আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (13 points)
আরশ কি এবং কুরসী কি?

'আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?আরশ কি এবং কুরসী কি?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

জবাব, https://ifatwa.info/29829/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আরশ, কুরসী, লাওহে মাহফুয, পানি, আসমান, ফেরেশতা, জিন ইত্যাদি প্রথম পর্যায়ের সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত। মানুষ কোন ক্রমেই উপরোক্ত সৃষ্টিসমূহের পূর্বে সৃষ্টি হয় নি। নিম্নে আরশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো:

আল্লাহ তায়াল কালামে পাকে এরশাদ করেন,

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۖ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ ۖ مَا مِن شَفِيعٍ إِلَّا مِن بَعْدِ إِذْنِهِ ۚ ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ

নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরি করেছেন আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের ওপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পারবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই ইবাদত করো। তোমরা কি কিছুই চিন্তা করো না’ (সূরা ইউনুস-৩)

আল্লাহ তায়াল অন্যত্র এরশাদ করেন,

وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ

আর তিনিই আসমানসমূহ আর যমীনকে ছ’দিনে সৃষ্টি করেছেন। ইতোপূর্বে তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। ( সূরা হুদ আয়াত- 7)

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে,

اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ۖ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ

 ‘আল্লাহ, যিনি ঊর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের ওপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন।’ (সুরা রাদ : ২)

তবে আল্লাহ তায়ালা কীভাবে আরশের ওপর অধিষ্ঠিত রয়েছেন সেটা অজ্ঞাত। মানুষের পক্ষে তা জানা সম্ভব নয়। ঈমানদারের উচিত কোরআনের আয়াতের প্রতি বিশ্বাস রাখা। আরশ বিদ্যমান রয়েছে ও আরশে আল্লাহ তায়ালা অধিষ্ঠিত আছেন এ বিশ্বাস রাখা।

আরশ সবচেয়ে বড় সৃষ্টি : মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় সৃষ্টি হলো আরশ। আরশের চেয়ে অতিকায় ও পরাবাস্তব কোনো বস্তু আল্লাহ সৃষ্টি করেননি। পবিত্র কোরআনে এসেছে,

فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

 ‘অতএব সর্বশীর্ষ মহিমাময় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের অধিপতি।’ (সুরা মুমিনুন : ১১৬)।

 এই আয়াতের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত মুফাসসির আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘কেননা তিনি আরশের অধিপতি, যা সমস্ত সৃষ্টির জন্য ছাদস্বরূপ। সমস্ত আসমান ও সমস্ত জমিন এবং উভয়ের ভেতরে যা রয়েছে ও উভয়ের মাঝখানে যা রয়েছে, সব কিছু আরশের নিচে অবস্থিত।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ২/৪০৫)

আরশের ব্যাপ্তি : আরশের বিশালতা ও ব্যাপ্তি সাত আসমান, সাত জমিন ও কুরসি থেকেও বড়। আল্লাহর আরশ সাত আসমান সাত জমিন ও কুরসি সবগুলোকেই বেষ্টন করে আছে। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আসমান ও জমিনের দূরত্ব পাঁচশ বছর, প্রত্যেক আসমানের দূরত্ব পাঁচশ বছর, সপ্তম আসমান ও কুরসির দূরত্ব পাঁচশ বছর, কুরসি ও পানির দূরত্ব পাঁচশ বছর, আরশ পানির ওপর, আল্লাহ আরশের ওপর। আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো আমল গোপন নয়। (বায়হাকি : ৪০১ পৃষ্ঠা)

ফেরেশতাগণ আরশ বহন করেন : নিশ্চয় আল্লাহর আরশ সবচেয়ে বড় সৃষ্টি।এই বিশাল আরশ কীভাবে স্থির আছে? কারা বহন করছেন আরশ? এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা কোরআন মাজিদে ইরশাদ করেছেন,

 ‘যারা আরশ বহন করে এবং যারা তার চারপাশে আছে তাদের পালনকর্তার সপ্রশংসা পবিত্রতা বর্ণনা করে, তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে হে আমাদের পালনকর্তা! আপনার রহমত ও জ্ঞান সব কিছুতে পরিব্যাপ্ত। অতএব যারা তওবা করে ও আপনার পথে চলে তাদের ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন।’ (সুরা গাফির : ৭)।

কেয়ামতের দিন আরশ বিশালদেহী আটজন ফেরেশতার কাঁধের ওপর থাকবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্ত দেশে থাকবে ও আটজন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের ঊর্ধ্বে বহন করবে।’ (সুরা হাক্কাহ : ১৭)। আরশ বহনকারী ফেরেশতাদের বিশালতা সম্পর্কে হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর যেসব ফেরেশতা আরশ বহন করে আছে তাদের একজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তার কানের লতি থেকে কাঁধ পর্যন্ত স্থানের দূরত্ব হলো সাতশ বছরের দূরত্বের সমান।’ (আবু দাউদ : ৪৭২৭)। তা ছাড়া কিছু ফেরেশতা আরশের চতুর্দিকে ঘুরে ঘুরে দিনরাত আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনি ফেরেশতাগণকে দেখবেন, তারা আরশের চারপাশ ঘিরে তাদের পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষণা করছে। তাদের সবার মাঝে ন্যায় বিচার করা হবে। বলা হবে সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর।’ (সুরা জুমার : ৭৫)

আরশের রয়েছে খুঁটি : আরশের অনেক খুঁটি রয়েছে। যেভাবে সিংহাসনের খুঁটি থাকে। এ সম্পর্কে হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেহুঁশ হবে। অতঃপর সর্বপ্রথম আমারই হুঁশ ফিরবে। তখন আমি মুসাকে (আ.) দেখতে পাব যে, তিনি আরশের খুঁটিসমূহের মধ্যে একটি খুঁটি ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, আমার আগেই কি তাঁর হুঁশ এলো, নাকি তুর পাহাড়ে বেহুঁশ হওয়ার প্রতিদান তাকে দেওয়া হলো।’ (বুখারি : ৩৩৯৮

জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমাকে আরশ ধারণকারী ফেরেশতাদের সম্পর্কে বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এমন যে তাঁদের কানের লতি থেকে গর্দানের শেষ সীমানার মধ্যবর্তী স্থানে দ্রুতগামী ঘোড়ার ৭০০ বছরের দূরত্ব রয়েছে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭২৭)

হাদিসবিদ ইবনে হাজর আসকালানি (রহ.) লিখেছেন, ‘হাদিসটির সনদের সূত্র সহিহ। ’ (ফাতহুল বারি : ৮/৬৬৫)

অন্যদিকে আল্লাহর কুরসি সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘...তাঁর কুরসি আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত...।  (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৫)

কুরসি আল্লাহর সৃষ্টির এক অনন্য নিদর্শন৷ কুরসি অর্থ চেয়ার,আসন, সিংহাসন কুরসি আল্লাহর আরশে আযিমের উপর অবস্থিত৷ আল্লাহর কুরসি যে কতবড় তা তিনি নিজেই বর্ণনা দিয়েছেন- তাঁর কুরসি আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত; এদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না৷ (সুরা বাকারা,২৫৫)

কুরসি শব্দটি কুরানে ২ বার এসেছে৷ উক্ত আয়াতে বোঝা যায় যে, সাত আসমান সাত যমিন কুরসিতে জায়গা হয়৷ হযরত হাসান বসরী রহ বলেন, আরশ থেকে কুরসি অনেক উপরে৷ আরশের উপরে আলো, অন্ধকার, পানি ও বরফের চারটি পর্দা রয়েছে৷ এক একটি পর্দার থেকে অপর পর্দা পাঁচশত বছরের পথ৷ কুরসির তুলনায় সাত আসমান সাত জমিন বিশাল মরুভুমিতে একটি সর্ষে দানার মত৷ আবার আরশের তুলনায় কুরসি একটি সর্ষে দানার মত৷ আরশ বহনকারী ফেরেশতা আট জন৷ আর কুরসি বহনকারী ফেরেশতা চার জন৷ (কাসফুল আসরার-৩/৬৯৪, ৮/৪৫৩)

আল্লাহর আরশ, কুরসি ও লাওহে কলম সবই তাঁর কুদরতের নিশানা৷ যে বিস্ময়কর কুদরতসমূহ আমাদের প্রিয়নবি সা. মিরাজ সফরে সশরীরে জাগ্রত অবস্তায় বাস্তবেই দেখেছেন৷ (আংশিক কপি)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...