জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মাসবুক ব্যক্তি ইমাম সাহেব উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর দাঁড়িয়ে বাকি নামায আদায় করবে।
এক্ষেত্রে সে একাকী নামায আদায়কারীর হুকুমে চলে যাবে। অর্থাৎ কোন কারণে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হলে সেজদায়ে সাহু দিতে হবে। নামায ভঙ্গের কারণ হলে, নামায ভেঙ্গে যাবে ইত্যাদি।
আর কেরাতের ক্ষেত্রে প্রথম দিককার রাকাতের হুকুম আরোপিত হবে। অর্থাৎ যদি এক রাকাত না পায়, তাহলে দাঁড়িয়ে সানা পড়বে, তারপর ফাতিহা ও সূরা মিলাবে এভাবে বাকি নামায পূর্ণ করবে। আর যদি দুই রাকাত না পায়, তাহলে প্রথম রাকাতে, সানা, ফাতিহা, সূরা মিলিয়ে নিয়মমাফিক পূর্ণ করবে, তারপর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা মিলাবে। আর যদি তিন রাকাত না পায়, তাহলে প্রথমে দুই রাকাত পূর্বের মত পড়বে। আর তৃতীয় রাকাতে শুধু ফাতিহা পড়বে কিন্তু সুরা মিলাবে না।
মোটকথা, রাকাত হিসেবে প্রথম রাকাত আদায়কারীর মত নামায আদায় করবে।
কিন্তু বৈঠক হিসেবে ধর্তব্য হবে শেষ। তথা এক রাকাত না পেলে, এক রাকাত পূর্ণ করেই শেষ বৈঠক আদায় করবে নিয়মমাফিক। আর দুই রাকাত না পেলে তা পূর্ণ করে শেষ বৈঠক আদায় করবে। এভাবে তিন রাকাত ও চার রাকাতের একই হুকুম।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ اَنَّه غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ غَزْوَةَ تَبُوْكَ قَالَ الْمُغِيْرَةُ فَتَبَرَّزَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قِبَلَ الْغَائِطِ فَحَمَلْتُ مَعَه اِدَوَاةً قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَمَّا رَجَعَ اَخَذْتُ اُهْرِيْقُ عَلى يَدَيْهِ مِنَ الاِدَاوَةِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَه وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِّنْ صُوْفٍ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَاَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَاَلْقَى الْجُبَّةَ عَلى مَنْكِبَيْهِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ مَسَحَ بِنَاصِيَتِه وَعَلَى الْعِمَامَةِ ثُمَّ اَهْوَيْتُ لَانْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَاِنِّىْ اَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ثُمَّ رَكِبَ وَرَكَبْتُ فَانْتَهَيْنَا اِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوْا اِلَى الصَّلَاةِ وَيُصَلِّىْ بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ وَّقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا اَحَسَّ بالنَّبِىِّ ﷺ ذَهَبَ يَتَاَخَّرُ فَاَوْمَا إِلَيْهِ فََاَدْرَكَ النَّبِىُّ ﷺ اِحْدَىِ الرَّكْعَتَيْنِ مَعَه فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِىُّ ﷺ وَقُمْتُ مَعَه فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِىْ سَبَقَتْنَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের (ফজরের) সলাতের আগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দু’টি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দু’টি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দু’টি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ- উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ) তাদের সলাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্‘আতের মধ্যে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্‘আত ছুটে যাওয়া সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আমরা আদায় করলাম।
(মুসলিম ২৭৪, নাসায়ী ১০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১৪৩, ইবনু মাজাহ্ ১২৩৬।)
বিস্তারিত জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এক্ষেত্রে বাকি দুই রাকাতেই আপনি সুরা ফাতেহা ও অন্য সুরা মিলাবেন।
আর শেষ রাকাতে বৈঠক করবেন।
এই বৈঠলে তাশাহুদ,দরুদ শরীফ,দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করবেন।
(০২)
এক রাকাত পেলে ইমামের সালাম ফিরানোর পর বাকি ৩ রাকাত আদায় করতে হবে।
এক্ষেত্রে ১ম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য সুরা মিলাতে হবে।
শেষ রাকাতে শুধু সুরা ফাতেহা পড়বেন।
এক্ষেত্রে ইমামের সালাম ফিরানোর পর বাকি রাকাত আদায় করতে গিয়ে ১ম রাকাতেই বৈঠক করবেন।
আর একেবারে শেষ রাকাতে বৈঠক করবেন।
★ইমামের সাথে তিন রাকাত পেলে বাকি এক রাকাত আদায় করতে হবে।
সেই রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য সুরা মিলাতে হবে।
ও শেষে বৈঠক করতে হবে।
★ইমামের সাথে ২ রাকাত পেলে করনীয় এক নং প্রশ্নের জাবাবে আছে।
(০৩)
মাগরিবের নামাজে এক রাকাত পেলে ইমামের সালাম ফিরানোর পর বাকি ২ রাকাত আদায় করতে হবে।
এক্ষেত্রে উভয় রাকাতেই সুরা ফাতেহা ও অন্য সুরা মিলাতে হবে।
উভয় রাকাতেই বৈঠক করতে হবে।
★উপরোক্ত সমস্ত ছুরতে বৈঠক সহ পেলেও যেই বিধান,বৈঠক না পেলেও একই বিধান।