আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
89 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি ফানি ভিডিও দেখলাম আরবের যেখানে স্ত্রী তার স্বামির বন্ধুদের উপর হামলা করছিল কারন তারা তার স্বামীকে আরেকটি বিয়ে করতে বলেছিল। এখন আমিও দুস্টুমি করে বললাম  আমি মরে যেতে রাজি কিন্তু সতিন দেখতে রাজি না।আর আমার স্বামীকে কেউ এরকম আরো বিয়ে করতে বললে আমিও এভাবে হামলা, মাইর দিব তাদেরকে। আর বলছিলাম জীবনে কিছুতেই আমি আমার স্বামীকে বিয়ে দিব না। যদিও এটা তার প্রতি ভালোবাসা থেকে বলেছিলাম। এখন আমার জিজ্ঞাসা হচ্ছে

১) আমি বহুবিবাহ অস্বীকার করি নি কারন আল্লাহ এটা স্বামীদের হক্ব দিয়েছেন। তবে মনে খুব কষ্ট লাগে যখন ভাবি এই কথা। দিলটা যেন স্বামীর আরেক বিয়ে ভাবলেই কেদে ওঠে। আল্লাহর নবির স্ত্রীরা এটাকে খুবই কষ্টের বলে স্বীকার করেছেন  আমি এটাকে নিয়ে গালাগালি বা বহুবিয়ে করলে মানুষ দুশ্চরিত্র হয়ে যায় এমন কিছু আমি বলি নি কারন এটা আল্লাহর আইন। তাহলে কি আমার ইমান কি ঠিক আছে?
২) আবার মনে হচ্ছে যে আমি স্বামীকে বিয়ে করাতেই চাই না এই মনোভাব, তারপর দুষ্টুমি করলাম এই বলে যে, যে আমার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য কানপড়া দিবে তাকে আমিও মাইর দিব। জীবন চলে গেলেও কষ্ট হবে না তবুও সতিন দেখতে আমি রাজি না।তাহলে কি আমি বহুবিবাহ অস্বীকার করে ফেললাম। আমি কি কাফের হয়ে গেলাম এই কথা বলায়? ভাবতেই তো কান্না পাচ্ছে। আমি তো আল্লাহর কোরআনের আইনকে অবমাননার উদ্দেশ্য বলি নি এমনটা।

৩) তাহলে কি আমার এত কষ্টের সারাজীবনের আমল সব নষ্ট হয়েগেলো।হায় আল্লাহ এখন আমি কি করবো?
এখন কি করবো জনাব আমি আমার ইমান আছে না চলে গেছে এটা নিয়ে খুবই বিষন্ন হয়ে পড়েছি।আল্লাহ কি আমাকে মাফ করবেন না এসব বলার কারনে? আমি তো আল্লাহর হুকৃম অমান্যর উদ্দেশ্য বলি নি। শুধু মনের কষ্ট থেকেই বলেছি। দয়া করে তাড়াতাড়ি বলুন আমি হতাশ হয়ে পড়েছি আমার ইমানের বিষয়ে।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,  শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে, তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع

তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগেদুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।

قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)

 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ।  এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না।

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান।

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. সমতা বিধানে সক্ষমতা থাকলে একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেয় ইসলাম। যদি কেউ সমতা রক্ষা করতে না পারে তবে একটি বিয়েই যথেষ্ট। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি কুরআনিক বিধানকে অস্বীকার না করেন বরং ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে উক্ত কথাগুলি বলেন তাহলে আপনার ইমান ভঙ্গ হবে না। তবে একজন মসলমান হিসেবে এমন কথা বলা মোটেও উচিত নয়। পরবর্তীতে এমন কথা বলা থেকে দূরে থাকতে হবে ও অতীতের কথাগুলি থেকে ইস্তেগফার করতে হবে।

২. যেহেতু আপনি কুরআনের আইনকে অবমাননার উদ্দেশ্য উক্ত কথা বলেননি বিধায় আপন কাফের হবেন না। আপনার উচিত স্বামীর হকসমূহ সঠিক ভাবে আদায় করা, খেদমত করা ও তাকে  বেশী বেশী ভালোবাসা যেন সে আপনার উপস্থিতিতে অন্য কাউকে বিয়ে করার প্রয়োজন বোধ না করে।

৩. জ্বী না আপনার ইমান চলে যায়নি। তবে পরবর্তীতে এজাতীয় কথা বলা বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন ও অতীত কর্মের উপরে ইস্তেগফার করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...