আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
edited by
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
সম্মানিত শায়খ,
আমার এক বড় ভাইয়ের একটি কোম্পানি আছে যেখানে মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দুধর্মাবলম্বীরাও কাজ করে। মুসলিমদের ঈদ উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছামূলক বার্তা বা ই-মেইল পাঠানো হয়। কখনো কখনো মুসলিম, হিন্দু সবাইকে উপহার বা হাদিয়াও পাঠানো হয়। মুসলিমদের তাসবিহ দেওয়া হলে হিন্দুদেরকে তাদের জপমালা বা এ জাতীয় কোন কিছু দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, ভাই ভাবছেন যে, হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কি এধরনের শুভেচ্ছা বার্তা বা ই-মেইল দেওয়া যায় কিনা। বিষয়টি ভাইয়ের মনে এসেছে এই কারনে যে, ভাই যখন অমুসলিম দেশে ছিলেন তখন নিজেকে মাঝে মাঝে খুব হীনমন্য মনে হয়েছে এধরনের অবস্থায়। তাই মুসলিম প্রধান দেশে অন্যদের যাতে এমন অনুভূত না হয় সেজন্য তিনি অন্তত নিজের কোম্পানিতে এই উদ্যোগ নিতে চাচ্ছিলেন। ভাইয়ের একটা ভালো দিক হলো যে, তিনি বলেছেন, 'আমি নিজের ধর্ম ছেড়ে অন্যের প্রতি উদারতা দেখাতে রাজি নই।' তাই আমার এই ফতোয়া প্রয়োজন।
কুরআন ও হাদীসের আলোকে এ ব্যাপারে শরীয়াহর বিধান অবগত করলে এবং ভাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা তুলে ধরলে আপনার নিকট কৃতজ্ঞ থাকবো, ইন শা আল্লাহ্।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ্ বলেন, “নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম।” (সূরা আল ইমরানঃ১৯)

"হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।" [সূরা হজঃ ৭৩]

"নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন।" [সূরা আন নিসাঃ১১৬]

শিরক সম্পর্কে আল্লাহ বলেন - 

আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা সবচেয়ে বড় জুলুম। (সূরা লোকমানঃ 13) 

উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, "তোমরা মুশরিকদের উপাসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করো না। কারণ সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে।" 

(ইবনুল ক্বাইয়্যিম(রাহিঃ) তাঁর 'আহকামুল জিম্মাহ ১/৭২৩-৭২৪ এ সহিহ সনদে বায়হাক্বী থেকে এই রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন।)

বিধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কাফেরদের শুভেচ্ছা জানানো আলেমদের সর্বসম্মত মতানুযায়ী হারাম। ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) তাঁর লিখিত “আহকামু আহলিয যিম্মাহ” গ্রন্থে এ বিধানটি উল্লেখ করেছেন। 

তিনি বলেন: “কোন কুফরী আচারানুষ্ঠান উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। যেমন- তাদের উৎসব ও উপবাস পালন উপলক্ষে বলা যে, ‘তোমাদের উৎসব শুভ হোক’ কিংবা ‘তোমার উৎসব উপভোগ্য হোক’ কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন কথা। যদি এ শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করা কুফরীর পর্যায়ে নাও পৌঁছে; তবে এটি হারামের অন্তর্ভুক্ত। এ শুভেচ্ছা ক্রুশকে সেজদা দেয়ার কারণে কাউকে অভিনন্দন জানানোর পর্যায়ভুক্ত। বরং আল্লাহর কাছে এটি আরও বেশি জঘন্য গুনাহ। এটি মদ্যপান, হত্যা ও যিনা ইত্যাদির মত অপরাধের জন্য কাউকে অভিনন্দন জানানোর চেয়ে মারাত্মক। যাদের কাছে ইসলামের যথাযথ মর্যাদা নেই তাদের অনেকে এ গুনাহতে লিপ্ত হয়ে পড়ে; অথচ তারা এ গুনাহের কদর্যতা উপলব্ধি করে না। যে ব্যক্তি কোন গুনার কাজ কিংবা বিদআত কিংবা কুফরী কর্মের প্রেক্ষিতে কাউকে অভিনন্দন জানায় সে নিজেকে আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির সম্মুখীন করে।”

কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
إِن تَكْفُرُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنكُمْ ۖ وَلَا يَرْضَىٰ لِعِبَادِهِ الْكُفْرَ
‘তোমরা যদি কুফুরী কর তবে (জেনে রেখ), আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফুরী আচরণ পছন্দ করেন না।’ [সূরা যুমার, আয়াত: ৭]

ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) তার কিতাবে লিখেন,
‘যে ব্যক্তি কারো গুনাহের কাজ, বিদআত বা কুফরি কাজের কারণে অভিনন্দন জানায়, সে নিজেকে আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির সামনে নিজেকে পেশ করে।’ [আহকামু আহলিয যিম্মাহ ১/৪৪১]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার ভাইয়ের জন্য হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে এধরনের শুভেচ্ছা বার্তা বা ই-মেইল দেওয়া জায়েজ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...