আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
75 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (42 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ শায়েখ(হাফিজাহুল্লাহ ,

বর্তমান যেসব ডেকর বিজনেস গুলো আছে,সেগুলোতে প্যাকেজ গুলো এমন ভাবে সাজানো যেটা একজন মুসলিম উম্মাহ হিসেবে আদোউ কতটুকু জায়েজ জানিনা৷ কাস্টমার যদি  হলুদ, মেহদি প্রোগ্রাম এধরণের অনৈসলিক আয়োজনের জন্য স্টেজ +থিম পরামর্শ চায়  ,সেগুলো আলাদা করে চুজ করে দেয়া হয়, এটা কি তাদের হারামে প্রমোট করা না?৷ তাছাড়া ক্লায়েন্ট যদি ডিমান্ড করে তাহলে মিউজিকের ব্যবস্থাটাও ডেকর বিজনেসের পক্ষ থেকে করা হয়৷ শায়েখ এই ডেকর বিজনেসের সংগে আমার আহালো জড়িত৷ যার কাছে হালাল মেনে চলা,সুদ থেকে বেঁচে চলা, একান্ত প্রয়োজনে মেয়ে ক্লায়েন্টদের সাথে কথা বলতে চোখ নিচে রাখা, অপজিট জেন্ডারের সংগে সরাসরি  কাজের বাইরে অন্য কথা না বলা এগুলো, তেমন গুরুত্ব রাখে না৷
মূলত আমি ডেকরের এই কন্সেপ্টের থেকে সম্পূর্ণ তাকওয়াপূর্ণ একটা ডেকরের বিজনেসের কথা ভাবছি৷ যেটা নিয়ে আমি আগাবো,আর কাজের জন্য নোক পেলে পরে আহালকে সাথে রাখবো, যেহেতু তার ডেকরের বিজনেসের হারাম ব্যাপারগুলো সরানোর ব্যাপারে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই৷ তাই যদি এসব হারামের বিপরীতে হালাল কোনো কিছু দাঁড় করানো যায় ইনশাআল্লাহ এই আশায়..
 এখানে স্টেজের ডিজাইন সাধারণ ভাবে প্রচার হবে,  কোনো নির্দিষ্ট অনৈসলামিক কন্সেপ্টের উপর না৷ বিভিন্ন ডিজাইন থেকে কাস্টমার তার পছন্দ মতো নিবে এবং এটা তার কোন অনুষ্ঠানের জন্য নিচ্ছে তার ব্যাক্তিগত বিষয়৷ আমরা হলুদ বা এ জাতীয় প্রোগ্রামে কি কি স্টেজ ভালো হয়, কেমন ডেকর সে ব্যাপারে কোনো পরামর্শ চাইলেও দিবোনা৷ তাছাড়া একটা প্যাকেজ সিস্টেম থাকবে কেউ যদি চায় নারি পুরুষ আলাদা করে ডেকরের কাজ করাতে পারে, সেক্ষেত্রে নারিদের এখানে পুরুষ না আসতে আমাদের পক্ষ থেকে প্যান্ডেলের বাইরে একজন আমাদের লোক রাখা, এরকম সার্ভিস চাইলে দেয়া যাবে৷ ক্লায়েন্ট মিউজিক সার্ভিস চাইলে দেয়া হবেনা, কিন্তু নাশিদ চাইলে সে ব্যবস্থা করা হবে৷ ব্যানারে বর কনের ছবি দেয়ার কন্সেপ্টের বিপরীতে শুধু নাম দিয়ে ব্যানার বানিয়ে দেয়া হবে৷ যোগাযোগের ক্ষেত্রে মহিলারা মেয়ের নাম্বারে কল, পুরুষরা ছেলের নাম্বারে এভাবে ফোন নাম্বার দেয়া ব্যবসায়ের৷ তবে প্রয়োজনভেদে নিয়ম মেনে অপজিট জেন্ডারের সাথে কথা বলা মেনে চলা,এতে ক্লায়েন্ট কম্ফোর্ট ফিল করুক আর না করুক৷ মোটামুটি এরকম হচ্ছে সর্বোপরি ডেকর ব্যবসা নিয়ে ভাবনা৷
শায়েখ,আপনার মতামত জানাবেন, এটা জায়েজ নাকি না৷ শুধু এমন না৷ তাকওয়াপূর্ণ হালাল যদি হয় তবেই ইনশাআল্লাহ৷ আগানো উচিত হবে কিনা আর যদি আপনি সম্মতিসূচক উত্তর দেন তাহলে যখন ফ্রী মিক্সিং পরিবেশের কাজ পাবো সেক্ষেত্রে কাজ উঠিয়ে দেয়ার পর করণীয় কি হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

অমুসলিমদের ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত জিনিষপত্র বা বিজাতীয় সংস্কৃতির জিনিষপত্র এবং বিভিন্ন শরীয়ত বিরোধী কাজ সমূহে ব্যবহৃত উপকরণ ক্রয়-বিক্রয় এবং ভাড়া দেওয়া সম্পর্কে ওলামায়ে কেরামের মাঝে কিছুটা দ্বিমত আছে।

একদল উলামায়ে কেরাম এজাতীয় ক্রয়-বিক্রয় বা ভাড়া প্রদানকে নাজায়েয মনে করেন। তাদের দলীল হল, কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন,

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

অর্থ: সৎকর্ম ও খোদাভীতির কাজে পরস্পর সাহায্য কর। পাপকর্ম এবং সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা-মায়েদা-২)

অন্যদিকে উলামায়ে কেরামের বিরাট একটি অংশ বলেন, সুদ ,মদ, শুকর ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে মূল কাজ বৈধ হলে তা করা যাবে। যেমন গির্জায় ঝাড়ু দেওয়া, ইত্যাদি। কেননা শুধুমাত্র ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ নয়। তাই উক্ত ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ হবে না। চাই তা কোনো গির্জা বা অনৈসলামিক স্থানেই হোক না কেন।

ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে,

ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ

যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো গুনাহ নাই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)

ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ ও প্রামাণ্যগ্রন্থ হেদায়া কিতাবে আছে-

وَمَنْ أَجَّرَ بَيْتًا لِيُتَّخَذَ فِيهِ بَيْتُ نَارٍ أَوْ كَنِيسَةٌ أَوْ بِيعَةٌ أَوْ يُبَاعُ فِيهِ الْخَمْرُ بِالسَّوَادِ فَلَا بَأْسَ بِهِ.

কেউ যদি বাড়ি ভাড়া দেয় এবং ভাড়াটিয়া তাতে অগ্নিশিখা, গির্জা, মন্দির কিংবা মদের থালা তৈরি করে, তাহলে বাড়ি দানকারীর কোনো পাপ নেই।

مرغيناني، الهداية، 4: 94، المکتبة الاسلاميه

এর থেকে তাদের কাছে ডেকোরেটরের মালামাল ভাড়া দেওয়ার অবকাশ পাওয়া যায়।

তাছাড়া যেহেতু এসব বস্তু কেবল গুনাহের কাজের জন্যই প্রস্তুত করা হয়নি বরং এগুলোর জায়েজ ব্যবহারেরও সুযোগ রয়েছে। যেমন ওয়াজ মাহফিলে কিংবা কোনো দ্বিনি প্রোগামেও এগুলো ব্যবহার করা যায়। কাজেই মূল বস্তুতে কোনো দোষ নাই। তাই এসব ভাড়া দিয়ে উপার্জন করা হালাল। তবে যারা ভাড়া নিয়ে গোনাহের কাজ করছে তারা তাদের কৃতকর্মের কারণে গোনাহগার হবে। এতে ভাড়াদাতার গোনাহ হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উলামায়ে কেরাম থেকে দুই ধরণের মতামত পাওয়া যায়। তবে আমাদের নিকট সর্বত্তম মনে হয় যে, যদি কাউকে ডেকোরেটরের মালামাল ভাড়া দেওয়ার সময় নিশ্চিত মনে হয় যে, সে সেগুলি গনাহের কাজে ব্যবহার করবে তাহলে তাকে গুনাহের কাজে সহযোগিতা না করার উদ্দেশ্যে সেগুলি ভাড়া দিবে না। তবে যদি ভাড়া দেওয়ার সময় জানা না যায় যে, সে কি কাজে সেগুলি ব্যবহার করবে? এমতাবস্থায় উক্ত মালামাল ভাড়া দিয়ে ইনকাম করা জায়েয আছে।

আপনাদের উদ্দেশ্য ও নিয়ত সত্যিই প্রশংসনীয়। যদি আপনারা আপনাদের সেই কন্ডিশন অনুযায়ী উক্ত বিজনেস পরিচালনা করতে পারেন তাহলে তা আপনাদের জন্য জায়েয আছে। উক্ত পদ্ধতিতে আপনাদের ইনকামও হালাল হবে ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 173 views
...