আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
222 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
(১ এর বর্ননা) নামাজে অনেক সময় সুরা ফাতিহার কোন লাইন পড়ার পর মনে হয় যে সেই লাইনটি বা সেই লাইনের কোন শব্দ ঠিকভাবে উচ্চারণ হয়নি। (যেমনঃ ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম) এখানে, এই লাইন পড়ার পর মনে হয় যে মুস্তাকিন এর "স" টা ঠিক মত উচ্চারণ হয়নি। আর "স" ঠিক ভাবে উচ্চারণ না হলে সেইটা অনেকটা "ত" এর মত শুনায়। অর্থাৎ "মুস্তাকিন" "স" এর জায়গায় "মুত্তাকিন" শুনা যায়।
এই সময় নামাজের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকি যে সেই শব্দ/ লাইনটা টা ঠিকমত উচ্চারণ হলো কিনা।
মানে খুব সন্দেহ হয় যে উচ্চারণ কি ভুল করলাম নাকি ঠিক
★তখন নামাজে দাড়ানো অবস্থায় আরো কনফিউশনে থাকি যে তখন কি সেই লাইন/ শব্দটি আবার পড়বো নাকি পড়বো না। (যেহেতু আমি সঠিক পড়তে চেয়েছি, কিন্তু অনেক লাইন টানা পড়ার কারনে অথবা সেই সময় ঠোঁট লেগে যাওয়ার কারনে হয়তো সেই শব্দটা এমন ভাবে উচ্চারণ হয়েছে যা সম্পুর্ণ clear ভাবে উচ্চারণ হয়নি বা উচ্চারণ হলেও আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি অন্য সময় যেইভাবে উচ্চারণ করি সেইভাবে উচ্চারণ হয়নি।
এই সমস্যাটা এখন খুব বেশি হচ্ছে। হয়তো ওয়াসাওয়াসা সৃষ্টি হয়ে গেছে।
তাই,

(১) তখন কি আবার সেই লাইন/ শব্দ পড়বো? নাকি সেটাকে পাত্তা না দিয়েই পড়ের লাইন পড়ে যাবো? (নামাজের মধ্যে)
(১.১) সেই #১-২ টি শব্দ/ লাইন আবার পড়ার কারনে কি সেজদা সাহু দেওয়া লাগবে?
(কারন এই সমস্যাটা এখন বেশি ই হচ্ছে, প্রায় প্রত্যেক ওয়াক্তেই মনে সন্দেহ হয় কোনো না কোনো লাইনের কোনো শব্দ ভুল উচ্চারণ করেছি। তাই সেই শব্দটা কি আবার উচ্চারণ করবো?

(২) নামাজে কোন কারন ছাড়াই ইচ্ছা করে এমনিতেই যদি কেউ সুরা ফাতিহার (শুধুমাত্র ১ টি লাইন) ই একাধিকবার পড়ে তাহলে কি সেজদা সাহু দিতে হয়?
(২.১)নাকি ১ লাইনের বেশি হতে হবে (অর্থাৎ ২-৩ টা) শব্দ/ লাইন একাধিক বার পড়লে সেজদা সাহু দিতে হয়?

(৩) তাশাহুদ পড়ার সময় কেউ যদি "আসসালামু আলাইকা" এর জায়গায় "আসসালা ম আলাইকা" পড়ে তাহলে সেই লাইনটা আবার পড়তে হবে? অর্থাৎ "মু" এর জায়গায় "ম" উচ্চারণ করে ফেললে কি সেই লাইন আবার পড়া লাগবে?
আমি জানি "আসসালামু আলাইকা" সঠিক কিন্তু তারপরও যদি "আসসালা ম আলাইকা" বলে ফেলি তাহলে কি আবার "আসসালামু আলাইকা" পড়বো নাকি  "ম" উচ্চারণ করে ফেললেও বাকি আয়াত পড়ে ফেলবো?

(৪) হাতে নাপাক লাগলে সেই হাত ধুতে গেলে (যতি আস্তে ধুতে যাই, অনেক ছোট ছোট ফোটা আশেপাশে লাগেই) সেই পানি ছিটে পায়ে/গায়ে লাগে, সেই পায়ের/গায়ে ছিটা পানি ধুতে গেলে সেই পানি পাশের বদনা বা বালতিতে লাগে। সেই বদনা/ বালতি ধুতে গেলে সেই পানি গিয়ে দেয়ালে লাগে। অনেকটা এইরকম চলতেই থাকে। এই জন্য আমি ওয়াশরুমে গেলে ৩০ মিনিট-১ ঘন্টা লাগে।

যত আস্তেধীরেই আমি ধুতে যাই পুকুর ছাড়া ওয়াশরুমে কোনকিছু ধুলে সেই পানি অন্য জায়গায় লাগেই। এমনকি কল ছেড়ে পা ধুতে গেলেও সেই পায়ের পানি পাশে রাখা বদনায় গিয়ে লাগে। এখন এভাবে তো চলাই যায় না। প্রত্যেকবার তো দব ধোয়া সম্ভব না। এটা ওয়াসওয়াসার কারনে হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবেই/আসলেই তো পানি গুলো ছিটে অন্য জায়গায় লাগছে। সেটা ধুতে গেলে অন্য জায়গায় গিয়ে লাগছে। এভাবে আমার পক্ষে চলাচল করা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

যেসব ওয়াসওয়াসা হঠাৎ সন্দেহের কারনে হয় সেইটা হয়তো বাদ দেওয়া যায়। যেমনঃ প্রস্রাবের ফোটা পড়লো কি পড়লো না।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে তো আমি নিজ চোখেই দেখছি যে যতই আস্তে ধুতে যাই, কিছু ছিটা অন্য জায়গায় লাগেই। এখন কি করবো কিছুই বুঝতেছি না। আমার মনে হয় বাসায় আমার আম্মু, আত্নীয়রা সবাই আমার প্রতি বিরক্ত। কারন ওয়াশরুমে গেলেই প্রায় ২০-৩০ মিনিট লাগে। মাঝে মাঝে ১ ঘন্টা+।

(৫) আমি জানি যে, ওজুর সময় কেউ যদি কোন অঙ্গ ৩ বারের বেশি ধুয়ে ফেলে তাহলে সে ৩ বার ধোয়ার সুন্নত পালন করতে পারলো না।

 তাহলে এরকম ৩ বারের বেশি ধুয়ে ফেললে সে কি আবার প্রথম থেকে ওজু শুরু করবে যাতে সুন্নত মোতাবেক ৩ বার করে ধুতে পারে?

নাকি কোন অঙ্গ ৩ বারের বেশি ধুয়ে ফেললে পরের অঙ্গ ধুয়ে ফেলবে?

(৬) কোন ছেলে যদি ভুলে/ইচ্ছাকৃত ভাবে টাকনুর নিচে প্যান্ট রেখে নামাজে দাড়িয়ে যায়, তখন তার করনীয় কি? তার সেই নামাজ কি হয়ে যাবে? নাকি টাকনুর নিচে প্যান্ট থাকার কাওরনে নামাজ ই হবে না?

1 Answer

+1 vote
by (677,920 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/25411/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

★শরীয়তের বিধান হলো নামাজে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
আর ওয়াজিবকে একাধিকবার আদায় করলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়।    

ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
নফল নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
ফরজ নামাজের প্রথম দুইরাকাতে বিনা ওযরে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
৩য়,৪র্থ রাকাতে হলে কোনো সমস্যা নেই।
,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
ফরজ নামাজের মধ্যে হলে তখন আবার সেই লাইন/ শব্দ পড়বেননা। সেটাকে পাত্তা না দিয়েই পড়ের লাইন পড়ে যাবেন।
কেননা এটি আপনার ওয়াসওয়াসা। 

(১.১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।

(০২) 
শুধু এক লাইন এভাবে একাধিকবার পড়লে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত উপরের লিংক দ্রষ্টব্য।

(০৩)
সেই লাইন আবার পড়তে হবেনা।

(০৪)
আপনি সরাসরি টিউবওয়েল থেকে বা ট্যাপ ছেড়ে হাত ধৌত করবেন,তাহলে আপনার সমস্যা টি কেটে যাবে।

অথবা বদনার মধ্যে পানি নিয়ে ভালোভাবে পবিত্র হয়ে বদনায় হাত দেয়ার স্থানটি টিউবওয়েল থেকে বা ট্যাপ হতে সরাসরি পানি নিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

(০৫)
কোন অঙ্গ ৩ বারের বেশি ধুয়ে ফেললে পরের অঙ্গ ধুয়ে ফেলবে।

(০৬)
নামাজ হয়ে যাবে।
তবে তার গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 1,160 views
...