আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

(১) আমার গত কয়েকমাস যাবত তালাকের ওয়াসওয়াসা আসার কারনে আমি মানসিকভাবে খুব পেরেশানিতে থাকি প্রায় সময়। মনের ভিতর তালাক বাক্য বারবার আসতে থাকে। সব বাক্য আমার কাছে কেনায়া বাক্য হয়ে গেল মনে হয়। স্বাভাবিক কথাবার্তা ও আমার ভেবেচিন্তে বলতে হয়। স্ত্রীর ওপর সামান্য রাগ হলেই মনে হচ্ছে মুখ দিয়ে তালাক শব্দ বের হয়ে যাবে। এমনকি অন্য কারো উপর রাগ হলেও মনে হচ্ছে তালাক বলে ফেলবো। রাতে ঘুমানোর পরও তালাক নিয়ে স্বপ্ন আসে। স্বপ্নের ভিতরে স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছি এমন মনে হয়। মাঝে মাঝে মনে মনে কেনায়া বাক্য বলছি ও তালাকের নিয়ত করছি এমন ও হচ্ছে। খাওয়ার সময় ও হায় তুললে মনে হচ্ছে তালাক বাক্য বের হয়ে যাবে। কোন সময় আমার স্ত্রী ফোন করলে সর্ব প্রথম তালাকের কথা মনে আসছে। তালাক উচ্চারন না করেও মনে হয় উচ্চারন হয়ে গেল। মনে সর্বদা ভয় কাজ করে। সারাদিন এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা আসতে থাকে। কাজে ফোকাস করতে সমস্যা হয়। এসব নিয়ে মনে সন্দেহ আসলে বুকের ভিতর ধড়ফড় করে। মন ভার হয়ে পড়ে। আর কিছু ভাল লাগে না।
আমার ওসিডি রোগ আছে শায়েখ। এক প্রকার মানসিক রোগ। ১৫ দিন মত ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ খেয়ে কোন উপকার না পেয়ে আর খাওয়া হয়নি। আমি কোন চিন্তা থেকে সহজে বের হতে পারি না। একই চিন্তা বারবার করতে থাকি।এমনকি মেয়েকে হাসানোর উদ্দেশ্যে মুখ দিয়ে কোন শব্দ করলেও মনে হচ্ছে তালাক বললাম।
এসব কারনে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

(২) আমার মেয়েকে আমার স্ত্রী বকাবকি করার কারনে আমি একটু রেগে গিয়ে আমার স্ত্রীকে বললাম যে, দয়া করে ওর বকা বাদ দাও।
একথা বলার পর আমার মনে হচ্ছে আমি আমার স্ত্রীকে বাদ দেবার কথা বললাম। এরকমভাবে কোন কথার ভিতরে বাদ শব্দ থাকলেই আমার মনে হয় আমি যেন আমার স্ত্রীকে বাদ দেবার কথা বললাম।

আরেকদিন, আমি আমার স্ত্রীকে বাইরে বেরিয়ে এসে মটর বন্ধ করার কথা বললাম। বলার পর মনে হচ্ছে আমি যেন আমার স্ত্রীকে বাসা থেকে বের হও বলছি।
এগুলার দ্বারা কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

আমি মারাত্তকভাবে ওয়াসওয়াসার স্বীকার। আমার জন্য কি শরীয়তে কোন ছাড় আছে শায়েখ?
কোন সময় যদি আমার মুখ দিয়ে তালাক বেরিয়ে যায় তাহলে কি তালাক পতিত হয়ে যাবে?
আশা করি আমার মনের কনফিউশন দুর করবের শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (677,640 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে এগুলার দ্বারা তালাক পতিত হবেনা।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এগুলার দ্বারাও তালাক পতিত হবেনা।

আপনি যেহেতু মারাত্মক ভাবে ওয়াসওয়াসার রুগী, সুতরাং কোন সময় যদি আপনার মুখ দিয়ে তালাক শব্দ বেরিয়ে যায়, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...