আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (38 points)
edited by
আসসামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লা। হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।কস্ট করে উত্তর দিয়েন।আমি পয়েন্ট আকারে বলতেছি।

১।আমার স্বামীকে আমি বেসে বিয়ে করেছি।বাসায় জানে না।বাসায় জানে পছন্দ করি।তহ স্বামী ব্যাবসা করে তাই মা মানতেছে না।মার  ইচ্ছে চাকরী ওয়ালা  দিবে।তহ  আমি বলতেছি ছেলেটা তহ ভাল,সবাই পছন্দ করে নামাজ কালাম পড়ে,সত ব্যবসা করে।আপনি যে অন্য জনকে দিবেন বলতেছেন ছেলেটা কেমন হবে জানেন ও না।আর আমি জানি যে আমি যাকে পছন্দ করি সে ভাল।তহ আমি বলতেছি আপনি যে বিয়ে  দিবেন ওই ছেলেটা ভাল হবে গ্যারান্টি  কি? মা বলতেছে কপালে যা আছে।তারপর আমি বলতেছি আমি তহ গ্যারান্টি দিব আমি যাকে পছন্দ করি সে অনেক ভাল রাখবে।হুজুর আমি কোন শিরক করার জন্য কথাটা বলি নি।মাকে বুঝানোর জন্য বলেছিলাম।আর আমার মাথায় ও ছিল না এসব কথা দ্বারা ঈমান চলে যাবে।এখন যখন এসব নিয়ে জানছি আমার খুব ভয় হচ্ছে।

২।আমরা অনেক সময় কিছু কথা বলি গ্যারান্টি নাও এইরকম হবে দেখিও।মানে আগে থেকে বলি।কিন্তুু কোন আল্লাহর সাথে শরিক করার জন্য নয়।এসব কথা দ্বারা কি ঈমান চলে যাবে? আগে অনেক বলেছি কিন্তুু এখন না বলার চেষ্টা করি তবু মাঝে মাঝে বলে ফেলি কথার কথা হিসেবে।এসব কথা,দ্বারা কি ঈমান চলে যাবে?

৩।আগে যেমন না বুঝে অনেক শপথ করতাম।এখন ঠিকভাবে মনেও পড়তেছে না।যেমনঃ "আল্লার কসম মুসলমানের সন্তান হলে যাব না বা ওই কাজ করব না" এরকম বলে শপথ ভেন্গে ফেলতাম।আবার মাঝে মাঝে  "আল্লাহর কসম ওই কাজ করলে মুসলমান থেকে বের হয়ে যাব "মানে অটোমেটিক বুঝাইতাম।কিন্তুু পরে শপথগুলোর কথা  মাথায় থাকত না।না বুঝে এমনিতে সিরিয়াসলি না নিয়ে করে ফেলতাম শপথ।ভান্গেছি কি ভান্গি নাই মনেও পড়ে না।এসব কথা দ্বারা কি ঈমান চলে যাবে?

৪।আবার মাঝে মাঝে কলেমা শাহাদত পরার সময় অন্য দুয়ার সাথে গুলিয়ে ফেলি।এতেও কি আমার ঈমান চলে যাবে?

৫।আবার এটাও বলেছি  ইওহুদিরা আমাদের বলতেছে জন্ম নিয়ত্রন করতে ওরা নিজেরা করে না বংশ বৃদ্ধি করতেছে মুসলিমদের সাথে যুূ্ূদ্ধ করার জন্য।না জেনে এমন কথা বলা দ্বারাও  কি ঈমান চলে যাবে?

হুজুর আগে এত কিছু না ভেবে কাজ করতাম।এখন কি তওবা করে কাপ্পারা দিলে হবে? কারন আমি বিবাহিত।সবসময় চিন্তায় থাকি আমার ঈমান ঠিক আছে কিনা বিয়ে ঠিক আছে কিনা এসব নিয়ে।তওবা করলে হবে?

৬।মনে মনে নিজের নফসকে তালাক দিলে কি তালাক হবে"এটা গুগলে সার্চ দিয়েছি।তখন থেকে ভয় আরো বেশি হচ্ছে।আমি এই চিন্তা আসলে সহ না না করি।গুগলে সার্চ দেওয়ায় কি তালাক পতিত হবে আমার উপর?বা  মনে মনে বললেও কি হবে?এখানে প্রশ্ন করায়ও কি তা...ক হবে?খুব ভয় হচ্ছে।আবার নিজের নফসকে তালাক না দিয়ে অন্য কোন কথা বললে কি তালাক হবে?হুজুর আমি এই অধিকারটা নিয়ে মারাত্বক চিন্তায়। আমার কোন কথা দ্বারা তালাক হচ্ছে কিনা ভয় হয়।

৭।আমার প্রশ্ন এসএমএসের মাধ্যমে  "তালাক দিব তালাক চাই এমন বউ দরকার নাই / চাই না"কথাটা যদি "তালাক দিব" বলে পরের লাইনে মানে মেসেজে বলে "এমন বউ দরকার নাই" তাহলে কি তালাক হব?  পরপর বলেলে?হুজুর প্রশ্নটা আরেকবার ও করেছিলাম তালাক হবে না বলেছিলেন।আমার সন্দেহ হচ্ছে মেসেজে বলেছে তহ একসাথে একি লাইনে নাকি পরপর বলেছে।আমার  মনে নেই।ওয়াসওয়াসায় ভুগতেছি।

৮।স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে তুমাকে ছেড়ে দিব তারপর আরেকটা বিয়ে করব।স্বামীও যদি বলে ঠিক আছে ছেড়ে দিও করিও বিয়ে।তাহলে কি তালাক হবে?আমি ওয়াসওয়াসায় ভুগতেছি।

৯।বিয়ের আগে যদি স্বামী বলে আর কোনদিন যদি কাজ এটা কর তাহলে সম্পর্ক শেষ বা তালাক হয়ে যাবে।বিয়ের পর কি ওটা করলে তালাক হবে?

১০।আমি যখন ক্লাস ৯-১০ এ ছিলাম তখন মানে নিজে নিজে অভিমান আর আবদারের মত করে কথা বলেছি।পরে ওটা সহপাঠী আর স্যারের সামনে বলেছি।স্যার টা ছিল হিন্দু। আমি জানতাম না এভাবে কথা বললে ঈমানের ক্ষতি হবে কিনা।মানে বলেছি আপনি এতক্ষণে ঘুম থেকে উঠিয়েছেন আপনিই গাড়ির ব্যবস্থা করে দিন নিজে নিজে আল্লাহ কে বলেছি।দুষ দিয়েছি কিনা জানি না,মনে নেই।৫-৬ বছর আগের কথা।আমার খুব ভয় হচ্ছে এটা নিয়ে।এতে কি ঈমান চলে যাবে?আমার এসব বিষয় নিয়ে খুব ভয় হয়।আগে কোনদিন রাগ করে কথা বলেছি কিনা মনেও পড়ে না।সবসময় ভয় হয়।বলতে গেলে অস্হির হয়ে পড়ি আমি।আগে কি বলেছি কি বলি নি।ঈমান আছে কিনা ভয় হয়।কি করব?

হুজুর আগে এসব নিয়ে কিছু জানতাম না।এখন জানার পর থেকে সবসময় মনে হয় কেনায়া তালাকের কথা স্বামীও বলেছিল।কিন্তুু আমার গুলিয়ে যায়।আমি কথায় বলতে পারি না ভয়ে স্বামীর সাথে।যত চাই  মনে না করতে সবসময় মনে চলে আসে এই বিষয়টা।আমি চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি।। কারন আমাদের প্রায় ঝগড়া,অভিমান,গালাগাল হত।আমি তালাক ও চেয়েছি অনেকবার।কিন্তুু তালাক দেয়নি সরাসরি।কেনায়া বাক্য বলেছে কিনাও জানি না।তবে হে ফোন রাখ,মেসেজ দিও না আর এসব বলত,আর এটাও বলত মাঝে মাঝে তালাকের বিষয়ে কথা বলিও না।একটু পর সব ঠিক হয়ে যেত।মেসেজে কথা হয় আমাদের।এখন হয় না ঝগড়া।তাই আমার মনে সবসময় ভয় হয় বলেছে কিনা।স্বাভাবিক কথা নিয়েও আমার সন্দেহ হয়।কি করব আমি?আগের বিষয় নিয়ে আমি ভয়ে থাকি সবসময়।কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারতেছি না।পাগলের মত হয়ে গেছি।আমার আশেপাশে কোন মুফতিও নেই যে বুঝিয়ে বলব।এমন পরিস্থিতি ও নেই।
ago by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম আপু,আপনি যে ৬ নং প্রশ্নটা করেছেন আমিও একই ওয়াসওয়াসাতে ভুগতেছে ২/৩ দিন ধরে।
আপু আপনাকে কি আপনার স্বামী তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়েছে?
দিয়ে থাকলে কিভাবে দিয়েছে লিখিত ভাবে নাকি মৌখিকভাবে?
আমার স্বামী আমাকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়ানি।তারপরেও এমন কথা মনে এসে পরে আমিও সাথে সাথে না না বলি, আবার মনকে বুঝাই আমিতো ক্ষমতাই রাখিনা। 

1 Answer

0 votes
by (680,160 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 

যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। যে বিষয়ে যতটুকু কমতি আছে তাতে ততটুকু কমতির কথাই বলা উচিত। বাড়াবাড়ি করে বিদআতকে শিরক বলে দেওয়া অথবা তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিপন্থী বিষয়কে তাওহীদের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে শিরক বানিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
,
শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন।
আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক। কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ  اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.
স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

(০১)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো শিরক হবেনা।
আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।

(০২)
এসব কথা দ্বারা ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
বিষয়টিকে যেহেতু আপনি সিরিয়াসলি নেননি,না বুঝে এমনটি বলে না বুঝেই আবাত সেই কাজ করতেন,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৪)
না,এতে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৫)
না,এতে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৬)
তালাক হয়নি,আপনি টেনশন মুক্ত থাকুন।

(০৭)
এতে তালাক হবেনা।

(০৮)
স্বামী এখানে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের কথা বলতেছে।
এখানে স্বামী তালাক দেয়নি,তাই তালাক হবেনা।

(০৯)
এখানে বিবাহের সাথে নিসবত করে তালাক বলা হয়নি।
তাই বিবাহের পর উক্ত কাজ করলে তালাক হবেনা।

(১০)
এতে ঈমান চলে যাবেনা।
তবে মহান আল্লাহর শানে এহেন বেয়াদবী মূলক কথাবার্তা বলায় খালেস দিলে তওবা করতে হবে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...