আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (24 points)
https://ifatwa.info/54145/ নং ফতোয়ায় আপনি যেই উত্তর দিছেন সেই উত্তর পাওয়ার আগেই আমি আব্বুর সাথে কথা বলছি। তাই https://ifatwa.info/54145/ নং ফতোয়ার আলোকে কিছু প্রশ্ন।

১. শায়েখ! আমি তো আপনার উত্তর পাওয়ার আগে আব্বু কে বলছি যে আপনি তো আমাকে টাকা দিয়েছিলেন , তা আপনার থেকে আমি ধার হিসেবে নিলাম (মানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এ যেই টাকা দিয়েছিল), পরে শোধ করে দিবো ইনশাআল্লাহ।(আমার মনের নিয়ত ছিল আব্বু কে আমি জানাবো না যে আমি ৪৫০০০ টাকা খরচ করে ফেলেছি,তাই এইভাবে বলছি)। তারপর আব্বু বলছে আচ্ছা ঠিক আছে। এই কথা বলার পর আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য দের সাথে কথা বলছি এবং কথা শেষ করার পর আব্বুর কাছে আবার ও দিতে বলছি।তারপর আমি আব্বু কে এই বিষয়ে আবার বলছি যে অ্যাকাউন্ট এর সম্পূর্ণ টাকা আমি ধার হিসেবে নিলাম। আব্বু বলছে ঠিক আছে। আমি তো আব্বুর কাছে একবার বলছি যে আপনি আমাকে যেই টাকা দিয়েছেন তা আমি আপনার থেকে ধার হিসেবে নিলাম , এইটা ঠিক আছে (অবশ্য আমার মনের নিয়ত ছিল আব্বু কে স্পষ্ট টাকার পরিমাণ এর কথা না বলা, কারণ আমি আব্বু কে না জানিয়ে অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি) কিন্তু পরবর্তীতে আমি বলছি যে অ্যাকাউন্ট এর সম্পূর্ণ টাকা ধার হিসেবে নিলাম,এটাই তো সমস্যা।কারণ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এ আছে ৪৫০০০ হাজার টাকা কিন্তু আব্বু তো জানে ৯০০০০ টাকা আছে। আপনি তো বলছেন ধার নেয়ার ক্ষেত্রে এভাবে অস্পষ্টতা রাখবেননা, কিন্তু আমি প্রথমে আমাকে আব্বু যেই টাকা দিছে তা ধার হিসেবে নেয়ার কথা বললেও আমি পরে আবার বলছি অ্যাকাউন্ট এর সম্পূর্ণ টাকা ধার হিসেবে নিলাম। আপনার কথা মতো প্রথম বার আমার ধার নেয়া ঠিক থাকলেও , ২য় বারে আমি যেই কথা বলছি সেই কথায় তো অস্পষ্টতা থেকে গেলো কারণ আব্বু জানে না আমি ৪৫০০০ টাকা খরচ করেছি। এখন যদি আমি এই টাকা দিয়ে সফটওয়্যার এর সাবস্ক্রিপশন কিনে সেই সফটওয়্যার দিয়ে ডিজাইন করি ও এই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপরে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বসাই এবং এই টাকা দিয়ে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেই ও সেই বিজ্ঞাপন এর মাধ্যেমে কাস্টমার এর কাছে এই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপরে বসিয়ে প্রিন্ট করে বিক্রি করে ইনকাম করি, তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? (বি:দ্রঃ দুইবার আব্বু কে বলছি ধার নেয়ার কথা, আরেকবার কিভাবে বলবো, আর আরেকবার যদি আব্বু কে বলি এই কথা তাহলে সন্দেহ করতে পারে, অ্যাকাউন্ট এর টাকা চেক করতে পারে, তখন তো আরো সমস্যা হবে।)

২. আমি যখন আব্বু কে বলছি যে আপনি আমাকে যেই টাকা দিয়েছিলেন তা আমি ধার হিসেবে নিলাম, তখন আব্বু বলছে ধার হিসেবে নিলি ঠিক আছে কিন্তু কি করবি এই টাকা দিয়ে , তখন আমি বলছি আমার ইন্টার পরীক্ষা পযন্ত এই টাকা দিয়ে চলবো তারপর পরীক্ষার পর কিছু একটা করার চেষ্টা করবো, তারপর আমি এই টাকা শোধ করে দিবো ইনশাআল্লাহ। এখন যদি আমি এই টাকা দিয়ে সফটওয়্যার এর সাবস্ক্রিপশন কিনে সেই সফটওয়্যার দিয়ে ডিজাইন করি ও এই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপরে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বসাই এবং এই টাকা দিয়ে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেই ও সেই বিজ্ঞাপন এর মাধ্যেমে কাস্টমার এর কাছে এই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপরে বসিয়ে প্রিন্ট করে বিক্রি করে ইনকাম করি, তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? ( আব্বু কে তো বলি নাই আমি এই টাকা দিয়ে ব্যবসা করবো)

৩. আমি আব্বু কে বলছি আপনি আমাকে মোবাইল, কম্পিউটার এবং ইনকাম করা যায় এমন যা কিছু আমাকে কিনে দিছেন এইগুলা সব কিছু ধার আমি হিসেবে নিলাম, আমি পরবর্তীতে এইগুলো ফেরত দিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ। এখন কি আমাকে এই মোবাইল কম্পিউটার এই ফেরত দিয়ে হবে নাকি নতুন মোবাইল কম্পিউটার কিনে দিলে হবে?
আর আব্বু যদি বলে এইগুলা লাগবে না বা আমি আব্বুর থেকে বলে দাবি ছাড়াই, তাহলে কি আমি দায়মুক্ত? (৩.২) কারণ আব্বুর তো কম্পিউটার লাগবে না, আবার ছোট ছোট অনেক কিছুই তো আব্বু আমাকে দিছে তা আমার মনে ও নাই।
আব্বু কে যদি এইগুলার পরিবর্তে আমি টাকা দেই এবং আব্বু রাজি হয় তাহলে কি আমি দায়মুক্ত(৩.৩)

৪. আপনি বলেছেন আমি যতটাকা আব্বুর থেকে নিয়ে খাবো সেই পরিমাণ টাকা পরবর্তীতে আনুমানিক একটি হিসেব করে আমাকে গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে। কিন্তু আমি তো আব্বুর থেকে টাকা ধার নিছি। এখন তো আমার কাছে ৪৫০০০ টাকা আছে, এখন কি এই ৪৫০০০ টাকা থেকেই আমার জীবনধারণ করা লাগবে নাকি এই টাকা দিয়ে আমি ব্যবসা করবো এবং আব্বুর থেকে টাকা নিয়ে জীবনধারণ করলেই হবে?

৫. আব্বু আমাকে এই মাসে খাওয়ায় জন্য এবং পকেট খরচ এর জন্য টাকা দিয়েছে। কিন্তু আমার কাছে তো ৪৫০০০ টাকা আছে। এখন যদি আমার কাছে ৪৫০০০ টাকা থাকা সত্ত্বেও আব্বুর টাকা দিয়ে এই মাস জীবন ধারণ করি এবং ইনকাম করার পর আব্বু কে আসতে আসতে শোধ করে দেই, তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে ইসলামিক দিষ্টিতে?
৬. এখন যদি আমার কাছে ৪৫০০০ টাকা থাকা সত্ত্বেও আব্বুর টাকা দিয়ে এই মাস জীবন ধারণ করি এবং ধার নেয়া টাকা দিয়ে ব্যবসা করে ইনকাম করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হয়ে যাবে? (বি:দ্রঃ ইনকাম করার পর আব্বু কে আসতে আসতে শোধ করে দিবো ইনশাআল্লাহ)

1 Answer

0 votes
by (687,440 points)
edited by
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/25087/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হারাম টাকায় ব্যবসা করাও নাজায়েজ। 
,
তবে কঠিন প্রয়োজন বশত এমনটি হলে উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ ব্যবহারের অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।   তারা বলেছেন যে এটি সেই ব্যবসায় তার পরিশ্রমের বিনিময়। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ قَالَ : ابْتَعْتُ غُلَامًا فَاسْتَغْلَلْتُه ثُمَّ ظَهَرْتُ مِنْهُ عَلٰى عَيْبٍ فَخَاصَمْتُ فِيهِ إِلٰى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَقَضٰى لِىْ بِرَدِّه وَقَضٰى عَلَىَّ بِرَدِّ غَلَّتِه فَأَتَيْتُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ : أَرُوْحُ إِلَيْهِ الْعَشِيَّةَ فَأُخْبِرُه أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْنِىْ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَضٰى فِىْ مِثْلِ هٰذَا : أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ فَرَاحَ إِلَيْهِ عُرْوَةُ فَقَضٰى لِىْ أَنْ اٰخُذَ الْخَرَاجَ مِنَ الَّذِىْ قَضٰى بِه عَلَىِّ لَه

মাখলাদ ইবনু খুফাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দাস কিনেছিলাম এবং তার মাধ্যমে কিছু উপার্জনও করিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তার মধ্যে একটি দোষ সম্পর্কে অবগত হলাম এবং শাসনকর্তা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে আমি তার বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তিনি বিচার করলেন যে, আমি তাকে ফেরত দিতে পারবো, তবে অবশ্যই তার দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই আমাকে ফেরত দিতে হবে। আমি ‘উরওয়াহ্ (রহঃ)-এর নিকট এ রায় জানালাম। তিনি বললেন, আমি সন্ধ্যাকালেই শাসনকর্তার নিকট যাবো এবং তাঁকে অবহিত করবো। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় ঘটনায় রায় দিয়েছেন যে, উপার্জিত আয় তার তত্ত্বাবধান ব্যয় বলে সাব্যস্ত হবে। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) সন্ধ্যাকালেই ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বিচার করলেন যে, উক্ত উপার্জিত আয় তিনি পূর্বে (প্রথমে) যাকে দেয়ার জন্য আদেশ করেছিলেন তার কাছ থেকে আমি যেন তা ফেরত নেই।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ২৮৭৯)

উক্ত সম্পদ দ্বারা ব্যবসা করে যে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছে বা হবে,তাহা গ্রহন করা জায়েজ নেই,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত।

★তবে ইমাম শাফেয়ী ও মালেক রহঃ এর মতে সে ব্যাক্তি লভ্যাংশ নিজের পরিশ্রমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে  (নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৫১)। 
তবে তাদের মতেও এহেন ব্যবসার লাভ পরিত্যাগ করাই অধিকতর নিরাপদ ও তাক্বওয়াপূর্ণ।


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনার ইনকাম হালাল হবে।
,
প্রশ্নের বিবরণ মতে ৯০ হাজার টাকা পুরাটাই ধার হিসেবে গন্য হবে।
,
অর্থাৎ এ পুরো টাকাই আপনার বাবাকে পরবর্তীতে শোধ করতে হবে।

(০২)
এক্ষেত্রেও আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।
আপন এভাবে ব্যবসা করতে পারবেন।

(০৩)
এই মোবাইল কম্পিউটার ফেরত দিলে হবে।

নতুন মোবাইল কম্পিউটার কিনে দিতে হবেনা।

আর আপনার আব্বু যদি বলে এইগুলা লাগবে না বা আপনি আপনার আব্বুর থেকে বলে দাবি ছাড়ান, তাহলে আপনি দায়মুক্ত হবেন।

(০৪)
এই টাকা দিয়ে আপনি প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ব্যবসা করতে পারবেন, এবং আপনার আব্বু থেকে টাকা নিয়ে জীবনধারণ করতে পারবেন।
জীবনধারনের জন্য নেয়া টাকা যদি এমনিতেই সন্তান হিসেব নেন,তাহলে তাহা পরবর্তীতে ফকির মিসকিনকে দান করে দিবেন,আর যদি জীবনধারনের জন্য নেয়া টাকা ধার হিসেবে নেন,তাহলে সেটা আপনার বাবাকে পরবর্তীতে শোধ করে দিবেন।

(০৫)
তা,কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৬)
না,আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...