আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
চিটাগং এর একটা গ্রুপ দাবি করতেছে মাইকে আযান বা নামাজ পড়া শিরক। আমার এক নিকট আত্মীয় এই আকীদায় বিশ্বাসী। তিনি আমাকে তার এই মত গ্রহন করার জন্য বিভিন্ন রেফারেন্স দেন কুরআন বিভিন্ন সূরা থেকে। ওনার কথাটা আমি ঐভাবে মূল্যায়ন না করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানলে উপকৃত হতাম।নিচে আমি তাদের কিছু রেফারেন্স তুলে ধরছিঃ

১." ওয়া বুদুল্লাহ ওয়ালা তুশরিকু শাইআ"( সূরা নিসা-৩৬) অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। কোন কিছু তার সাথে শরীক করোনা।

আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসঃ আল্লাহর ইবাদতে জানদার, বেজানদার, তার রবের সাথে,  না ইবাদতের সাথে কোন কিছুকে শরীক করা যাবেনা। মাইক বা যন্ত্র যেহেতু বেজান বস্তু তা আল্লাহর ইবাদতে ব্যবহার ঠিক হবেনা।

২." ইয়া কানা বুদু ওইয়্যা কানাস্তাইন"( সূরা ফাতিহা-৪) অর্থাৎ আমরা কেবল তোমারি গোলামী করি এবং তোমার কাছে সাহায্য চাই।

আমাদের প্রশ্ন - আপনারা তো আল্লাহর কাছে সাহায্য চান নলেন ঠিকই, কিন্তু আপনারা ইবাদতে সাহায্য চাচ্ছেন মাইক বা যন্ত্র সমূহের। আপনারা এখন আওয়াজ বড় করার জন্য সাহায্য চান মাইকের কাছে। কই আপনারা তো আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন না। কখনো মসজিদের বাইরে উঁচু কন্ঠে আযান দিলেন না, যা করা সুন্নত।
৩.সূরা কামারে আল্লাহ বলেন-" আমি সবকিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমানে"(আয়াত -৪৯)

আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসঃ আমাদের কন্ঠের আওয়াজ আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত। তা নির্ধারন করে দিয়েছেন পরিমান মতো।কিয়ামতে আগ পর্যন্ত আর কোন আওয়াজে বড় করার জন্য সাহায্যকারীর প্রয়োজন হবেনা।

৪."নিসন্দেহে আল্লাহ ইচ্ছা করলে যেকোন গুনাহ ক্ষমা করবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।"( সূরা নিসাঃ৪৮,১১৬)
আমাদের প্রশ্নঃ অনেক মানুষ বলে যে, ছেলেটা বিদেশ না গেলে জীবন চলত না, খেতে এবার ধান না হলে না খেয়ে মরে যেতাম, দোকানটা থাকার কারনে বেঁচে আছি, আলেমরা বলে এগুলা শিরক।তাহলে কেউ যদি বলে মসজিদে মাইক না হলে মানুষ আসবে কেমন করে? কারেন্ট না থাকলে অন্য ব্যবস্থা করে হলেও আজান দিতে হবে। তাহলে কি এটা ইবাদতের ক্ষেত্রে শিরক হবে না?
৫."আরস্বীয় নামাজে কেরাত উচ্চসুরে পড়বেনা আর ক্ষীন সুরেও না। মাঝামাঝি পন্থা অবলম্বন কর।"( বনি ইছরাইল-১১০)

আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসঃ মাইকে বা স্পিকারের সাহায্যে নামাজ আদায় করলে উচ্চ আওয়াজ করার ফলে কোরআনের আয়াতের বিরুদ্ধে অসম্মান করা হয়।
৬. অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন- আজ তোমাদের জীবন ব্যবস্থায় পরিপূর্নতা দান করলাম। আমার নেয়ামত তোমাদের জন্য পূর্নতায় পৌঁছালাম।আর ইসলামকে তোমার দ্বীন হিসাবে মনোনিত করলাম। ( সুরা মায়েদা-৩)

আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসঃ রাষ্ট্র চলতে, সমাজ চলতে পরিবার চলতে,  ব্যক্তি জীবন চলতে, আযান চলতে, নামাজ চলতে যা কিছু প্রয়োজন কোরআনের মাঝে সকল বিধান পূর্ন করে দিয়েছে, আল্লাহ ঘোষণা দিলেন। সেদিন তো দ্বীনের কার্যক্রম চালাতে নতুন কোন যন্ত্রের নাম নিশানা ছিলনা। বিদায় ভাষনে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার সাহাবার সম্মুখে নবীজী( সাঃ) ভাষন দিয়েছেন, সেদিনকি আল্লাহ তায়ালা পারতেন না এই উপকারী যন্ত্র পাঠাতে? আসলে আমাদের মূল সমস্যা ইমানে।আমরা আল্লাহর উপর নির্ভর করছিনা।

৭. হযরত আনাস (রা.) বলেন- নামাজের জন্য আহবান করা সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে সাহাবারা আগুন জ্বালানো অথবা ঘন্টা বাজানোর প্রস্তাব দিলেন। কিন্তু এটা ইহুদি ও নাছারাদের প্রথা বলে মন্তব্য করা হয়।তারপর  বেলালকে আজানের বাক্য দু'বার করে, একামতের বাক্য একবার করে বলার নির্দেশ দেওয়া হলো।( বুখারী শরিফ বাংলা- ৫৬৮ নং হাদিস)

আমাদের আকিদা ও বিশ্বাসঃ উল্লেখিত হাদিসের আলোকে আগুন অথবা ঘন্টা দুটিই যন্ত্র বা মাইকের মাঝে বিদ্যমান। কারেন্ট/ বিদ্যুৎ তথা আগুন,  সেই আগুন দ্বারাই একনকার সময়ে করা হচ্ছে নামাজর আহবান।মািকের হরনে টোকা দেওয়া ঘন্টার কাজের একটি রুপ।

আমাদের প্রশ্নঃ অনেক আলেমরা বলে থাকেন, মিলাদ কোরআন হাদিসের কোথাও নাই, নিলাদ নবীজী (সাঃ) আমলে ছিলনা। মাইক ও তো এমন বিষয় যা নবীজী (সাঃ) এর যুগে ছিলনা। তবে কিভাবে মাইক বা বিভিন্ন যন্ত্র ইবাদত চলতে পারে?
বিঃদ্রঃ উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলা তাদের একখানা একপেজের প্রচারপত্র থেকে সরাসরি তুলে দেওয়া। তাদের কাগজে ১৪ টার মতো এরকম রেফারেন্স ছিল। এগুলা তারা যেগুলাকে বেশি প্রকাস করে সেগুলা তুলে ধরা হলো।

1 Answer

0 votes
by (676,880 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন-

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ

‘যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করল যা মূলত তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তা অগ্রাহ্য।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৫০১]

মাইকে আজান দেওয়ার বিষয়টি রাসূল (সা.)-এর যুগে ছিল না। কারণ রাসূল (সা.)-এর যুগে মাইক আবিষ্কৃত হয়নি,এটি ঠিক আছে। কিন্তু  কোনো ব্যক্তিই মাইকে আজান দেওয়াকে ইবাদত বা দ্বীনের কোনো বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত মনে করে না।
সুতরাং এটি বিদ'আত হবেনা।

,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তির দাবিগুলো অযৌক্তিক দাবি।
কুরআন হাদীস বিকৃত ব্যাখ্যা। 
একটি ভাবলেই এ যুক্তিগুলো সহজেই খন্ডন করা যায়।

মূল মাসয়ালা হলো, মাইকে আজান দিতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা নেই।

অভিজ্ঞ ও মুহাক্কিক আলেমগণের মতে লাউডস্পীকার বা মাইকের আওয়াজটি মূলত আওয়াজকারী তথা ইমামের আওয়াজ। লাউডস্পীকার শুধু উক্ত আওয়াজকে একটু উঁচু আওয়াজে প্রকাশ করে মাত্র। আওয়াজটিকে যন্ত্রস্ত করে পাল্টে দেয় না। শুধুই সাউন্ড বৃদ্ধি করে থাকে।

এ কারণে লাউডস্পীকার বা মাইকের মাধ্যমে নামায পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

আজান ও নামাজে প্রয়োজন অনুপাতে মাইক ব্যবহারের অনুমতি শরিয়তে আছে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ২/২৯৪, কিফায়াতুল মুফতি : ৭/২১৪, আলাতে মুকাব্বিরুস সাউত কে শরয়ী আহকাম, পৃষ্ঠা ৩৪-১২০)

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...