আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
১। আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম বাক্যে শয়তান বলতে কি বুঝানো হয়েছে? এর দ্বারা কি জ্বিন শয়তান এবং মানুষ শয়তান উভয়কেই বুঝানো হয়েছে?

২। বিবাহিত এক ব্যাক্তি নানারকম ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত হয়। প্রায়ই সে তালাকের ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত হয়। একবার তালাকের ওয়াসওয়াসা আসার পরে সে দুইবারের মত আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম পড়ল। এরপরে আরেকবার আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম পড়া অবস্থায় মাথায় অনিচ্ছাসত্বেও নতুন করে কিছু কল্পনা আসলো। কল্পনায় এটা আসলো যে তার স্ত্রী মানুষ শয়তান। ব্যাক্তিটি টেনে (লম্বা করে) আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম পড়তে লাগলো যাতে পড়া শেষ হবার পূর্বেই ঐ কল্পনা/চিন্তাটি মাথা থেকে সরানো যায়। কিন্তু মাথা থেকে ঐ কল্পনা/চিন্তা সরাতে পারেনি এবং সে অবস্থায় আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম পড়া শেষ করে। প্রতিবারই ঐ ব্যাক্তিটি জিহবা নাড়িয়ে উচ্চারণ করে আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম পড়ে।

উল্লেখ্য, ঐ ব্যাক্তির স্ত্রী মোটামুটি দ্বীনদার এবং দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করে।

যেহেতু আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম এর অর্থ "হে আল্লাহ, আপনার কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি" সেহেতু বর্ণিত পরিস্থিতিতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কি কোনো সমস্যা হয়েছে?

৩। এই প্রশ্ন লেখার সময়েও এরুপ অনিচ্ছাকৃত কল্পনা/চিন্তা মাথায় এসেছে। এতে কি কোনো সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

তালাকের কথা চিন্তা করল কিন্তু সে শব্দ করে উচ্চারন করল না, বা তার  জিহবা নড়ল না, অর্থাৎ সে মনে মনে বলল, তাহলে তালাক পতিত হবে না। কারণ শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا شَيْئًا مَا نُحِبُّ أَنْ نَتَكَلَّمَ بِهِ وَإِنَّ لَنَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، قَالَ: «أَوَ قَدْ وَجَدْتُمْ ذَلِكَ؟» قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ»

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মনের মধ্যে এমন কিছু চিন্তার উদ্রেক হয় যা সূর্য উদিত হওয়ার পরিধির মধ্যকার (মূল্যবান) সবকিছুর বিনিময়েও কথায় প্রকাশ করা আমরা মোটেও সমীচীন মনে করি না। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি তা অনুভব করো? তারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ এটিই ঈমানের সুস্পষ্ট পরিচয়। (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান) আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ১২৯৬ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

মনে মনে তালাক দেওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/48097?show=48111#a48111

ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত ব্যক্তির তালাক দেওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/54963/?show=54963#q54963

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিতাড়িত জ্বিন শয়তান উদ্দেশ্য যে মনের মধ্যে ওয়াসওয়াসা দেয় এবং গোনাহের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।

২-৩. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এর দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না এবং স্ত্রী তালাকও হবে না।

উল্লেখ্য যে, তার অনেক অনেক ওয়াসওয়াসা রয়েছে। তাই এগুলো পাত্তা না দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে তাকে এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...