আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
89 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (43 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ।
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ।
আমার বিয়েতে পাওয়া ২.৭৯ ভরি স্বর্ণ আছে, যার ১ বছর ২ মাস হয়ে গিয়েছে, সাথে ব্যাংকে  বেতন আসে প্রতিমাসে  ২০,০০০ টাকা।

এবং আমার জমানো টাকা আছে ৪০ হাজার ( এটার ১ বছর পার হয়নি)
এগুলো আমার সম্পদ।
আমার স্বামী, ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে ৫. ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে, যার মধ্যে ১৬ হাজার শোধ করা হয়েছে,  তার কোনো চাকুরী নেই,  বরং ব্যবসা থেকে যে টাকা আসে, তা দিয়ে প্লাস আমার বেতন দিয়ে সংসার চলে ( উল্লেখ্য আমার স্বামীর কোনো জমানো টাকা নেই)
এমন অবস্থায়,
ক) আমার উপর যাকাত ফরজ কি? ফরজ হলে মোট টাকা কত ধরবো?  যেহেতু  জমানো টাকা ৪০ হাজার যে, এটার এখন ও ১ বছর পার হয়নি।
জাযাকাল্লাহু খইরন উস্তাজ।

1 Answer

0 votes
by (63,040 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

একজন মানুষ দৈনিক যত টাকাই উপার্জন করুক না কেন বৎসর শেষে যদি যাকাতের নিসাব পরিমান সম্পদ তার নিকট না থাকে তাহলে তার উপর জাকাত ফরয হবে না।

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا زَكَاةَ فِي مَالٍ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ»

হযরত আয়েশা রা থেকে বর্ণিতঃনবী কারীম সাঃ বলেনঃ-সম্পত্তিতে কোনো যাকাত নেই যতক্ষণ না এক বৎসর পূর্ণ হবে। (সুনানে ইবনে মাজা-১৭৯২)

 

عَنْ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ اسْتَفَادَ مَالًا فَلَا زَكَاةَ عَلَيْهِ، حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الحَوْلُ عِنْدَ رَبِّهِ»

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাঃ বলেনঃ- বৎসরের মধ্যখানে অর্জিত সম্পদে জাকাত আসবেনা যতক্ষণ না মালিকের পূর্ণ সম্পত্তির একবৎসর পূর্ণ হবে। (জামে তিরমিযি-৬৩১)

 

https://www.ifatwa.info/13075   নং ফাতওয়ায় আমরা বলেছি যে,

যাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিধানের একটি। নেসাব পরিমাণ মালের মালিকের উপর যাকাত প্রদান করা ফরয।

 

যাকাতের নেসাব-

সোনা, রূপা,টাকা,এবং ব্যবসায়িক মালে যাকাত আসে, যদি তা নেসাব পরিমাণ হয়।

স্বর্ণের নেসাবঃ ৭. ৫ভড়ি।

রূপার নেসাবঃ ৫২. ৫ভড়ি।

 

এখানে একটি জিনিষ লক্ষণীয় যে,কারো কাছে শুধুমাত্র স্বর্ণ বা শুধুমাত্র রূপা থাকলে সেটার নেসাব পূর্ণ হলেই যাকাত আসবে। অন্যথায় যাকাত আসবে না। তবে হ্যা যদি কারো নিকট স্বর্ণ এবং রূপা  এভাবে থাকে যে, কোনো একটির নেসাব পূর্ণ হওয়ার জন্য সামান্য বাকী। তাহলে এক্ষেত্রে যেটা বেশী সেটারই নেসাব পূর্ণ করা হবে। যেমন কারো কাছে স্বর্ণ ৭. ৫ ভড়ির চেয়ে সামান্য কম, তাহলে এমতাবস্থায় রূপা দ্বারা স্বর্ণের নেসাবকে পূর্ণ করা হবে।

 

টাকা এবং মালের নেসাবঃ

টাকা এবং মালকে রূপার সাথে সংযুক্ত করে রূপার নেসাব হিসেবেই ধরা হবে। তথা কারো কাছে ৫২. ৫ ভড়ি সমমূল্যের টাকা বা ব্যবসায়িক পণ্য থাকলে তার উপর যাকাত আসবে। এক্ষেত্রে স্বর্ণকে মানদন্ড হিসেবে ধরা হবে না। সোনা রূপার বিক্রয়মূল্যর উপরই যাকাত আসে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/121      

 

মালে নামীতে যাকাত আসে।

মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে, সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১) সোনা (২) রুপা (৩) ব্যবসার মাল (৪) গবাদি পশু

এগুলোকে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে, সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল। বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।

মালে গায়রে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়ে না।উপরোক্ত মাল ব্যতীত সবগুলোই অবাড়ন্ত। যেমন-স্থাবর সম্পত্তি এবং নিজ প্রয়োজনে ক্ররিদকৃত গাড়ী আসবাবপত্র ইত্যাদি। বিস্তারিত দেখতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1434 

 

যাকাতের খাত:

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন-

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫) এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবাহ-৬০) বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/699  

 

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا زَكَاةَ فِي مَالٍ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ»

হযরত আয়েশা রা থেকে বর্ণিতঃনবী কারীম সাঃ বলেনঃ-সম্পত্তিতে কোনো যাকাত নেই যতক্ষণ না এক বৎসর পূর্ণ হবে। (সুনানে ইবনে মাজা-১৭৯২) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/29371  

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার মালিকানায় জমানো ৪০ হাজার টাকা ও ২.৭৯ ভরি স্বর্ণ আছে। এই দু্ইটা হিসাব করলে আপনার নেসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ হয়ে যায়। কারণ, কারোর নিকট যদি স্বর্ণ এবং রূপা বা স্বর্ণ এবং টাকা (জমানো টাকা থাকে যা রূপার নেসাবের কাছা কাছি হয়) থাকে যে, কোনো একটির নেসাব পূর্ণ হওয়ার জন্য সামান্য বাকী। তাহলে এক্ষেত্রে যেটা বেশী সেটারই নেসাব পূর্ণ করা হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রূপার নেসাব ধরা হলে আপনার নেসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ হয়ে যায়। কারণ, ৪০ হাজার টাকা + ২.৭৯ ভরি স্বর্ণ (যার বাজার মূল্য ২০৯২৫০ টাকার মত) = ২৪৯২৫০ টাকা।

 

তবে যেহেতু যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাবের উপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত শর্ত। আর আপনার সেটা হয়নি। কারণ, আপনার জমানোর টাকার সময়কাল এখনো এক বছর অতিবাহিত হয়নি। তাই যখন এক বছর অতিবাহিত হবে তখন হিসেব করে (৪০ হাজার টাকা + ২.৭৯ ভরি স্বর্ণের বাজার মূল্য + এছাড়াও হাতে দৈনন্দিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো টাকা থাকলে) শতকরা ২.৫% যাকাত দিয়ে দিবেন। 

 

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্বামীর উপর যাকাত ফরজ কি না? তার উত্তর জানতে হলে আগে আপনার স্বামীর যাকাত যোগ্য সম্পদের হিসাব দিতে হবে অর্থাৎ তার  বর্তমানে কত টাকার ব্যবসায়ীক পণ্য আছে? মানুষের কাছে বাকী কেমন আছে? ইত্যাদি 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...