আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
edited by

১.

কেউ যদি সুদ মিশ্রিত টাকা দিয়ে হজ্ব পালন করে,এবং হজ্ব থেকে ফেরার সময় সৌদি বিমানবন্দর থেকে কুরআন দেওয়া হয় ফ্রি তে,সেই কুরআন ব্যবহার করে তিলাওয়াত করা যাবে কি?

আমল হিসেবে যেমন সুরা মুলক,কাহাফ তিলাওয়াত করলে তা কবুল হবে কি?

২. কারো অধীনস্থে কোন বাড়ি আছে,সে তা ভাড়া দিয়েছে,এখন সে বাড়ির পানির পাম্প নতুন কেনা হয়েছে,পাম্প কেনার মোট টাকায় যদি কিছু পরিমাণ হারাম টাকা থাকে,সে পাম্প  ভাড়াটিয়ারা ব্যবহার করবেন,এখন কি সেই ভাড়াটিয়া দের থেকে পাওয়া টাকা কি হারাম হবে নাকি ভাড়ার টাকা সম্পুর্ণ হালাল হবে?

এক্ষেত্রে হারাম মোটরের উপর হুকুম কি হবে?

৩. বাবা এক সময় সুদ নিতেন,সে হিসেবে তার সকল টাকায় সুদ মিশে গেছে বলে তার থেকে এখন টাকা না নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা শুরু করেছি,আজ সে আমায় ১০০০ টাকা দিয়েছেন,আমি নিয়ত করে রেখেছি হালাল কিছু টাকা জমলে সুবিধামত এই ১০০০ সাদকাহ করে দিবো এবং ইনশা'আল্লাহ অবশ্যই করার নিয়ত আছে,এখন এই ১০০০ টাকা ব্যবহার করে কোন নরমাল দান সাদকাহ/সাদকায়ে জারিয়াহ মুলক কাজে অংশ নিলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আছে? সাওয়াব আশা করতে পারবো এই টাকা দ্বারা কোন দান করলে?

৪. ৩ নং প্রশ্নের আলোকে,আমার বিকাশ একাউন্টে হালাল ১৭৫ টাকার সাথে এই ১০০০ যোগ হয়েছে,ধরলাম যে উক্ত ১০০০ যদি এভাবে ব্যবহার জায়েয না হয়,তবে ১০০০ যদি একাউন্টে জমা রেখে আলাদা করে শুধু হালাল টাকা রিচার্জ করি আর খরচ করি (মোট টাকায় হালালের পরিমাণ কখনো কম কখনো বেশি হতে থাকে ) তবে সেই খরচ/নরমাল সাদকাহ গুলো কবুল হওয়ার আশা করতে পারি কি?

1 Answer

0 votes
by (687,200 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
সেই কুরআন ব্যবহার করে তিলাওয়াত করা যাবে।
যেই আমল গুলো সেই কুরআন পড়ে করা হবে,সেই আমল গুলি কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০২)
ভাড়ার টাকা সম্পূর্ণ হালাল হবেনা।
এক্ষেত্রে যতটুকু হারাম টাকা পাম্প ক্রয়ে ব্যয় হয়েছে,সেই পরিমান টাকা মূল মালিককে ফেরত দিতে হবে অথবা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।   

(০৩)
আগে সেই পরিমান টাকা আপনার বাবাকে ফেরত দিতে হবে,নতুবা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।   

উক্ত টাকা ব্যবহার করে সেই পরিমান টাক কোথাও দান করলে ছওয়াবের আশা করা যাবেনা।
এতে আপনার ছওয়াব হবেনা। 

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি শুধুমাত্র  আলাদা করে হালাল টাকা রিচার্জ করেন,খরচ করেন,
হারাম টাকা রিচার্জ না করেন,খরচও না করেন,তবে সেই খরচ/নরমাল সাদকাহ গুলো কবুল হওয়ার আশা করতে পারবেন।
তবে হারাম টাকা এর মধ্যে এসে গেলে হারাম টাকা পরিমান ব্যায় জায়েজ হবেনা,সদকাহ এর ক্ষেত্রে হারাম টাকা এসে গেলে ঐ পরিমান টাকার সদকাহ এর ছওয়াব হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...