আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (14 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
শায়েখ

বেশ কয়েকমাস যাবত আমি খুবই হতাশাগ্রস্ত শায়েখ। তালাকের ওয়াসওয়াসা আমাকে এতটাই কাবু করে ফেলেছে যে, সবসময় তালাক, তালাক বাক্যটি মনের ভিতর ঘুরতে থাকে। কোন সময় উচ্চারণ করে ফেলছি কিনা সেটা বুঝতে পারছি না। মনের ভিতর একটা ভয় কাজ করে সবসময়। কোন কিছুতেই শান্তি পায় না। কিছুদিন ভাল থাকলেও আবার সমস্যা ফেস করি। ওয়াইফ এর সাথে কথা স্বাভাবিক কথা বলতে গেলেও মনের ভিতর তালাক বাক্য চলে আসে। তালাক দিতে চায় না তবুও মনে চলে আসছে তালাক দিয়ে দেবো। অনেক সময় মনে মনে তালাক বললেও উচ্চারণ করে ফেলেছি ভেবে কষ্ট পেতে থাকি। আবার কিছু কিছু সময় তালাক শব্দ উচ্চারণ করে ফেলি সম্ভবত। আমি এই মানসিক কষ্ট আর নিতে পারছি না হুজুর। এসব ভাবলে বুকের ভিতর জ্বালা করে ও বুক ধড়ফড় করে। কোন কিছুতেই ভাল লাগে না আর। মানসিক ডাক্তার এর পরামর্শ মত ঔষধ খেলাম কিন্তুু শুধু বুক ধড়ফড় কম হলেও মনের এসব চিন্তা ভাবনা আসা ঠিক হয়নি।খাওয়ার সময় তালাক,তালাক বেশি মনে পড়ে। খেতে খেতে যখন মুখ নড়ছে তখন মনে হচ্ছে তালাক উচ্চারন করে ফেলছি। কিন্তুু আমি নিজের কানে স্পষ্টভাবে শুনতে পারছি না। এবং আমার বিশ্বাস যদি কেউ আমার পাশে বসে থাকে সে ও শুনতে পারবে না। আমি বুঝতে পারছি যে,আমি যখন মনে মনে কথা বলি তখন আমার কাছে এতটায় রিয়েল মনে হয় যেন আমি উচ্চারন করলাম।
(1) "মারাবানা' এটা কি কেনায়া শব্দ?

(2) কিছুদিন বাবার বাসায় ছিলে ভালো ছিলাম। আসার পর আবার অশান্তুি শুরু করলে। এটা কি কেনায়া শব্দ?

(3) প্যাচাল পাড়ছো কেন?  এটা কি কেনায়া শব্দ?

(4) এটা বললে কেনায়া শব্দ, ওটা বললে কেনায়া শব্দ, তাহলে তো কোন কাথায় বলা যাবে না, এভাবে তো বেচে থাকা যায় না @ এমন কথা যদি মনের ভিতর চলে আসে তাহলে কি ঈমান চলে যাবে?

(5) একটা ভিডিওতে ভগবান নাম শোনার পর আমার মনে চলে আসছে যে,  আল্লাহ ভগবান। হিন্দুরা যে ভগবানের পুজা করে আমি তাকে মানি না। সেটা মিথ্যা তাতেও কোন সন্দেহ নেই আমার। তারপরেও এমন বাজে চিন্তা আমার মনে চলে আসছে। এছাড়া আল্লাহকে নিয়ে আরো অনেক বাজে বাজে চিন্তা আসে যা আমি বলতে লজ্জাবোধ করি। মাঝে মাঝে এমন কিছু কথা মনে চলে আসে যা আমার বিশ্বাসের বিপরিত।এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে ???

(6) বাসায় সবসময় মা আর ওয়াইফের মাঝে সমস্যা লেগেই থাকে। আজ বাসায় আসার পর ও দেখি মা ও ওয়াইফের মাঝে সমস্যা চলছে। তাই আমি রেগে গিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসি। আর আমার উপরে উল্লেখিত বিভিন্ন আজে বাজে চিন্তা আসার দরুন মনে হতাসা নিয়ে আমি মনে মনে ভেবে বসি যে, আমি কাফের, মুরতাদ হয়ে যাবো। তারপর অন্য কিছু একটা ভাবতে গিয়ে থেমে যায়। এবং ভাবি এ আমি কি ভাবছি,!

আমার কি ঈমান চলে গেল শায়েখ?

(৭) শুধু আমার কাছে বলে টিকে গেলে, অন্য কারো কাছে পড়লে কপালে কি ছিলো সে আল্লাহ ভালো জানে...?

(৮) ওয়াইফের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় ওয়াইফ জামাকাপড় ও বোরকা গোচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল চলে যাবে। এবং বাসায় ফোন করে কান্নাকাটি করলো কিছু সময়। তারপর ঘরে এসে বসলো। আমি বললাম কি লাভ হলো বাসায় ফোন করে?
শুধু একটা ভুল করলে আমি আর কখনো তোমাদের বাসায় যাবো না। এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল। সে আমার কাছে তালাক চায়নি। আমিও তালাক নিয়ে কোন কথা বলিনি। আমি শুধু তার ভুল গুলা ধরিয়ে দিতে চাচ্ছিলাম । আর কি যেন বলছিলাম আমার ঠিক মনে নেই। কথা হতে হতে হঠাত আমি বলতে গেলাম যে, " তোমার যা " বা "তোমার যা খুশি" বলে থেমে যায়। বলতে গিছিলাম যে, তোমার যা খুশি তাই কর। কেনায়া শব্দ হয়ে যায় যদি এই ভয়ে থেমে যায়। যখন আমি এই কথা বলি তার আগে সে বাসায় চল যাবো এমন কোন কথা বলিনি। তালাকের কথা সবসময় মনে থাকে বিধায় ভয় লাগছে।
এতে কি তালাক হবে?

(৯) ভাত খেতে খেতে মনে হলো, তোমার কাছে ভাত ও খাবো না। দেখি তুমি কিসের ভিত্তিতে থাকো।

এতে কি তালাক হবে?
(১০) ঘুম ভংগার পর তালাক নিয়ে নানা ধরনের কল্পনা চলে আসছে। তখন হালকা ঝিমকি আসলে তালাক শব্দ উচ্চারন  করে ফেলছি কিনা আমি সন্দিহান।সজাগ থাকা কালিন কন্টোল করি যেন মুখ দিয়ে না বের হয়। কিনতু হালকা ঘুম ঘুম থাকা অবস্থায় তালাক উচ্চারন হয়ে যাচ্ছে কিনা আমি সন্দিহান।
একথা ভাবার জন্য কি তালাক হবে?
@আমার জন্য কি শরিয়তে কোন ছাড় আছে??

1 Answer

0 votes
by (679,160 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
"মারাবানা' এটা কেনায়া শব্দ নয়।

(০২) কিছুদিন বাবার বাসায় ছিলে ভালো ছিলাম। আসার পর আবার অশান্তুি শুরু করলে। এটা কেনায়া শব্দ নয়।

(০৩) প্যাচাল পাড়ছো কেন?  এটা কেনায়া শব্দ নয়।

(০৪)
সব শব্দই কেনায়া শব্দ নয়।
তালাকের ইঙ্গিত বহন করে,এমন শব্দই কেনায়া শব্দ  

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি স্ত্রীকে তালাক প্রদানের নিয়তে কোনো শব্দ বলবেননা,তাহলেই আর কোনো সমস্যা হবেনা।
কোনো কেনায়া শব্দ নিয়ে আপনার আর টেনশনের কিছু থাকবেনা।

আপনি নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করুন।

(০৫)
আপনার ঈমান চলে যায়নি।
তবে আপনি তওবা করে নিবেন,ভবিষ্যতে আর এহেন শব্দ বলবেননা।

এহেন কথা মাথায় আসলে বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

(০৬)
আপনার ঈমান চলে যায়নি।
তবে এহেন ঈমান ধ্বংস কারী কথা আর বলবেননা।
তওবা করে নিবেন।

(০৭)
এটি বললে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৮)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার যেহেতু তালাকের নিয়ত ছিলোমা,তাই তালাক হবেনা।

(০৯)
ভাত খেতে খেতে মনে হলো, তোমার কাছে ভাত ও খাবো না। দেখি তুমি কিসের ভিত্তিতে থাকো।

একথা ভাবার জন্য তালাক হবেনা।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এখান থেকে নিজেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আপনার জন্য কিছু পরামর্শঃ-

অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন বাহিরে থাকুন।
তাবলিগে গিয়ে ৪০ দিন সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 
,
আপনি তালাক নিয়ে যতই চিন্তা করুন না কেন, কিংবা মনে মনে কথা বলুন না কেন, কিংবা মনে মনে যতই উল্লেখিত শর্ত আওড়ান না কেন, কিংবা নিয়ত ও সংকল্প করুন না কেন– যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে উচ্চারণের বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত তালাক হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা আমার উম্মতের ওয়াসওয়াসা, মনে মনে কথা বলা ক্ষমা করে দিয়েছেন; যতক্ষণ না সে কর্ম করে কিংবা কথা বলে।’ (সহিহ বুখারী ৬৬৬৪ সহিহ মুসলিম ১২৭)

★আপনি তালাক সংক্রান্ত কোন মাসআলা পড়বেন না। কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও যাবেন না। কারো সাথে এ সংক্রান্ত আলাপ ও আলোচনাও করবেন না।
তালাক সংক্রান্ত প্রশ্ন করবেননা। 

মনের মাঝে এ বিষয়ক কোন কিছু আসতে দিবেন না। আসলেই অন্য বিষয় নিয়ে মগ্ন হয়ে যাবেন, প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলবেন। ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

 (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)

★ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...