আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
275 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
closed by
এক ভাইয়ের প্রশ্নসমূহ:

আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ, আমি সদ্য বিবাহিত আর স্ত্রীকে নিয়ে অনেক খুশি আলহামদুলিল্লাহ। তবে কিছু সংশয় নিয়ে আপনাদের কাছে জিজ্ঞাসা গুলো, একটু বিশদভাবে বুঝিয়ে বলে বাধিত করবেন উস্তাদ ইন শা আল্লাহ

১) স্ত্রীকে মোহাব্বতের প্রকাশ হিসেবে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যেমন মুখ মণ্ডল, হাত, পা, স্তন, ঘাড়, পেট, পিঠ লেহন, প্রেশন করা বৈধ কিনা, নিতম্ব, স্তন, হাত পায়ের আঙুলে চুম্বন করা, কোন মিষ্টান্ন তরল নিয়ে তা এখানে লাগিয়ে লেহন করা, কাপড়ের উপর দিয়েই নিতম্বে আমার যৌনাংগ ঘর্ষন, মাঝে মধ্যে সে ইতস্তত করলে তবে মৌনতা অবলম্বন করলে এগুলো করলে আমার গুনাহ হবে কিনা, বিশেষ করে হায়েয অবস্থায় এমনটা না করে থাকতে আমারই সমস্যা হয় যেহেতু তখন সহবাস হারাম।

২) স্ত্রীর হাত, স্তন,পেট, পিঠ, পায়ে যদি আমি আমার পছন্দের মেহেদী ডিজাইন করে দিলে কি আমার নারীদের অনুসরণ হবে? ও এই কাজ ততটা পারে না তাই আমি যদি করে দেই তাতে এই কাজ কি নপুংসকের হবে কিনা?

৩) স্ত্রীকে দেখা, কথা বার্তা বলার জন্য প্রতিবেশীদের (মহিলা) অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করে, ওর রান্না অনেক ভালো তাই তারাও আসতে চায় ওর কাছে। এটা আমার ব্যাক্তিগত ভাবে মোটেও পছন্দ না উস্তাদ। আমি চাই আমার স্ত্রী একমাত্র আমার কাছে থাকবে আর বাইরের কাউকে আমি allow করব না ওর সাথে বেশি খাতির জমানো, কারণ এতে করে আমি দেখেছি অনেক পরিবারে সমস্যা তৈরি হয়, বিভিন্ন ভুল ভাল বুঝিয়ে স্ত্রীকে স্বামী বিদ্বেষী করে তোলে। ওকে ওর নিজের বাড়ির মানুষের সাথেও বেশি মিশতে দেই না ওই এক কারণেই, সবসময় আমি আগলে রাখি। ও বুঝতে পারে ব্যাপারগুলো তবে বলে যে মানুষরা আসলে আমি কি করতে পারি, আমার তখন মেজাজ খারাপ হয়ে রেগে ধমকে বলি যে বাইরের মানুষ আগে না আমি আগে।
আমি চাই উস্তাদ ওর সবকিছু আমাকে আর আমাদের সংসারকে ঘিরে থাকবে, যেমনটা উপরে বললাম। আমার কথায়, চাওয়া তে কোনো ভুল হচ্ছে কি?

৪) বাসায় পাতলা ড্রেস যাতে পেট, পিঠ দৃশ্যমান হয় এমন পরতে পারবে কিনা, এরকম ড্রেস পরে নামাজের বিধান কি উস্তাদ?

৫) আমি অনেক সবর করে উস্তাদ বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করেছি আল্লাহ এর অশেষ মেহেরবানিতে অবশেষে, তাই আমার স্ত্রীর প্রতি সব দিক দিয়ে আমার অনেক দুর্বলতা, উপরে হয়তো তা অনেকটা প্রকাশ পেয়েছে, এর সাথে আমরা সহবাসের সময়ে মাঝে মধ্যে আমি অনেক তীব্রভাবে কাজটি করি ওর সাথে, মাঝে মধ্যে ও অনুরোধ করে পথিমধ্যেই যাতে আমি তীব্রতা কমাই, কিন্তু আমি কমাতে পারি না। ওর শারীরিক কোন সমস্যা হয় না শুধু সাময়িক ওই সময়েই নিতে সমস্যা হয় একটু। পরবর্তীতে ওর কাছে বলি মোহাব্বতের সাথে যে তোমায় কষ্ট দিলাম কিনা অনেক, কিন্তু ও বলে যে থাক ঠিকাছে।

আমার কি উস্তাদ জুলুম করা হয় কিনা ওর উপর, ওকে আমি সন্তুষ্ট করে দেই এমনটা হলে পরে আর ওরও কোন দুঃখ থাকে না বলে আমার উপর।
closed

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(ভূমিকা)

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ ۖ وَقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّكُم مُّلَاقُوهُ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। (সূরা বাকারা-২২৩)

" ملعون من أتى امرأة في دبرها "
যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর পায়ূপথে সঙ্গম করলো,সে অভিশপ্ত
(মসনদে আহমদ-২/৪৭৯,সহিহুল জামে ৫৮৬৫)

   

: "  من أتى  حائضا أو امرأة في دبرها  أو كاهنا فقد كفر بما أنزل على محمد "
যে ব্যক্তি হায়েযাগ্রস্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস করলো বা স্ত্রীর পায়ূপথে সঙ্গম করলো কিংবা গণকের নিকট ভবিষ্যত জানতে গেল, সে মুহাম্মদ সাঃ এর উপর আগত অহী কে অস্বীকার করলো।(সুনানু তিরমিযি-১/২৪৩,সহিহুল জামে- ৫৯১৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের সমস্ত অঙ্গ দ্বারা ফায়দা নিতে পারবে।উপভোগ করতে পারবে।কিন্তু একে অপরের লজ্জাস্থানকে মুখে নেওয়া বেহায়াপনা ও চুড়ান্ত পর্যায়ের অশ্লীলতা, বিধায় ফুকাহায়ে কেরাম মাকরুহ বলেছেন।যদি স্ত্রী নিজের যৌন অনুভূতিকে মুখে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করে বা যৌন আখাংকায় বেহুশ হয়ে স্বামীর গোপনাঙ্গকে মুখে নিয়ে নেয়,এক দুইবার হলে মাফ।ঠিক তেমনি স্বামী যৌন আখাংকায় বেহুশ হয়ে যদি স্ত্রীর গোপনাঙ্গকে মুখে নিয়ে নেয়,এক দুই বার হলে মাফ।নিয়মিত অভ্যাস বানিয়ে ফেলা মাকরুহ।বীর্যকে মুখে প্রবেশ করানো যাবে না।এবং গিলে ফেলা মাকরুহে তাহরীমি।(ফাতাওয়ায়য়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৮/৬২৪,জামেউল ফাতাওয়া - ৩/২৩৪,ফাতাওয়ায়ে রাহিমিয়্যাহ-৬/৩৭০)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/6009

আপনার প্রশ্নের জবাবঃ-
(১)
স্ত্রীকে মোহাব্বতের প্রকাশ হিসেবে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যেমন মুখ মণ্ডল, হাত, পা, স্তন, ঘাড়, পেট, পিঠ লেহন, প্রেশন করা, নিতম্ব, স্তন, হাত পায়ের আঙুলে চুম্বন করা, কোন মিষ্টান্ন তরল নিয়ে তা এখানে লাগিয়ে লেহন করা, কাপড়ের উপর দিয়েই নিতম্বে যৌনাংগ ঘর্ষন করা এসবই জায়েয। অর্থাৎ স্ত্রীর পায়ূপথে সহবাস করা,বীর্য বা দুধকে গিলে ফেলা ব্যতিত সবকিছুই জায়েয।

(২)
স্ত্রীর হাতে পায়ে মেহেদি দিয়ে দিতে পারবেন।এতেকরে কোনো সমস্যা হবে না।

(৩)
বাইরের লোকজনকে বারণ করার অধিকার আপনার থাকবে।তবে স্ত্রীর মাহরাম ও মহিলা আত্মীয় স্বজনকে বারণ করতে পারবেন না। হ্যা, ফিতনার বা সংসারে ফাটল ধরার আশঙ্কা থাকলে তখন আপনি স্ত্রীর আত্মীয় স্বজনকেও বাধা দিতে পারবেন।

(৪)
كَمَا يَجِبُ سَتْرُ الْعَوْرَةِ عَنْ أَعْيُنِ النَّاسِ يَجِبُ كَذَلِكَ سَتْرُهَا وَلَوْ كَانَ الإِْنْسَانُ فِي خَلْوَةٍ، أَيْ فِي مَكَانٍ خَالٍ مِنَ النَّاسِ. وَالْقَوْل بِالْوُجُوبِ هُوَ مَذْهَبُ الْحَنَفِيَّةِ عَلَى الصَّحِيحِ،
যেভাবে লোকসম্মুখে সতরকে ঢেকে রাখা ওয়াজিব,ঠিকতেমনি একাকি অবস্থায়ও সতরকে ঢেকে রাখা ওয়াজিব।বিশুদ্ধমতানুযায়ী এটাই হানাফি ফিকহের সিদ্ধান্ত। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৪/১৭৬)

وَقَدْ أَجْمَعَ الْفُقَهَاءُ عَلَى فَسَادِ صَلاَةِ مَنْ تَرَكَ ثَوْبَهُ وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى الاِسْتِتَارِ بِهِ وَصَلَّى عُرْيَانًا. وَيُشْتَرَطُ فِي السَّاتِرِ أَنَّهُ يَمْنَعُ إِدْرَاكَ لَوْنِ الْبَشَرَةِ.
সমস্ত উলামায়ে কেরাম এ কথা উপর একমত যে, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও সতরকে ঢাকবে না,বরং সে ব্যক্তি উলঙ্গ হয়ে নামায পড়বে, তার নামাযই হবে না।
সতরের কাপড়ের জন্য শর্ত হল যে, শরীরের রংকে প্রকাশ হতে বাধা প্রদাণ করবে। (আল মমাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৪/১৭৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামীকে সন্তুষ্ট করার জন্য স্ত্রী বাসায় পাতলা কাপড় পরিধান করতে পারবে যদি বাসায় অন্য কারো আনাগোনা না থাকে, নতুবা স্ত্রী উক্ত পাতলা পোষাক পরিধান করতে পারবে না। এমন পাতলা পোষাক যা পরিধাণ করলে গায়ের রং প্রকাশ হয়ে যায়, তা দ্বারা নামায হবে না।

(৫)
আপনার স্ত্রীর কোনো অভিযোগ না থাকলে, তাতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...