আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
382 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমি মোটামুটিভাবে দ্বীন প্র‍্যাকটিস করার চেষ্টা করি। কিন্তু একেকসময় একেকভাবে শয়তান আমাকে ওয়াসওয়াসা দেয়।যেমন:আগে আমার গান শোনার অভ‍্যাস ছিলো, আমি অনেক চেষ্টায় আলহামদুলিল্লাহ্ তা থেকে বেরিয়ে আসি, পরবর্তীকালে  রাগ সংক্রান্ত ওয়াসওয়াসা আমার মধ‍্যে চলে আসত,সেটা কনট্রোল করেছি আলহামদুলিল্লাহ্।এভাবে আমি যত গুনাহের বা ভুল ত্রুটির পথ বন্ধ করে দিচ্ছি,শয়তান নতুন নতুন গুনাহের দ্বার খুলে দিচ্ছে। ইদানিং আলহামদুলিল্লাহ্ সব ঠিক ঠাক হুট করে নামাজে এর প্রভাব পড়া শুরু করেছে। মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগে, হতাশ লাগে।  আল্লাহ্'র রহমত থেকে হতাশ হতে নেই জানি,কিন্তু মাঝে মাঝে হতাশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। এসব ওয়াসওয়াসা জনিত সমস্যা গুলোর পার্মানেন্ট কোনো সমাধান কি নেই? বা আমি কি করতে পারি।

২.নামাজের মধ‍্যে গ‍্যাসজনিত সমস্যা খুব হয়। নামাজে তখন আর মনোযোগ থাকে না। অনেক হুজুর বলেন যদি নাকে কোনো গন্ধ না আসে তাহলে নামাজ কন্টিনিউ করতে। এক্ষেত্রে মাসাআলা ঠিক কি হবে?

৩.এখনকার মা বাবা ছেলে মেয়ের ক‍্যারিয়ার নিয়ে বেশি ফোকাসড, কোনো কোনো পরিবারে দ্বীন মানা যুদ্ধ করার মতো।মা বাবা যদি দ্বীনদার না হয়, ছেলে মেয়ের বিয়ের ব‍্যাপারে যদি বেখেয়ালি থাকে, আর যদি মেয়ে দ্বীনদার হওয়া সত্ত্বেও এমন ছেলের সাথে বিবাহ দেয় যে বেদ্বীন, যার বুঝ নাই, এমতাবস্থায় মেয়ে কি করবে। Bcs cadre না হলে এখনকার মা বাবা মেয়েদের ও বিয়ে দিতে চায় না, আর বর্তমানে ফ্রি মিক্সিং যিনা যেভাবে ছড়ায় অনেক অবিবাহিত দ্বীনদার রাও এই বিষয়ে আটকে যায়,কি করা উচিত হুজুর!

1 Answer

0 votes
by (562,680 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
ইহ-পরকালীন সকল বিষয়ে ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার হুকুম প্রদান করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اسْتَعِينُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ، 
‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে থাকেন’ (বাক্বারাহ ২/১৫৩)। 

অনুরূপ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)-কে আদেশ করেন, ‘জেনে রেখো অবশ্যই সাহায্য ধৈর্যের সাথে রয়েছে’।

ইসতিক্বামাত তথা দ্বীনের উপর অটল থাকার ব্যাপারে ধৈর্য বিশেষ গুরুত্ব রাখে। ছাহাবায়ে কেরাম যে ঈমান ও আমলের ক্ষেত্রে দ্বীনের উপর অটল থাকতে সক্ষম হয়েছিলেন, তার বড় কারণ ছিল ধৈর্য।

মহান আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ، 

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ধৈর্যধারণ কর। পরস্পরে দৃঢ় থাক এবং সদা প্রস্ত্তত থাক। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (আলে ইমরান ৩/২০০)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি ধৈর্যধারণ করবেন,আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করবেন,নিয়মিত নামাজ শরীয়তের বিধান মেনে চলবেন, আপনার এলাকায় দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের উদ্যোগে মহিলাসের তা'লিম হলে নিরাপদ হলে সেখানে নিয়মিত যাবেন,নেককার মহিলাদের সাথে বেশি বেশি উঠাবসা করবেন,হতাশ হবেননা।
ধৈর্যধারণ করবেন,ইনশাআল্লাহ সফলতা আপনার পদচুম্বন করবে।

নিম্নোক্ত দোয়া করতে পারেনঃ-
ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, হাসান বাছরী (রহঃ) দো‘আ করতেন,
 اللهم أنت ربنا، فارزقنا الاستقامة
 ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের রব। তুমি আমাদেরকে তোমার অটল থাকার তাওফীক দাও’।
(ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা হা-মীম সাজদা ৩০ আয়াত।)
,
★আলী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাকে বলেন, তুমি বল,
اللَّهُمَّ اهْدِنِىْ وَسَدِّدْنِىْ  

‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সুপথ প্রদর্শন কর এবং আমাকে সরল পথে পরিচালিত কর। আর তুমি সুপথের সংকল্প কর এবং সঠিক পথে স্থির থাক, যেভাবে তীর তার লক্ষ্যে স্থির থাকে।
(মুসলিম হা/২৭২৫; মিশকাত হা/২৪৮৫।)

আপনার মন অশান্তিতে আছে।এ জন্য আপনি নিয়মিত ধারাবাহিক আল্লাহর যিকির করতে থাকুন-দেখবেন মন শান্ত হবে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।(সূরা রা'দ-২৮)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নিম্নোক্ত ফতোয়া অনুপাতে আপনি নামাজ পড়ার চেষ্টা করবেন।

(০২)
নামাজের মধ্যে আপনি যদি বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হোন,বা বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ হয়/গন্ধ বের হয়,সেক্ষেত্রে আপনি নামাজ ছেড়ে দিয়ে কাহারো সাথে কথাবার্তা না বলে সোজা অযু করে এসে যেখানে নামাজ রেখে গিয়েছিলেন,সেখান থেকে শুরু করবেন।
পুনরায় নতুন করে শুরু হতে নামাজ পড়তে হবেনা। 

★আর যদি আপনি নামাজের মধ্যে বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন,বা বায়ু বের হওয়ার আওয়াজও না হয়/গন্ধও বের না হয়,সেক্ষেত্রে এটিকে স্রেফ ওয়াসওয়াসা ধরে পাত্তা দিবেননা।
নামাজ চালিয়ে যাবেন। 

(০৩)
এক্ষেত্রে মেয়ে বিবাহের পরবর্তী ছেলের পরিবারে গিয়ে পূর্ণ পর্দার সুযোগ পাবে কিনা,সেই ব্যাপারে বিবাহের আগেই ছেলেকে প্রশ্ন করে নিশ্চিত হবে।

পূর্ণ পর্দার সুযোগের নিশ্চয়তা না পেলে সেই ছেলের  সাথে বিবাহ বসবেনা।
তারপরেও পারিবারিক চাপে বিবাহ হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে বিবাহের পর স্বামীকে বুঝাতে হবে,প্রয়োজনে তাবলিগে বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে পাঠিয়ে তাকে দ্বীনদার বানানোর চেষ্টা করতে হবে। 
আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।

পূর্ণ দ্বীন মানার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...