আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।

বিসমিল্লাহ বলে খাবার শুরু না করার একটি ঘটনা প্রসঙ্গে অন্য একটি হাদিসে এসেছে-হজরত উমাইয়্যাহ ইবনু মাখশি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসা ছিলেন। তখন এক লোক খাচ্ছিল কিন্তু আল্লাহর নাম নিয়ে খাওয়া শুরু করেনি। মাত্র এক লোকমা খাবার বাকি থাকতে সে তা মুখে দেয়ার সময় বলল-بِسْمِ اللَّهِ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُঅর্থাৎ খাবারের শুরুতে এবং শেষে বিসমিল্লাহ।তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেসে দিলেন এবং বললেন, শয়তান তার সঙ্গে খাচ্ছিল। যখন সে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করলে, শয়তান তার পেটের খাবার বমি করে ফেলে দিল।(মিশকাত)

.......................................................................................

[উক্ত হাদিসে খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ না বলার কারণে শয়তানের খাওয়ার কথা বলা হয়েছে।এবং দোয়া পড়ার পর শয়তান যে খাবারটা খেয়েছে তা বমি করে ফেলে দেয়ার কথাও বলা হয়েছে।কিন্তু সাধারণত বিসমিল্লাহ না বললে খাবার কমে যাওয়ার ব্যাপারটা খালি চোখে দেখা যায় না কেন?এমটা কি নয় যে একটা মাছি খাবারের উপর বসল।তারপর মাছিটা খাবারটা খাওয়ার পর সেটা খালি চোখে আন্দাজ করাটা মুশকিল ঠিক কতখানি খাবার মাছিটা খেয়েছে।আবার অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখা যায় এমন জীবাণুও যখন খাবার খেয়ে নেয় তখনও কতটুকু খাবার খেয়েছে সেটাও বুঝা মুশকিল।তাহলে যে খাবারে বিসমিল্লাহ বলা হয় না সেই খাবারের যে বরকতের অংশটুকু থাকে সেখান থেকে শয়তানও কি ঠিক একইভাবে মাছি বা নাপাক জীবাণুর মতো খেয়ে থাকে?অর্থাৎ খুবই অল্প পরিমাণে খেয়ে থাকে যেটা আন্দাজ করাটা মুশকিল আমাদের জন্য।

শয়তান তো তার আকার আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।একটা জীবাণুর খুব অল্প পরিমাণ খাবার খেলেই তার পেট ভরে যায়।শয়তানের ক্ষেত্রেও কি একই ঘটনা ঘটে?
by (75 points)
গায়েবের বিষয়ে মুমিন ব্যাখ্যা খুঁজে না ভাইজান, শুনলাম আর মেনে নিলাম!
by (39 points)
জানার জন্য প্রশ্ন করা।

1 Answer

+1 vote
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নাত।
শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর ‘‘বিসমিল্লা-হি আও্ওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ’ বলা সুন্নাত।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ فَنَسِيَ أَنْ يَذْكُرَ اللَّهَ عَلَى طَعَامِهِ فَلْيَقُلْ: بِسْمِ اللَّهِ أوَّلَه وآخرَه . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد

আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ খাবার খায় এবং আল্লাহর নাম নিতে ভুলে যায়, (স্মরণ হওয়ার পর) সে যেন বলে, ‘‘বিসমিল্লা-হি আও্ওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ’’ (অর্থাৎ- খাবারের প্রথমে এবং শেষে আল্লাহর নামে)।

সহীহ : আবূ দাঊদ ৩৭৬৭, তিরমিযী ১৮৫৮ সহীহ ইবনু মাজাহ ৩২৬৪, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২১০৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫২১৪, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৬৭৫৮, দারিমী ২০২০, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৮৫২, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৫০০৪।


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যেই হাদীসের কথা উল্লেখ করেছেন,তাহা হলোঃ-

عَن أُميَّةَ بن مَخْشِيٍّ قَالَ: كَانَ رَجُلٌ يَأْكُلُ فَلَمْ يُسَمِّ حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْ طَعَامِهِ إِلَّا لُقْمَةٌ فَلَمَّا رَفَعَهَا إِلَى فِيهِ قَالَ: بِسْمِ اللَّهِ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ فَضَحِكَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ: «مَا زَالَ الشَّيْطَانُ يَأْكُلُ مَعَهُ فَلَمَّا ذَكَرَ اسْمَ اللَّهِ اسْتَقَاءَ مَا فِي بَطْنه» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

উমাইয়াহ্ ইবনু মাখশী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি বিসমিল্লা-হ না পড়েই খাওয়া শুরু করল, অবশেষে মাত্র একটি গ্রাস অবশিষ্ট রইল, যখন সে তা মুখের কাছে তুলে বলে উঠল, ‘‘বিসমিল্লা-হি আও্ওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ’’ (অর্থাৎ- খাবারের প্রথমে এবং শেষে আল্লাহর নামে)। তার অবস্থা দেখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে উঠলেন, অতঃপর বললেনঃ এতক্ষণ পর্যন্ত শয়তান ঐ লোকটির সঙ্গে খাচ্ছিল। আর যখনই সে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করল, তখনই শয়তান তার পেটের মধ্যে যা কিছু ছিল বমি করে দিলো।
(আবূ দাঊদ ৩৭৬৮.মিশকাত ৪২০৩।)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
 (فَلَمَّا ذَكَرَ اسْمَ اللهِ اسْتَقَاءَ مَا فِىْ بَطْنِه) ‘‘যখনই ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলা হলো তখনই শয়তান তার পেটে যা ছিল বমি করে বের করে দিল। এখানে বমি করার বিষয়টি প্রকৃত বমি নাও হতে পারে অথবা এ অর্থও হতে পারে যে, ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ না বলার ফলে যে বারাকাত চলে গিয়েছিল ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলাতে ঐ বারাকাত খাদ্যের মধ্যে ফিরে এলো। 

তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ শয়তানের জন্য বা বৈধ হয়েছিল ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ না বলার কারণে ‘‘বিসমিল্লা-হ’’ বলার ফলে তা তার বিপদ হয়ে দাঁড়ালো।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৬৪)

https://ifatwa.info/50191/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
খাবারের পূর্বে বিসমিল্লাহ না বললে সেই খাবারে শয়তান শরিক হয়। এর অর্থ হল, সেই খাবারের বরকত কমে যায়। যে খাবার খেয়ে আপনার পরিতৃপ্ত হওয়ার কথা ছিল, সেই খাবারকে ভক্ষণ করার পরও আপনি পরিতৃপ্ত হবেন না।কেননা, আপনার খাবারের বরকত কমে গেছে। সরাসরি খাবার তো আর শয়তান ভক্ষণ করবে না।

★সুতরাং এখানে শয়তান কতটুকু খেলো,সেই ধরনের প্রশ্ন অবান্তর।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...