আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
175 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম৷ কিছু প্রশ্ন আনেকদিন যাবত মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, ভয় হচ্ছে৷
১, নাটাক, মুভি/সিনেমা এসবে যে পুজা করে, শিরক মিছ্রিত কথা বলে, গান হয়। যেমনঃ মায়ের কসম , মাটির কসম, দেয়। আবার নমস্কার দেয়।  এসব যাবতীয় শিরক মিছ্রিত কথা, গান ইত্যাদি মুভিতে দেখা যায়। আবার ইলুমিনাতির বিভিন্ন সাইনও  দেখতে পাউয়া যায় মুভিতে/সিনেমাতে। আমি যদি এই মুভি/সিনেমা  দেখি তাহলে আমিও কি শিরক করে ফেললাম?
আবার, আমার ফোনের মাধ্যমে যদি কেউ এই শিরক মিছ্রিত মুভি দেখে বা গান শুনে তাহলে আমি কি মুশরিক হয়ে যাব?

২, অনেক সময়  বাহিরে গেলে বা আমার বাড়ির আশেপাশে শিরক মিছ্রিত গানবাজনা  চলে সাউন্ডবক্সে। আমার কান পর্যন্ত  স্পষ্ট শোনা যায়,  আমি যেহেতু শুনেছি তাহলে কি আমিও শিরক করে ফেল্লাম? আমি মুশরিক হয়ে গেলাম?

৩. আমার সামনে যদি কেউ শিরককারি কোনো  কথা বলে,কোনো হিন্দু বোন যদি নমস্কার জানায় তাহলে কি আমিও শিরককারি ব্যাক্তি হিসেবে গন্য হব/মুশরিক  হয়ে যাব?

৪, নামাজে বা অন্যান্য সময় আমার শিরক মিছ্রিত গান মনে আশে,আমি ইচ্ছাকৃত মনে করতে চাই না। একাই মনে আশে, প্রায় দেড় বছর যাবত ।এই শিরক মিছ্রিত গান মনে আশাতে আমি কি মুশরিক হয়ে যাব??
আগে অনেক বেশি মনে হত,সারাদিন ই মনে হত, মনে করতে চাইতাম না তবুও। এখন তার তুলনায় কম আলহামদুলিল্লাহ।

আফওয়ান এতগুলো প্রশ্ন করার জন্য প্লাস গুছিয়ে লিখতে না পারার জন্য।  দয়া করে প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিবেন ইন শা আল্লাহ, একটু সহজে। আমি যেভাবে প্রশ্ন করেছি সেভাবে উত্তর দিয়েন,একটু বুঝিয়ে বলবেন ইন শা আল্লাহ৷আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমার জিবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হেদায়েতের পথে রাখেন, যেন ইমান নিয়ে মৃত্যু গ্রহণ করতে পারি।প্রতিটি মুহুর্তে শয়তানের ধোকায়  পড়ে  পাপ করে যাচ্ছি।আল্লাহ যাতে আমাকে হেফাযতে রাখেন, যেমনটা আমার প্রিয় নবিকে রেখেছিলেন।
জাজাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (678,360 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা ভুল। 

শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-

وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.

নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-

اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.

আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-

اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনি যদি এই মুভি/সিনেমা  দেখেন, তাহলে আপনি শিরক করে ফেলেননি।
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে তওবা আবশ্যক। 
,
নিজ ফোনের মাধ্যমে যদি কেউ এই শিরক মিশ্রিত মুভি দেখে বা গান শুনে তাহলে এতটুকু দ্বারা আপনি মুশরিক হয়ে যাবেননা।
আপনার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে তওবা আবশ্যক। 

(০২)
এর দরুন আপনি শিরক করে ফেলেননি।
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
এর দ্বারা আপনি শিরককারি ব্যাক্তি হিসেবে গন্য হবেননা, আপনি মুশরিক হয়ে যাবেননা। 

(০৪)
এই শিরক মিশ্রিত গান মনে আসাতে আপনি মুশরিক হয়ে যাবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...