আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
243 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

উস্তাদ,

একজন সাধারণ পুরুষ কিন্তু সুন্নত মেনে চলার চেষ্টা করে, আমল আখলাক তেমন উন্নত ও নয়, এমন একজন ব্যক্তিকে অন্যান্য বিশেষ দিনের মত ঈমাম সাহেব একদিনের ছুটিতে গেলে উনাকে ৩/৪ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব দিয়ে গেলেন। ঐ ব্যক্তি ঐদিন মাসজিদে হুজুরের রূমেই ঘুমিয়েছেন যাতে ফজর নামাজ পড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা যায়। সেদিন রাতে তিনি স্বপ্নে দেখতেছেন যে, কেউ একজন গাড়ি নিয়ে মাইকিং করে গ্রামের লোকদের জানাচ্ছেন যে, আগামীকাল রাত ৮টা বাজে ঐ মাসজিদে " তামাত্তু জামাত" অনুষ্ঠিত হবে আর স্বপ্নের মধ্যে ব্যক্তির পরিষ্কার মনে হয়েছে যে, এই অনুষ্ঠান টা মূলত একটি তাওবা করার মাজলিস। কারণ উনি স্বপ্নে দেখছেন যে, মাইকিং শুনে উনার পাশের কেউ একজন অন্য কয়েকজনের সাথে ঐ মাজলিসে আমলের নিয়ম  বলতেছেন, নিয়মের মধ্যে যতটুকু মনে পড়ে, হয়ত ব্যক্তিটি আউজুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ সহ ১০ বার নাকি কতবার ঠিক মনে নেই হয়ত সূরা ঈখলাছ পড়ার কথাই বলছিলেন। এর পরের কথাটা স্পষ্ট উনার মনে আছে যে, ঐ লোকটি দিনকে ঘন্টাতে নিয়ে, ১ঘন্টায় ৬০ মিনিট এমন বলে, ১ মিনিটে ৬০ সেকেন্ড বলে বলে এমন বুঝাতে চান যে, জীবনের ব্যয়িত প্রতিটি সেকেন্ডের জন্যসহ তাওবাহ করার সহীহ নিয়তে তাওবার কাজটি করতে হবে। আর যে স্বপ্ন দেখছেন উনি খানিকটা দূরে থেকে ঐ ব্যক্তির বলা নিয়মগুলো শুনছেন। এমন সময় হঠাৎ উনার ঘুম ভেংগে যায়, জেগে মোবাইলে দেখে তখন রাত ৩ টার উপরে, তবে অবশ্যই সুবহে সাদিক হয়নি তখন এটা নিশ্চিত। সুবহে সাদিকের আরো প্রায় ১ ঘণ্টার মত বাকি ছিল। পরে উনি কি করবেন উঠে, নিজে তাওবাহ করবেন একটু মনে জেগেছিল, কিন্তু বিছানা থেকে আর উঠেন নি, আবার ঘুমিয়ে পড়ে একবারে ফজর এর ওয়াক্তে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়িয়ে বাড়িতে চলে যান। কয়েকদিন আগের স্বপ্ন এটা।

★এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা হবে কিনা, হলে কী হতে পারে জানালে ভাল হয়।
জাজাক আল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (721,400 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
স্বপ্নের হাক্বীক্বত সম্পর্কে আল্লামা মাযরি রাহ বলেন,
 ﻭﻗﺎﻝ اﻟﻤﺎﺯﺭﻱ: ﻣﺬﻫﺐ ﺃﻫﻞ اﻟﺴﻨﺔ ﺃﻥ ﺣﻘﻴﻘﺔ اﻟﺮﺅﻳﺎ ﺧﻠﻖ اﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﻗﻠﺐ اﻟﻨﺎﺋﻢ اﻋﺘﻘﺎﺩاﺕ ﻛﺨﻠﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﻗﻠﺐ اﻟﻴﻘﻈﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻳﻔﻌﻞ ﻣﺎ ﻳﺸﺎء ﻻ ﻳﻤﻨﻌﻪ ﻧﻮﻡ ﻭﻻ ﻳﻘﻈﺔ، ﻭﺧﻠﻖ ﻫﺬﻩ اﻻﻋﺘﻘﺎﺩاﺕ ﻓﻲ اﻟﻨﺎﺋﻢ ﻋﻠﻢ ﻋﻠﻰ ﺃﻣﻮﺭ ﺃﺧﺮ ﺗﻠﺤﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﺛﺎﻧﻲ اﻟﺤﺎﻝ ﻛﺎﻟﻐﻴﻢ ﻋﻠﻰ اﻟﻤﻄﺮ
ভাবার্থ-
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের ভাষ্যমতে স্বপ্নের মূল রহস্য হল যে,আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক ঘুমন্ত ব্যক্তির অন্তরে কিছু খেয়ালাত সৃষ্টি হয় যেভাবে জাগ্রত ব্যক্তির অন্তরে সৃষ্ট থাকে।
আল্লাহ ঐ পবিত্র সত্তা যিনি যা ইচ্ছা তাই করেন,যাকে ঘুম বা তন্দ্রা বাধা দিতে পারেনা।
ঘুমন্ত ব্যক্তির মধ্যে ঐ সমস্ত খেয়ালাতের উপস্থিতি তার পরবর্তি জীবনযাত্রার উপর ইঙ্গিত বহন করে।
যেমন আকাশের মেঘ বৃষ্টিপাতের উপর প্রমান বহন করে থাকে।
মিরকাত-৪৬০৬হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য 


হযরত ইবনে যামল(/যিমল)রাযি. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺯَﻣْﻞٍ ، ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺍﺳْﺘَﻘْﺒَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺑِﻮَﺟْﻬِﻪِ ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌْﺠِﺒُﻪُ ﺍﻟﺮُّﺅْﻳَﺎ ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : " ﻫَﻞْ ﺭَﺃَﻯ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺭُﺅْﻳَﺎ ؟ " ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺯَﻣْﻞٍ : ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺃَﻧَـﺎ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ، ﺍﻗْﺼُﺺ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম যখন ফজরের নামায পড়তেন,তখন তিনি মানুষের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম এর স্বপ্ন শোনা বড়ই পছন্দনীয় ছিলো।
অতঃপর উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বললেন,তোমাদের মধ্যে কি কেউ আজ স্বপ্ন দেখেছো?
ইবনে যামল বললেন, হে 'রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম' আমি দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম নিম্নোক্ত দু'আ টি পড়লেন,
ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ،
(আ'মলুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইল-৭৬৬)



প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এ স্বপ্ন ইঙ্গিত বহন করে যে,আপনি তাওবাহ করবেন।এবং সর্বদা নেক আমল করার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।দ্বীনের দাওয়াত ও তাবলীগ করবেন।এবং নিজ এলাকার সবাইকে হেকমতের সাথে স্বপ্নের কথা উল্লেখ ব্যতীত তাওবাহর দাওয়াত দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (28 points)
উস্তাদ,
যা বলেছেন বুঝেছি। 

তবে স্বপ্নে উল্লেখিত " তামাত্তু জামাত" এর কি সঠিক আক্ষরিক কোনো অর্থ হয় কিনা। নাকি শব্দটি বলা-ই ঠিক নেই?

জাজাক আল্লাহ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...