আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১)কোন ধরনের কুফুরি হলে স্বামী স্ত্রীর বিবাহ ভংগ হয়?

২)নামাজ, রোজা,ইবাদত নিয়ে কেও কটুক্তি করলো না কিন্তু যারা এই ইবাদত গুলার সাথে জড়িত তারা একটু রাগারাগি করলে বা চিল্লাইলেই নামাজ রোজা নিয়ে সেই মানুষকে গালি দিলে কি কুফুরি হবে?

৩) কারো সাথে তিনদিনের বেশি কথা না বললে কি মুমিন /মুসলমান থাকে না হাদিস কি সহীহ এইটা?

আমি যদি কারও প্রতি রাগ থেকে না মুলত কটুক্তি থেকে, খারাপ ব্যবহার থেকে বাচতে বা গিবত, চিল্লাচিল্লি ইত্যাদি থেকে বাচতে পরিবারের মানুষদের সাথে কথা না বলি আমার কি গুনাহ হবে?যদি প্রয়োজনেও না বলি।

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
কুফরি ২ প্রকারঃ-

এক,
বড় কুফরীঃ যা মানুষকে দ্বীন থেকে বের করে দেয়। যেমনঃ আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামকে গালি দেওয়া অথবা ইসলামের রুকনসমূহ সহ আল্লাহ কর্তৃক ফরযকৃত দ্বীনের অন্যান্য যরূরী বিষয়ের কোনো কিছুকে অস্বীকার করা। 

ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 

 মহান আল্লাহ বলেন, 
﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ 
٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ﴾ [التوبة: ٦٥،  ٦٦] 

“আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্র সাথে, তাঁর আয়াতের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করতে? ওযর পেশ করো না, নিশ্চয় তোমরা ঈমান আনার পর (ঠাট্ট-বিদ্রূপের কারণে) কাফের হয়ে গেছ” (তাওবাহ ৬৫-৬৬)। 

দুই. 
ছোট কুফরীঃ যেমনঃ আল্লাহ্র নে‘মত অস্বীকার করা অথবা কোনো মুসলিম ব্যক্তির সাথে অন্যায়ভাবে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 
«سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ»

 “মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া ফাসেক্বী এবং তার সাথে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা কুফরী” (বুখারী)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বড় কুফরি করলে তথা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো কুফরি করলে স্বামী স্ত্রীর বিবাহ ভঙ্গ হয়।

(০২)
এতে কুফরি হবেনা।

(০৩)
কারো সাথে তিনদিনের বেশি কথা না বললে ব্যাক্তি মুমিন /মুসলমানই থাকেনা,এমন কথা হাদীসে নেই।
তবে এমতাবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামে যাওয়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছেঃ 


হাদীস শরীফে এসেছেঃঃ-

عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ .
 
আবদুল জাব্বার ইবনু ’আলা আত্তার ও সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) ... আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করবে না। পরস্পরকে ত্যাগ করবে না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করবে না, পরস্পর হিংসা রাখবে না বরং আল্লাহর বান্দা হয়ে ভাই ভাই হিসাবে থাকবে। কোন মুসলিমের জন্য হালাল নয় তার অপর মুসলিম ভাইকে তিন দিনেরও বেশী পরিত্যাগ করে থাকা। (তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৯৩৫)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثٍ فَمِنْ هَجَرَ فَوْقَ ثَلَاثٍ فَمَاتَ دَخَلَ النَّارَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُد

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তিনদিনের বেশি সময় অপর কোন মুসলিম ভাইয়ের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে সাক্ষাৎ পরিত্যাগ করে। যে ব্যক্তি তিনদিনের বেশি সময় অপর ভাইকে ত্যাগ করল, আর এ সময় তার মৃত্যু হলো, তবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
সহীহ : আহমাদ ৯০৯২, আবূ দাঊদ ৪৯১৪, সহীহুল জামি‘ ৭৬৫৯, সহীহ আত্ তারগীব ২৭৫৭, ইরওয়া ৭/৯৪, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৯১৬১, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৮/১২৬।

★প্রশ্নে উল্লেখিত আপনি কাহারো সাথে কথা না বললে গুনাহ হবে।
গীবত ইত্যাদি থেকে বাঁচতে কম কথা বলবেন,কম সময় দিবেন,প্রয়োজনে শুধু সালাম চালিয়ে যাবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...