেকে ধরা হয়েছে।

 

. তা সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে যদি দেখা যায় যে তার থেকে যোগ্য আর অন্য কোনো ব্যক্তি নেই। আবার অন্য কেউ হলে লাভের থেকে ক্ষতি বেশী হবে তখন পদ-পদবী চেয়ে নেওয়াও জায়েজ ও উত্তম হবে। যেমন ইউসূফ আ. চেয়ে নিয়েছিলেন।

 

৩. গণতন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-https://ifatwa.info/15185/?show=15185#q15185

 

৪. এভাবে কাউকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা ঠিক নয়। এতে পরবর্তীতে ফিতনা হয়। তবে প্রথম স্ত্রীর সাথে খোলা মেলা আলোচনা করা উচিৎ এবং তাকে বুঝানো যে, স্বামী সহবাস করতে চাইলে তাতে রাজী হতে হয় যদিও নিজের একটু কষ্ট হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...