আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আ'লাইকুম।
একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। এখানে হলে সিট পেতে মেয়েদের অনেক সময় লাগে তাই মেসে থাকতে হয়।

কিন্তু মেস মালিকরা মৌখিক একটা চুক্তি দেয় যে,  মেসে উঠলে ১বছরের নিচে ছাড়া যাবে না। কারো কোনো সমস্যা হলে যদি ৪/৬/৮ মাস পর মেস চেঞ্জ করতে চায় বা ছাড়তে চায় তাহলে তাকে বাকি মাসের ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। নয়ত থেকে যেতে হবে।
ইসলাম এ সম্পর্কে কি বলে? এটা কি জুলুম নয়? আমি থাকব না, অথচ শুধু শুধু ভাড়া কেন দিবো?
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রায় সকলেই এই মৌখিক চুক্তির কথা বলে স্টুডেন্ট উঠায়। কেউ মাঝে ছেড়ে দিলে অনেক ক্যাচাল করে, বাকি কয় মাসের ভাড়া দেয়ার জন্য জোর করেন। এখানকার কত স্টুডেন্ট আর্থিক সমস্যা নিয়ে পড়ে, আর্থিক সমস্যা না থাকলেও একবারে কয় মাসের ভাড়া দেয়া কি একপ্রকার জুলুম না? আবার তারা ভাড়াও যথেষ্ট বেশি নেয়। এরকম চুক্তি কি ইসলামে জায়েজ?
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কিছু বলে না। কারণ অধিকাংশ মেস মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক/প্রফেসর/ কর্মকর্তা।
এখন আমি মেস চেঞ্জ করতে চাচ্ছি কিন্তু উনি আমাকে দুই মাসের ভাড়া দিয়ে তারপর যেতে বলছেন।  আর নয়ত দুইমাস পর ছাড়তে বলছেন। কারণ আমি চলে গেলে আমার সিট টা ফাকা হয়ে থাকবে। আর দুইমাস পর জুনিয়র আসবে, তখন উনার সিট ফিলাপ হবে। আমি যদি উনাকে না জানিয়ে চুপচাপ ছেড়ে দেই, বর্তমানের টাকা পরিশোধ করে দিয়ে, আগামি দুই মাসের টাকা না দেই এতে কি আমি গুনাহগার হবো?

দয়া করে জানালে বড়ই উপকৃত হব। জাঝাকুমুল্লহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (680,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ইসলাম মানুষকে যেসব উন্নত চরিত্রের শিক্ষা দেয়, তন্মধ্যে অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি ও চুক্তির বাস্তবায়ন। যেকোনো ভালো কাজের অঙ্গীকার পূরণ করা ওয়াজিব।

 পবিত্র কোরআনে ওয়াদার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ হয়েছে, 
يا ايها الذين امنوا اوفوا بالعقود
'হে ইমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করবে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১)
الا الذين عاهدتم من المشركين.....

তবে যেসব মুশরিকের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, পরে তারা চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, আর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সেই চুক্তি তোমরা মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ দায়িত্বনিষ্ঠদের ভালোবাসেন। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
,
ওয়াদা (চুক্তি) পালনকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। যেমন তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ওয়াদা পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)। 

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত চুক্তি যদিও অনেকটা জুলুমের নামান্তর,তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনি সেই মেস এ উঠার সময় তাদের এই চুক্তি মেনেই উঠেছেন,তারা যেহেতু মেস এ উঠার সময় আপনার সাথেও উক্ত চুক্তি মৌখিক ভাবে করেছেন, সুতরাং চুক্তি ভঙ্গ,বা চুপচাপ মেস ছেড়ে দেয়া কোনোটাই জায়েজ হবেনা।
মালিককে ধোকা দেওয়া হবে।
অবশ্য মেস মালিককে বুঝিয়ে চুক্তি বাতিল করতে পারেন।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
edited by
আমি এই মেসে ২০২০ সাল থেকে আছি। করোনার সময় যখন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো তখন হাফ ভাড়াও দিতে হয়েছে। এটা ২২ সাল। এখনো কি এই চুক্তি আমার উপর বর্তাবে?
উনাকে জুলুম আর রিজিকের ব্যাপারে বুঝিয়ে বলার পরও মানছেন না। অথচ উনি তাবলিগের সাথী, চিল্লা দেন। এতদিন থাকার পরও উনি আমার জন্য কনসিডার করছেন না।
উনি না মানলে কি করা উচিত আমার? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...