আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
closed by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,

একজন মাওলানা সাহেব আমার পরিচিত এবং আমি তাকে 'ভাই' বলেই ডাকি। তিনি একবার বলতেছিলেন, তার ওস্তাদ একবার ক্লাসে বলছিলেন যে, 'ধরো তোমার কাছে টাকা চাইলো কেউ। তোমার পকেটে টাকা আছে। কিন্তু তুমি তাকে বললা যে,আমার কাছে তো টাকা নেই। আর এই কথা বলার সময় অন্তরে এটা যদি থাকে যে, তোমাকে দেবার জন্য আমার কাছে টাকা নেই। তবে এই কথা মিথ্যে হবে না' (সম্ভবত এটাকে হেকমতপূর্ন কথা বলে। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হচ্ছে,আসলেই কি এরকম হেকমতরূপে কথা বললে মিথ্যে হবে না?)

 

হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের এক ঘটনা সম্ভবত। এক জালেম বাদশাহের কবলে যখন তিনি পড়লেন। তো সেই জালেম বাদশাহ থেকে নিজ স্ত্রীকে রক্ষার্থে তিনি তার স্ত্রীকে নিজের 'বোন' বলে সাব্যস্ত করেছেন। (অর্থাৎ কথাটি মিথ্যে নয়,তিনি তাকে দ্বীনি বোন হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।) এটাও সম্ভবত হেকমত পূর্ণ কথা-ই.. 

 

এই বিষয়গুলো আমি আমার সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলে। তারা এখন হেকমত খাটিয়ে অনেক কাজ করে। যেমন একবার কোচিং এ ক্লাস ছিল। কোচিং এ গনিত। আর আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং করি আমরা। তো সেদিন সম্ভবত আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ক্লাসটা আগে ছিল,এরপর গনিত। তো আমার এক সহপাঠীর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল। তো তিনি স্যারের আর্কিটেচারাল ড্রয়িং ক্লাস শেষ হলে,স্যারকে বলেন যে, তিনি ডাক্তারের কাছে যাবেন তাই ছুটি দিলে ভালো হত। তো স্যার ছুটি দিলেন,গনিতটা করলো না। স্যার জিজ্ঞেস করলো, 'কখন হসপিটালে যাবে?' সহপাঠী উওর দিল, 'কোচিং এর পরে' তো স্যার ছুটি দিয়ে দিলেন। কিন্তু কথা হচ্ছে। আমাদের কোচিং ১১ টা বাজে। সহপাঠী ডাক্তার দেখাতে যাবে রাত্রে বা সন্ধ্যাবেলা। তো এখানে হেকমত খাটিয়েছে এভাবে, কোচিং তো শেষ ধরূন ১২টা বাজে । কিন্তু সহপাঠী দুপুরে যাক, বা বিকেলে যাক বা যখনই যাক ডাক্তারের কাছে,সে তো কোচিং এর পরেই যাচ্ছে। কিন্তু কথাটাকে হেকমতে জানিয়ে সে স্যারের কাছে গনিত ক্লাস না করে,ছুটি নিয়ে চলে গেছে। 

 

এবং সহপাঠী নিজেও কোচিং এ হসপিটালের কথা বলে বেড়িয়েছে। এবং আরেকজন হসপিটালে যেত না। কিন্তু তাকে হসপিটালের কথা বলে বের করিয়েছে। এবং পরবর্তীতে যতটুকু জানা অপরজন সত্যি হসপিটালে গিয়েছে যাতে কথাটা মিথ্যে পরিনত না হয়। এখন এগুলো কি সত্যি হেকমতপূর্ন হবার কারনে মিথ্যে হয়নি, নাকি মিথ্যে হয়েছে? 

 

যদি না হয়,তাহলে এসব হেকমত খাটিয়ে কথা বলা জায়েজ হবার ক্ষেত্রে কোনো শর্ত আছে কি শরীয়তে? জানালে আশা করি উপকৃত হব। শয়তান তো নেক সুরুতে বহু ধোকা দেয়। এভাবে আমাদের ধোকা দিয়ে মিথ্যে কথা বলিয়ে দিচ্ছে না তো,সেই ভয়ে প্রশ্ন করা। আল্লহ আপনাদের উওম জাযা (পুরস্কার) দান করুক। আমীন।

closed

1 Answer

+1 vote
by (715,680 points)
edited by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/644 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
আবুল ফরয ইবনুল জাওযী রাহ বলেনঃ
ﻭﺿﺎﺑﻄﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﻘﺼﻮﺩ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﻻ ﻳﻤﻜﻦ ﺍﻟﺘﻮﺻﻞ ﺇﻟﻴﻪ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ، ﻓﻬﻮ ﻣﺒﺎﺡ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ ﻣﺒﺎﺣﺎ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﺍﺟﺒﺎ، ﻓﻬﻮ ﻭﺍﺟﺐ
প্রত্যেক ঐ ভালো উদ্দেশ্য যে পর্যন্ত মিথ্যার আশ্রয় ব্যতীত পৌছা  প্রায় অসম্ভব, সেখানে মিথ্যা বলা বৈধ।মাকসাদ(উদ্দেশ্য) মুবাহ হলে,মিথ্যা বলা মুবাহ।মাকসাদ ওয়াজিব হলে মিথ্যা বলা ওয়াজিব
(ফাতাওয়া দারাল ইফতা আল-মিচরিয়্যাহ)

আল্লামা ইবনূল কাইয়ূম রাহ বলেনঃ
ﻳﺠﻮﺯ ﻛﺬﺏ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﻧﻔﺴﻪ، ﻭﻋﻠﻰ ﻏﻴﺮﻩ ﺇﺫﺍ ﻟﻢ ﻳﺘﻀﻤﻦ ﺿﺮﺭ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻐﻴﺮ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺘﻮﺻﻞ ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ ﺇﻟﻰ ﺣﻘﻪ،
একমাত্র মিথ্যার মাধ্যমে হক্ব(অধিকার রক্ষা)পর্যন্ত পৌছা নির্দিষ্ট হলে নিজের উপর বা অন্যর উপর মিথ্যা বলা জায়েয যখন এতে অন্যর কোনোপ্রকার ক্ষতি হয় হবে না।(যাদুল মা'আদ-২/১৪৫)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যদি কখনো এমন কোনো বৈধ প্রয়োজন হয়, যা মিথ্যা বলা ব্যতিত কখনো পূর্ণ হবে না।এমন প্রয়োজন মেটাতে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে উত্তম হল, সরাসরি মিথ্যা না বলে তাওরিয়াহ করা।তাওরিয়াহ হল,এমন কথা যা থেকে শ্রুতা কিছু একটা বুঝে নিবে।কিন্তু বক্তা অন্য কিছু উদ্দেশ্য নিবে।

বিশেষ জরুরত ব্যতিত তাওরিয়াহ বা মিথ্যা বলা জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (715,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...