আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
255 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
আমি একটি মহিলা হোস্টেল এ থাকি এবং সেই হোস্টেল এর একটি গ্রুপে এড আছি যেখানে হোস্টেল এর বিভিন্ন কাজ এর ম্যানেজারগণ (মহিলা) কিছু নোটিশ পাঠিয়ে থাকেন। তারা তাদের নোটিশ এ সাধারণত প্রথমে সালাম দিয়ে থাকেন। খুব কম সময়ই কেউ সালাম এর উত্তর দেয়। আমি তাই প্রায় সব নোটিশ এর পরেই তাদের সালাম এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ। এমন হয় যে, উনারা গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ দিলেন এবং আমি সালাম এর উত্তর দিলাম। এক্ষেত্রে তাদের নোটিশ টা একটু উপরে চলে যায়। মানে শুধুমাত্র আমার উত্তর এর উপরে। বেশি নয়। লাস্ট ম্যাসেজ হিসেবে সালাম এর উত্তর টা ভেসে থাকে। নোটিশ নয়। গ্রুপে ঢুকলে সহজেই নোটিশ টা পাওয়া যায়।

১) আমার প্রশ্ন হলো, আমি কি কাজ টা ভুল করছি? আমি শুনেছি আমার এই কাজ নিয়ে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আমি কি নোটিশ দেখার ক্ষেত্রে তাদের কোনো বাঁধা সৃষ্টি করছি? আমি যেভাবে সালামের উত্তর দিচ্ছি এই কাজ টি কি ইসলামের দৃষ্টিতে ঠিক আছে? নাকি আমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছি?

২)আবার এমন হয় যে, উনারা সকালে নোটিশ দিয়েছেন আর আমি কয়েক ঘন্টা পরে সালাম এর উত্তর দিয়েছি। কারণ আমি মেসেজ টা দেখেছি কয়েক ঘন্টা পরে। আর আমার আগে কেউ সালামের উত্তর দেননি। এক্ষেত্রে আমার কাজ টা কি ঠিক? কয়েক ঘন্টা পরে সালাম এর মেসেজ দেখলে তখন উত্তর দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সালামের জবাব দেওয়া আবশ্যক।  কারণ, আল্লাহ্ তাআলা বলেন,

وَإِذَا حُيِّيتُم بِتَحِيَّةٖ فَحَيُّواْ بِأَحۡسَنَ مِنۡهَآ أَوۡ رُدُّوهَآ

আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেওয়া হবে, তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে। অথবা জবাবে তাই দেবে। (সূরা আন নিসা ৮৬)

 

শরীয়তের বিধান হলোঃ   লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়।

পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়ার কথা হাদীসে এসেছে,

যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবীজী সাঃ কে প্রশ্ন করল, ইসলামের মধ্যে কোন কাজ সর্বোত্তম?

ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﺳﺄﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻱ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺧﻴﺮ ﻗﺎﻝ ﺗﻄﻌﻢ ﺍﻟﻄﻌﺎﻡ ﻭﺗﻘﺮﺃ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺖ ﻭﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻟﻢ ﺗﻌﺮﻑ ((ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﺍﻻﺳﺘﺌﺬﺍﻥ » ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻟﻠﻤﻌﺮﻓﺔ ﻭﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺮﻓﺔ

নবীজী সাঃ প্রতিউত্তরে বললেনঃ পরিচিত অপরিচিত সবাইকে খাদ্য খাওয়ানো এবং (মুসলিম মনে হলে) সালাম প্রদান করা। (সহীহ বুখারী-৫৮৮২)


https://ifatwa.info/3817/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

শরীয়তের বিধান হলো লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়।

,

এক্ষেত্রে মৌখিক জবাব তাকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয় এবং সালামের জবাবের জন্য তাকে পাল্টা উত্তর লেখা কিংবা ফোন করে বা মেসেজ করে জানানো কোনোটিই জরুরি নয়। বরং একাকী মুখে জবাব দিয়ে দিলেই হবে।

-ফয়যুল কাদীর ৪/৩১; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৫

 

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সামনে যদি সেই মেসেজ শো হয়,তাহলে আপনি চাইলে জবাব লিখেও পাঠাতে পারেন অথবা নিজে নিজে মুখে জবাব দিয়ে দিতে পারেন।

,

শরীয়তের বিধান হলো   লিখিত সালামের জবাব দেয়াও ওয়াজিব।

,

তাই ফেসবুক,ইমো ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেহ যদি কাউকে সালাম দেয়,তাহলে সেই মেসেজ তার সামনে পরলে তাকে জবাব দিতে হবে। 

 

 লেখাটির জবাব দেবার ইচ্ছে থাকলে লিখার সময় সালামের জবাব লিখে দিবে। আর না দেবার ইচ্ছে থাকলে মুখে জবাব দিয়ে দিবে।

 

তবে উত্তম ও উচিত হল, লেখাটি পড়ার পর পরই মৌখিক জবাব দিয়ে দেবে। কারণ পরে যদি লেখার জবাব দেয়া না হয়, তাহলে যেন ওয়াজিব ছুটে যাবার গোনাহ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

,

وَيَجِبُ رَدُّ جَوَابِ كِتَابِ التَّحِيَّةِ كَرَدِّ السَّلَامِ.

وفى رد المحتار- (قَوْلُهُ وَيَجِبُ رَدُّ جَوَابِ كِتَابِ التَّحِيَّةِ) لِأَنَّ الْكِتَابَ مِنْ الْغَائِبِ بِمَنْزِلَةِ الْخِطَابِ مِنْ الْحَاضِرِ مُجْتَبًى وَالنَّاسُ عَنْهُ غَافِلُونَ ط. أَقُولُ: الْمُتَبَادَرُ مِنْ هَذَا أَنَّ الْمُرَادَ رَدُّ سَلَامِ الْكِتَابِ لَا رَدُّ الْكِتَابُ. لَكِنْ فِي الْجَامِعِ الصَّغِيرِ لِلسُّيُوطِيِّ رَدُّ جَوَابِ الْكِتَابِ حَقٌّ كَرَدِّ السَّلَامِ قَالَ شَارِحُهُ الْمُنَاوِيُّ: أَيْ إذَا كَتَبَ لَك رَجُلٌ بِالسَّلَامِ فِي كِتَابٍ وَوَصَلَ إلَيْك وَجَبَ عَلَيْك الرَّدُّ بِاللَّفْظِ أَوْ بِالْمُرَاسَلَةِ وَبِهِ صَرَّحَ جَمْعُ شَافِعِيَّةٍ؛ وَهُوَ مَذْهَبُ ابْنِ عَبَّاسٍ (رد المحتار، كتاب الصلاة، فصل فى البيع)

যার সারমর্ম হলো লিখিত পত্রে সালাম থাকলে সেটার জবাব দেওয়া ওয়াজিব।

চাই সেটা লিখিত ভাবেই হোক,বা মৌখিক ভাবেই হোক। 

 

عَنْ سَعِيدِ بْنِ كَثِيرٍ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ عَائِشَةَ، تَقُولُ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَائِمًا مَعَ صَاحِبِ فَرَسٍ أَبْيَضَ أَخَذَ بِمَعْرِفَةِ فَرَسِهِ، فَلَمَّا أَتَانِي قُلْتُ: مَنْ صَاحِبُ الْفَرَسِ؟ قَالَ: «وَقَدْ رَأَيْتِيهِ؟» ، قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «وَمَنْ يُشْبِهُهُ؟» ، قُلْتُ: دِحْيَةُ بْنُ خَلِيفَةَ الْكَلْبِيُّ، قَالَ: «ذَاكَ جِبْرِيلُ وَهُوَ يُقْرِئُكِ السَّلَامَ» ، قُلْتُ: وَعَلَى مَنْ أَرْسَلَهُ وَعَلَيْكَ وَعَلَيْهِ السَّلَامُ (المعجم الكبير للطبرانى، رقم الحديث-84

আলোচ্য হাদীসে রাসুল সাঃ এর মাধ্যমে হযরত আঈশা সিদ্দিকা রাঃ কে হযরত জিবরাইল আঃ সালাম দিয়েছিলেন,আঈশা সিদ্দিকা রাঃ তার জবাব মৌখিক ভাবে দিয়েছিলেন।        

,

এই হাদীস থেকে বুঝা যায় যে অনুপস্থিত ব্যাক্তির সালামের জবাব  মৌখিক ভাবে দেওয়া যায়,এক্ষেত্রে তাকে জানিয়ে দেওয়াও জরুরি নয়।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. হ্যাঁ, আপনার কাজটা ঠিকই ছিলো। কারণ, শরীয়তের বিধান হলোঃ  লিখিত সালামের জবাব দেয়াও ওয়াজিব। তাই ফেসবুক, ইমো ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেহ যদি কাউকে সালাম দেয়, তাহলে সেই মেসেজ তার সামনে পরলে তাকে জবাব দিতে হবে। তবে লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, যেহেতু লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়। আর আপনার ক্লাসমেটরা আপনার লিখিত উত্তরে একটু অসন্তুষ্ট। তাই আপনি চাইলে লিখিত উত্তর না দিয়ে মুখে উচ্চারণ করেও উত্তর দিতে পারেন।

 

২. হ্যাঁ, কয়েক ঘন্টা পরেও সালাম এর মেসেজ দেখলে তখন উত্তর দিতে হবে। তবে লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...