আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in পবিত্রতা (Purity) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম।

আমি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি।আমি ঘুমানোর সময় সবসময় ওজু করে ঘুমাই।ঘুমানোর সময় শুয়ে পড়ার পর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস এবং আয়াতুল কুরসী ৩ বার করে পাঠ করে দুই হাতে ফু দিয়ে সমস্ত শরীর মাসেহ করে নেই।এরপর ঘুমাই।

(১) কিন্ত তাও আমার একটা সমস্যা হচ্ছে। তা হচ্ছে, ১ মাসের মধ্যে ২-৩ বার আমার সপ্নদোষ হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে আরো কম হয়। কিন্তু আমি ওজু ও সূরা পরও কেনো আমার সপ্নদোষ হচ্ছে? আমার জানা মতে আমি তো কোথাও ভুল করিনি।

আমি চাচ্ছি যে, একদম স্থায়ীভাবে আমার সপ্নদোষ না হোক। এটা কি অসম্ভব? আর যদি সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে এর জন্য আর কি কি আমল করতে হবে?

(২) আমি যতটুকু জানি, ১ মাসে ১-২ বার সপ্নদোষ হওয়া কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে আমি তো ঠিক মত আমলগুলো করার চেষ্টা করতেছি। তাহলে ওই ১-২ দিনই বা কেন হবে সপ্নদোষ?

সপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হয়ে যায়,তাই রাতে সাথে সাথে গোসল করতে গেলে আম্মু জিজ্ঞাস করে কি হয়েছে। তাই সেখানে একটা awkward situation/ অপ্রীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়। যদিও আম্মুর সাথে আমি অনেকটা frank/সব কথা-বার্তা খুলে বলতে পারি। আম্মু আমাকে গোসল করতে যেতে দেখে জিজ্ঞাসাও করেছে যে সপ্নদোষ হয়েছে? আমি বলেছি হ্যা। কিন্তু সবসময় তো আর বলা যায়না যে ফরজ গোসল করতে যাচ্ছি।

তাই সপ্নদোষ থেকে একেবারে,স্থায়ীভাবে কি পরিত্রাণ পাওয়ার কোন উপায় আছে?

(৩) হুজুর, হাফেজ, মাওলানা, মুফতি অর্থাৎ যারা ইসলাম নিয়ে আমাদের মত general line এর মানুষের থেকে বেশি জানে এবং মানে, তাদেরও কি সপ্নদোষ হয়? কারন আমরা তো অনেক সময় উল্টা- পাল্টা চিন্তা করি, তারা তো এসব চিন্তা- ভাবনা করে না।

মূলত,আমি জানতে চাচ্ছি যে সপ্নদোষ কি শুধু খারাপ চিন্তা- ভাবনার কারনেই হয় নাকি স্বাভাবিক ভাবে এমনিতেও হয়। যেমনঃ মেয়েদের মাসিক হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। ছেলেদের সপ্নদোষও কি স্বাভাবিক বিষয়? নাকি এটা শুধু মাত্র খারাপ চিন্তা-ভাবনার কারনে হয়ে থাকে।

আমার কোন প্রশ্নে কোন ভুল বা কারো মনে আঘাত দিয়ে থাকলে আমাকে মাফ করবেন। আমি কাউকে নিচু বা ছোট করতে প্রশ্ন করিনি।

জাজাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(১.২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বপ্নদোষ হলো প্রাকৃতিক চাহিদা,মানবীয় চাহিদা।
,
স্বপ্নের মাধ্যমে যৌন উত্তেজনামুলক কিছু দেখলে বা করলে বীর্যপাত হয়। আর তাকেই বলে স্বপ্নদোষ। যদিও তা দোষনীয় নয়, যদি তা বেশী আকারে না হয়। দোষের হয় তখনি, যখন মাসে ৪ থেকে ৫ বারের অধিক হতে থাকে। আর তখনই প্রয়োজন হয় চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক প্রতিব্যবস্থার। অতএব স্বাভাবিকভাবে স্বপ্নদোষ হওয়াতে যুবকের ঘাবড়াবার কিছু নেই। এতে কোন ক্ষতি আছে, এমন ধারণা করে চিন্তিত হওয়ারও কোন কারণ নেই। বীর্য বেশী হলে তা তরল হয়ে। স্থলন হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। অতএব স্বপ্নদোষে বীর্যক্ষয় হয়ে সে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এমন দুশ্চিন্তা মনে এনে নিজেকে দুর্বল করা ঠিক নয়। অবশ্য অতিরিক্ত মাত্রায় হলে চিন্তার কারণ বটে।
,
এটি পুরুষ মহিলা উভয়েরই হয়। 
হযরত উম্মে সালমা রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ امْرَأَةُ أَبِي طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ : ( إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِذَا رَأَتْ الْمَاءَ )

তিনি বলেন,হযরত আবু তালহা রাযি এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! নিশ্চয় আল্লাহ হককে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না,মহিলার উপর কি গোসল ফরয হবে, যখন মহিলার স্বপ্নদোষ হবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হ্যা মহিলার উপরও গোসল ফরয হবে,যখন মহিলা পানিকে দেখবে।(সহীহ বোখারী-৩৭৩,সহীহ মুসলিম-৪৭১)

আরো জানুনঃ 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
স্বপ্নদোষ হলো প্রাকৃতিক চাহিদা,মানবীয় চাহিদা।
তা দোষনীয় নয়।

জানা মতে স্থায়ীভাবে সপ্নদোষ বন্ধ করা যায়না।
এমনটি কোনোভাবে করা গেলে তাহা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনবে। 
তবে বিবাহ করে সপ্তাহে নুন্যতম ২/১ বার  স্ত্রী সহবাস করলে আর স্বপ্নদোষ হবেনা,ইনশাআল্লাহ।  

আপনার যে প্রতিমাসে ২-৩ বার সপ্নদোষ হয়ে থাকে,এটি স্বাভাবিক।
এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

(০৩)
হ্যাঁ তাদেরও স্বপ্নদোষ হয়।
তবে যারা বিবাহিত, নিয়মিত স্ত্রী সহবাস করে তাদের স্বপ্নদোষ হয়না।
  
স্বপ্নদোষ শুধু খারাপ চিন্তা- ভাবনার কারনেই হয়না।
বরং স্বাভাবিক ভাবে এমনিতেও হয়। 

শরীরে বীর্য বেশী হয়ে জমা হয়ে গেলে তা বের হয়ে যাবে। স্থলন হবে এটাই নিয়ম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 37 views
0 votes
1 answer 72 views
...