আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
93 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
কুরবানী সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন
১। কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে কেউ দুই বছরের কম কোন গরুকে মোটাতাজা (এমন ভাবে মোটাতাজা করা হয় যাতে বয়স উল্লেখ না করলে বুঝার উপায় নেই যে এটার বয়স কত হতে পারে বিশেষ করে দুই বছরের কিছু কম বয়সী গরু বা আরও কম যেটাতে নরমালি বুঝা যায় বয়স দুই বছর হয়নি। শুধু গেরস্ত ভালো দামের আশায় বিক্রি করে দেয় এবং কিছু গ্রাহক যারা কুরবানী দিতে চায় তারাও অল্প দামে কিনতে পারলে লাভবান মনে করে। বিক্রেতা/ব্যাপারী বয়স উল্লেখ ছাড়া বা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে হাটে বিক্রি করে তাহলে তার এই বিক্রি জায়েজ হবে কিনা এবং যদি নাজায়েজ হয় তাহলে পুর্বের আরও এমন করে থাকলে সেই বিক্রিত টাকা সংসারে বিভিন্ন কাজে খরচ করে থাকলে কি হবে?

আর কোন ক্রেতাও যদি শুধু স্বাস্থ্যের দিকে তাকিয়ে বয়সের বিষয় না জেনেই ক্রয় কুরবানী করে তাহলে সেটাও কি হতে পারে।?

**

ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি যে যাদের সামর্থ থাকা অবস্থায় কুরবানী করে (নামাজি+বেনামাজি) ৩ টি অংশে ভাগ করে দুই অংশ নিজের জন্য রেখে দেয় (নিজে খাওয়া ও আত্মীয়দের দেয়ার জন্য) বাকি অংশ স্বেচ্ছায় একটা জায়গায় জড়ো করে। এভাবে সারাদিন একটা মহল্লায় যত কুরবানী হয় হোক গরু বা খাসি সবই একত্র করে (অবশ্য গরুর গোস্ত ও খাসির গোস্ত আলাদা থাকে)।
এরপর সমাজে যতগুলো ঘর থাকে সবগুলো লিস্ট অনুযায়ী বন্টন করা হয়। এই লিস্টে কুরবানী দাতা, সামর্থবান (বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় তার উপর কুরবানী ওয়াজীব ছিল কিন্তু দেয়নি), গরিব সবাইকে সমান হারে গোস্ত ভাগ করে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য কোন কোন মহল্লায় দুই বা ততোধিক সমাজ আলাদা করে ভাগ করা থাকে সেক্ষেত্রে আলাদা আলাদা সমাজ অনুযায়ী গোস্ত উপরিউক্ত পদ্ধতিতে বন্টন করা হয়।

২। আমার মূল প্রশ্ন হলো যে ব্যক্তি কুরবানী করল সেই ব্যক্তি উক্ত লিস্ট হতে কোন গোস্ত গ্রহণ করতে পারবে কিনা?

অবশ্য এখানে সবাই স্বতঃস্ফূর্ত মানসিকতা নিয়েই থাকে। যারা লিস্টে থাকে তারা সবাই সমাজ বা মসজিদ উন্নয়নমূলক কাজে নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ চাদা দিয়ে থাকে সেই থেকে সমাজের কারও কোন অভিযোগ থাকে না উক্ত পদ্ধতিতে গোস্ত বন্টন নিয়ে।
যদি গ্রহণ জায়েজ হয়ে থাকে তাহলে সেখানে বেনামাজী, লোক দেখানো কুরবানী বা সুদি কারবারি ব্যক্তিরও গোস্তও মিশ্রিত থাকে। সেক্ষেত্রে কি হবে।

3। আরেকটি বিষয় হলো স্পষ্ট চিহ্নিত করা যায় যে তার নেসাব পরিমাণ সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করছে না এমন সংখ্যা সমাজে আরও থাকে তাহলে নিজের কুরবানীর থেকে সমাজে উক্ত পদ্ধতির জন্য একটা অংশ দিলে কুরবানির কোন ক্ষতি হবে কিনা।
যদি নাজায়েজ হয় তাহলে উক্ত পদ্ধতির বিরোধিতা করতে গিয়ে ফেত্নার আশংকা তৈরি হলে কি করনীয়।
সব মিলিয়ে পরামর্শমূলক উত্তর দিলে উপকৃত হব ইনশাআল্লাহ।
সবশেষে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি দীর্ঘ লেখাটি পড়ার জন্য।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَذْبَحُوا إِلَّا مُسِنَّةً، إِلَّا أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ، فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنَ الضَّأْنِ

জাবির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুসিন্নাহ্ (দুধ দাঁত পড়ে গেছে এমন পশু) ছাড়া কুরবানী করবে না। তবে এটা তোমাদের জন্য কষ্টকর মনে হলে তোমরা ছ’মাসের মেষ-শাবক কুরবানী করতে পার। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৯৬৩]

গরু মহিষের দাঁত পড়ে সাধারণত দুই বছর হলে। এর আগে পড়ে না। তাই এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল, গরু মহিষ হলে তা দুই বছর হতে হবে।

গরু ও মহিষ দু’বছরের কম হলে তা দিয়ে কুরবানী করা শুদ্ধ হবে না।

واما سنه: فلا يجوز شيئ مما ذكرنا من الإبل والبقر والغنم من الأضحية إلا الثنى من كل جنس…… وأما معانى هذه الأسماء فقد ذكر القدورى أن الفقهاء قالوا الجذع من الغنم ابن ستة أشهر والثنى منه ابن سنة (بدائع الصنائع-4/206)
সারমর্মঃ
গরু,,,,,, এর দুই বছর না হলে কুরবানী জায়েজ হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত গরু দিয়ে কুরবানী আদায় হবেনা।

এভাবে ধোকা দিয়ে বিক্রয় করা হলে বিক্রেতার উপর ধোকা দেয়ার গুনাহ হবে।
তবে সেই টাকাকে হারাম বলা যাবেনা। সেই বিক্রিত টাকা সংসারে বিভিন্ন কাজে খরচ করে থাকলে সমস্যা নেই।

(০২)
উক্ত গোশত নেয়া জায়েজ আছে।

(লক্ষনীয় বিষয় হলো গরিবদের অংশ হতে সমাজে কিছু দিয়ে সেখান হতে গোশত নিয়ে আসা যদিও জায়েজ,তবে এটি কাম্য নয়। এটির পুরোটাই গরিবদের মাঝে বন্টন করা সবচেয়ে ভালো।)

তবে উক্ত গোশতের মধ্যে কাহারো মান্নতের পশু থাকা যাবেনা।
যদি এখানে মান্নতের পশুর গোশত থাকে,তাহলে তাহা ধনীর জন্য নেয়া জায়েজ নেই।

(০৩)
তাহলে নিজের কুরবানীর থেকে সমাজে উক্ত পদ্ধতির জন্য একটা অংশ দিলে আপনার কুরবানির কোন ক্ষতি হবেনা।

যার গুনাহ তারই হবে,আপনার নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 121 views
...