আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
62 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)

আসসালামুআলাইকুম, (লাল লেখা আসল প্রশ্ন) 

১। আমি ভালো কলেজে ভর্তির জন্য একটা জায়গায় কোচিং করতে ভর্তি হই। তারা কেমন পড়ায় সে ব্যাপারে অল্প একটু খোজ খবর নেই। তবে ভর্তি হওয়ার পর তাদের পরানো ধরণ খুব ভালো ছিলোনা। ওইখানে ভর্তি হলে ৮০০০ টাকা দিতে হয়। আমি সেখানে ক্লাস কেমন হবে দেখতে ৪০০০ টাকা দেই এবং বাকি টাকা পরে দিবোনা যদি খারাপ পড়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেই। তবে তাদের পড়ানোর প্রতি আন্তরিকতার অভাব এবং বাজে পরানর জন্য আমি ৮০০০ টাকায় যেই কয়টা ক্লাস ছিল অধিকাংশ ৮৫% করি। এবং সেই কোচিং এ পড়া ছেড়ে দেই বাকি ৪০০০ টাকা না দিয়ে। উল্লেখ্য, তারা পরে ওই ৮০০০ টাকায় আর অনেক ক্লাস এড করে জেইগুলো আমি এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিক্ষাও দেইনি কারন তারা বাজে পোড়াত। মূলত তাদের পোড়ানর হালত বাজে থাকায় আমি সেই কোচিং বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় পরি। এবং পছন্দের প্রতিষ্ঠানে চান্স পাই আলহামদুলিল্লাহ্‌। তারা এখনো আমাকে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য কল করেনি। " তাদের বাকি ৪০০০ টাকা না দেয়ার জন্য কি আমি গুনাহগার হব এবং টাকা কি দিয়ে দিতে হবে?"

 

২। আমার আত্মীয় তার কলিগদের সাথে ট্যুরে জান গতবছর। তারা সেখানে লটারি করেন এবং এই লটারিতে আমার আত্মীয় ১ম পুরস্কার পান। তিনি সবে দ্বীনের বুঝ পেয়েছেন। আগে কখন এমন লটারির পুরস্কার জিতেননি। হয়ত আল্লাহ্‌র পরীক্ষা। উনি এবং উনার কলিগগণ এই লটারিকে নিছক আনন্দ ও গিফট মনে করে এই আয়োজন করেছিলেন। " লটারির মত হারাম কে এত সহজভাবে নেয়ার কারণে তারা কি ইমানহারা হয়ে যাবে?"

পরে আত্মীয় জানতে পারেন যে লটারি হারাম। তাই তিনি নিতে চাননি। তবে তার কলিগরা সেই জিনিস (একটি AC) নিতে জোর করেন এবং তিনি তা নেন। তবে আত্মীয় সেই AC বাসায় ব্যাবহার করেননি যেহুতু তা লটারির মাধ্যমে পাওয়া। সেই AC একবছর ধরে পরে আছে। তারা সেটি এমনি ফেলে রেখেছেন যার ফলে ওই AC টি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।" উনারা কি সেই AC এখন এতদিন পর ব্যাবহার করতে পারবেন? না পারলে তারা ওই AC র কি করলে শরীয়ত-সম্মত হবে?"

৩। আমি দীনি ইল্ম অর্জন করতে চাই। আমি অনলাইনে IOM এর আলিমে কোর্সে আছি। আমি কলেজ ের ছাত্র। "অনলাইনে পরলে কি আমি নববী ইল্ম হাসিল করতে ব্যারথ হব? আমার কি পাশের কোন নৈশ মাদ্রাসায় যোগাযোগ করা উচিত নাকি অনলাইনে চালিয়ে যাওয়া উচিত ?" আমার নৈশ মাদ্রাসায় পরার সময় সুবিধা নেই বললেই চলে। নাকি আমি এখন জেনেরাল পড়া শেষ করে পরে আবার পড়ে ইউনিভার্সিটিতে উঠলে তখন সময় পাওয়ায় নৈশ মাদ্রাসায় ভর্তি হব, " এখন অনলাইনে না পড়ে পরে সময় পেলে অফ্লাইনে পড়া এবং এখন শুধু জেনেরাল পড়া চালিয়ে যাওয়া?" দুই লাল মার্কের কোনটি করা ঠিক হবে একটু নসিহাহ করবেন প্লিজ। 

৪। দারুল উলম দেওবন্দ এর আকিদাহ নিয়ে আমাদের সালাফি ভাইয়েরা যেই অভিযোগ দার করান সেইগুলা কি সঠিক? হানাফি সালাফি দন্দে অনেক বিচলিত হয়। কারন মনে হয় আমার আকিদাহ তো বরবাদ হয়ে গেল। আর নাজাতের জন্য আকিদাহ তো সহিহ থাকতেই হবে। আমার এখন কি করা উচিত। সর্বদা আমার আকিদাহ কে সহিহ রাখার জন্য করনীয় গুলো বলবেন প্লিজ। 

৫। বর্তমানে জেনেরাল লাইনের পড়াশোনার বেহাল দশায় পরিবারের মেয়েদের সেইখানে না পরিয়ে মাদ্রাসায় দেয়া কেমন সিদ্ধান্ত ? এবং মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করালে তাকে কিভাবে গাইড করা যার ফলে সে দ্বীন ভালো করে শিখে এবং দুনিয়ার যা প্রয়োজন তাও শিখে? আমাদের স্কুল কলেজে পরলে অবশ্য দুনিয়াও খুব শিখা জায়না। অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীরা পড়ালেখা করেনা এবং তারা মূলত ওয়েস্টার্ন কালচার নিয়েি পরে থাকে । 

উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।

জাযাকাল্লাহু খাইরান 

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত কোচিং-এ ভর্তির নিয়ম ছিলো যে সেখানে ভর্তি হলে ৮০০০ টাকা দিতে হবে।
আপনি তাদেরকে চার হাজার টাকা দেন,এক্ষেত্রে তাদের পড়ানোর প্রতি আন্তরিকতার অভাব এবং বাজে পড়ানোর জন্য আপনি ফুল ক্লাশ করেননি। গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা গুলোও দেননি।

এখন কথা হলো,আপনি যেহেতু উক্ত কোচিং-এর নিয়ম মেনেই সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন,আর তাদের সাথে আপনার টাকা কমানোর বিষয় আলোচনাও করেননি,সুতরাং এক্ষেত্রে আপনাকে আরো চার হাজার টাকা দিতে হবে।
নতুবা আপনি গুনাহগার হবেন,এটি বান্দার হক নষ্টের শামিল।

হ্যাঁ, যদি আপনি তাদের সাথে আলোচনা করে আপনার সব বিষয় তাদের বুঝিয়ে টাকা কমিয়ে নিতে পারেন,বা বাকি টাকার ক্ষেত্রে তাদের পাওনা ছেড়ে দিতে বলেন,আর তারাও সন্তুষ্টি চিত্তে এতে রাজী হয়,সেক্ষেত্রে এটি জায়েজ হবে।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তারা ঈমানহারা হবেননা।

যদি লটারির পুরুস্কার কোনো ৩য় পক্ষ দিয়ে থাকে,যারা লটারিতে অংশগ্রহণ করেছিলো,তাদের যদি চাঁদা না দিতে হয়ে,সেক্ষেত্রে উক্ত লটারি জায়েজ ছিলো।
পুরুস্কার গ্রহনও জায়েজ ছিলো।

আর যদি উক্ত লটারিতে যারা লটারিতে অংশগ্রহণ করেছিলো,তাদের চাঁদা না দিতে হয়েছিলো,সেক্ষেত্রে উক্ত লটারি হারাম।
পুরুস্কার গ্রহনও হারাম।

এখন উক্ত এসি গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে,বা বিক্রয় করে সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে বা নিজে ব্যবহার করে তার সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে,আপাতত অনলাইনে ক্লাশ চালিয়ে যাওয়া।
নিয়মিত ক্লাশ গুলি মনোযোগ সহকারে করলে ইনশাআল্লাহ দ্বীনের অনেক জরূরী জ্ঞান আপনার হাসিল হবে,ইনশাআল্লাহ। 

পরবর্তীতে সময় সুযোগ পেলে নৈশ মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারেন।

(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، قَالَ سَمِعْتُ مُجَالِدًا، يَذْكُرُ عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَّ خَطًّا وَخَطَّ خَطَّيْنِ عَنْ يَمِينِهِ وَخَطَّ خَطَّيْنِ عَنْ يَسَارِهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ فِي الْخَطِّ الأَوْسَطِ فَقَالَ " هَذَا سَبِيلُ اللَّهِ " . ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ (وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلاَ تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ) .

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দুটি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দুটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। (সূরাহ আনআম ৬: ১৫৩)
(ইবনে মাজাহ ১১)

★সর্বদা নিজ আকীদা বিশুদ্ধ রাখার জন্য নিম্নোক্ত আকীদা গুলি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিতে হবে।
এর বাইরে অন্য আকীদা হলে সেটি মানা যাবেনা।
এমন মনোভাব হয়ে গেলে আর কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ     


(০৫)
এক্ষেত্রে মহিলা মাদ্রাসায় দেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক।

আরো জানুনঃ- 

(তবে সুযোগ থাকলে এক্ষেত্রে অনাবাসীক হলে ভালো হয়,যাতে রাত্রে বাসায় এসে থাকতে পারে।
এটি উত্তম পদ্ধতি।) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...