মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اجۡتَنِبُوۡا کَثِیۡرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ بَعۡضَ الظَّنِّ اِثۡمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوۡا وَ لَا یَغۡتَبۡ بَّعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُکُمۡ اَنۡ یَّاۡکُلَ لَحۡمَ اَخِیۡہِ مَیۡتًا فَکَرِہۡتُمُوۡہُ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ تَوَّابٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۲﴾
হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিকাংশ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ কোন কোন অনুমান পাপ এবং তোমরা একে অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না এবং একে অন্যের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে কর। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।
(সুরা হুজরাত ১২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মাদ্বীনা বা মক্কার বাগানগুলোর মধ্য হতে কোন এক বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দু’ ব্যক্তির আওয়ায শুনতে পেলেন যে, তাদেরকে কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোন গুরুতর অপরাধে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তারপর তিনি বললেনঃ ‘হ্যাঁ, এদের একজন তার পেশাব করতে গিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করত না। অপর ব্যক্তি চোগলখোরী করত। অতঃপর তিনি একটি খেজুরের ডাল আনতে বললেন, এবং তা ভেঙ্গে দু’ টুকরা করে প্রত্যেকের কবরের উপর এক টুকরা করে রাখলেন। তাঁকে বলা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কেন এমন করলেন?’ তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত এ দু’টি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে। (বুখারী ২১৬.২১৮, ১৩৬১, ১৩৭৮, ৬০৫২, ৬০৫৫; মুসলিম ২/৩৪, হাঃ ২৯২, আহমাদ ১৯৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২১৬)
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়াব রাহ. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক সাহাবী আমাকে লিখে পাঠিয়েছেন,
أن ضع أمر اخيك على أحسنه ما لم يأتك ما يغلبك، ولا تظنن بكلمة خرجت من امرئ مسلم شرا وانت تجد لها في الخير محملا، ومن عرض نفسه للتهم فلا يلومن الا نفسه، ومن كتم سره كانت الخيرة في يده وما كافيت من عصى الله فيك بمثل ان تطيع الله تعالى فيه
অর্থাৎ তোমার ভাইয়ের কাজ ও অবস্থা তার উত্তম অর্থে গ্রহণ কর যে পর্যন্ত না এর বিপরীতে ভারী কোনো প্রমাণ আসে এবং কোনো মুসলিমের কোনো কথার মন্দ ব্যাখ্যা করো না যে পর্যন্ত তার কোনো ভালো ব্যাখ্যা করা তোমার পক্ষে সম্ভব হয়। আর যে নিজের সম্পর্কে সন্দেহের সুযোগ সৃষ্টি করে সে যেন শুধু নিজেকেই ভৎর্সনা করে। আর যে নিজের গোপন কথা গোপন রাখে কর্তৃত্ব তার হাতেই থাকে। আর যে তোমার বিষয়ে আল্লাহর নাফরমানী করল এর উত্তম বিনিময় এর চেয়ে আর কী হতে পারে যে, তুমি তার বিষয়ে আল্লাহর ফরমাবরদারী কর। (শুআবুল ঈমান, বাইহাকী ৩ : ১৫০)
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هَمَّامٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ حُذَيْفَةَ فَقِيلَ لَهُ إِنَّ رَجُلاً يَرْفَعُ الْحَدِيثَ إِلَى عُثْمَانَ. فَقَالَ حُذَيْفَةُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ".
রাসুল (সা.) বলেন, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫৭০৯; মুসলিম, হাদিস : ১০৫)[মুসলিম১/৪৫, আহমাদ ২৩৩০৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৭)
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা জানো চোগলখুরি কী? সাহাবিরা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তা সঠিকভাবে অবগত। রাসুল (সা.) বলেন, চোগলখুরি হলো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একের কথা অন্যের কাছে লাগানো। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সহিহাহ, হাদিস : ৮৪৫)
হ্যাঁ যদি কাহারো স্ত্রীর কোনো গুনাহ প্রকাশ হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে তাকে গুনাহ থেকে বাঁচানোর জন্য,সংশোধন এর লক্ষ্যে তার স্বামীকে অবহিত করলে সেটি জায়েজ আছে।