আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
70 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
edited by

১. আপন দাদা কি মাহরাম? আপন দাদার সাথে কি বিয়ে হয়? অনেকে আপন দাদাকে নিয়ে বিয়ের ব্যাপারে মজা করে - এটা কি গুনাহ?

২. আপন দাদার সাথে বিয়ে করে ফেললে কি অন্য কারো বিয়ে ভেঙে যায়? হুরমত মুসাহারাত এর মাধ্যমে?

৩. টিভিতে নাটকে অভিনয়ে একে অপরকে বিয়ে করায়- এতে কি সত্যিই বিয়ে হয়ে যায়?

৪. আইফতোয়াতে একজন বোন পরিচয় গোপন রেখে প্রশ্ন করতে চাই। সেক্ষেত্রে কি সে ছদ্মনাম কিংবা ফেইক কোন নাম দিয়ে একাউন্ট করলে গুনাহ হবে?

৫. আমি কি আমার স্টুডেন্টদের প্রতিদিন নতুন নতুন আমলের অভ্যাস গঠনে জোর দান করতে পারি? অর্থাৎ, স্টুডেন্টদের একটি ফেইসবুক গ্রুপ আছে, সেই গ্রুপে একটি আমলের কথা উল্লেখ করলাম। প্রত্যেকে সেই আমল করে গ্রুপে জানাবে। উল্লেখ্য, গ্রুপের সবাই মেয়ে। আমি পুরুষ।

৬. মাসআলা বর্ননার ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন করেছিলামঃ আমি আইফতোয়া তে নিয়মিত মাসআলা পড়ি৷ মাসআলা পড়তে আমার ভাল লাগে। এখন কেউ কোন মাসআলার ব্যাপারে জানতে চাইলে আমি যদি ভুল করে ভুল বর্ণনা দিয়ে ফেলি তাহলে কি ঈমান চলে যাবে? আমার গুনাহ হবে? আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সঠিক বলার। যদি সামান্য সন্দেহও হয় তাহলে আইফতোয়াতে চেক করে দেখি। আর মাসআলা আমার অনেক মনে থাকে। আমি তো কখনোই নিজ থেকে মাসআলা দিবো না, যেহেতু আমি মুফতি নয়। আমি মাসআলা মুখস্থ করে কি তা প্রচার করতে পারবো?আমাদের আশে পাশে মুফতি না থাকায় অনেকেই নানা বিষয়ে অজ্ঞ।

উত্তরে লিখেছিলেনঃ-

"প্রথমেই বলবো যে আপনি কোনোভাবেই কাউকে মাসয়ালা বলবেননা। আপনাকে কোনো প্রশ্ন করা হলে আপনি সেই বিষয়ক জবাব খুজে পেলে জবাব তাদেরকে পড়তে দিবেন।

নিজে কিছু বলবেননা। বা সেটি হুবহু পড়ে শোনাতে পারেন।

,প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি ভূল করে ভুল বর্ণনা দিয়ে ফেলেন, তাহলে ঈমান চলে যাবেনা।

আপনার গুনাহ হবে।

ঐ ব্যাক্তি আপনার ভূল মাসয়ালা শুনে আমল করলে তার দায়ভাড় আপনার উপর বর্তাবে।"

আমি আইওএম এর স্টুডেন্ট। আমাদের ফিকহ বিষয়ে অনেক কিছুই সেখানো হয়। এখন যদি কারো রক্ত গড়িয়ে পরে এটা যে নাপাক আমি কি বলতে পারবো না? আবার আমাদের এখানে নাপাক কাপড় ধোয়ার নিয়ম অনেকেই জানেন না। আবার, ঐদিন এক লোক আমাকে বলেছিলঃ জগড়া অবস্থায় তালাক হয় না। আবার, মানুষ মানুষের নামে কসম করে। আবার, এন্টি ফি দিয়ে খেলার আয়োজন করে। এখন এসব বিষয়ে আমি কি তাদেরকে প্রাথমিক ধারণা দিতে পারব? আমি সাধারণত না জেনে কোন মাসআলা বর্ননা করি না। এখানে তো আমি ফতোয়া দিচ্ছি না, শুধু এই ব্যাপারে মাসআলা প্রদান করছি।

৭. একজন ব্যক্তি রিলেশন এর মাধ্যমে বিয়ে করেছিল। পরবর্তীতে বাড়ির চাপে বাধ্য হয়ে সে কোর্টের মাধ্যমে ডিভোর্স দেয়। সেই ছেলে বাড়ির উপর নির্ভরশীল তাই তার আব্বা আম্মা প্রচুর চাপ প্রদান করে। পরবর্তীতে, ১ বছর পর আবার সেই মেয়েকেই বিয়ে করে সংসার করে। সেই মেয়ের অন্য কোন জায়গায় বিয়ে হয়নি মধ্যবর্তী সময়ে। এমতাবস্থায়, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী তাদের সংসার কি হালাল হচ্ছে? যদি আপনি বলেন হালাল হচ্ছে তাহলে আমি উনাকে এই ব্যাপারে সতর্ক করবো না। আর যদি হারাম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে উনাকে বলবো কোন মুফতি সাহেবের সাথে দ্রুত পরামর্শ নিতে।

আমাদের এলাকায়, ডিভোর্স হয়ে গেলেও হুজুরে গোপনে নাকি তওবা করিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে, আমার এই ব্যাপারে করণীয় কি?

৮. কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে এই নিয়ম এ হবেঃ https://quranerjyoti.com/নাপাক-কাপড়-সাবান-দিয়ে-একবার-ধুয়ে-নিলে-তা-পাক-হয়ে-যায়-কি/

উনি হানাফি মাজহাবের।

1 Answer

0 votes
by (678,560 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
https://www.ifatwa.info/2722 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে,
নারীদের মাহরাম পুরুষ।
১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।
৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।
৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।
৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সূরা আন-নূর-৩১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
দাদা, পরদাদা সকলেই মাহরামের অন্তর্ভুক্ত, সুতরাং দাদার সাথে বিবাহ হবেনা।

(০২)
আপন দাদার সাথে বিয়ে করে ফেললে হুরমতে মুসাহারাত এর দরুন অন্য কাহারো বিয়ে ভেঙ্গে যায়না।

(০৩)
ঐ মেয়েটি অবিবাহিতা হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে ইজাব কবুল আর দুইজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত থাকলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়।

তবে ঐ মেয়েটি বিবাহিতা হলে মুভি,নাটকে বিয়ের অভিনয়ের দরুন বিবাহ শুদ্ধ হয়না।

(০৪)
ছদ্মনাম কিংবা ফেইক কোন নাম দিয়ে প্রশ্ন করার অনুমতি আছে কিনা,জানার জন্য IOM কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ রইলো। 
তারা অনুমতি প্রদান করলে গুনাহ হবেনা।

(০৫)
যেহেতু গ্রুপের সকলেই মেয়ে,আর আপনি পুরুষ। 
সুতরাং এক্ষেত্রে তারা বালেগাহ হয়ে থাকলে ফিতনার আশংকার দরুন এভাবে আপনার জন্য তাদেরকে আমলের পরামর্শ দেয়া উচিত নয়।

এটি শরীয়ত সমর্থিত পন্থা নয়।

(০৬)
এক্ষেত্রে নিজের থেকে বাড়িয়ে কিছু বলবেননা।  মাসয়ালাটি সেটি হুবহু পড়ে বা হুবহু মুখস্থ করে শোনাতে পারেন।

(০৭)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে, 
একজন ব্যক্তি রিলেশন এর মাধ্যমে বিয়ে করেছিল। পরবর্তীতে বাড়ির চাপে বাধ্য হয়ে সে কোর্টের মাধ্যমে ডিভোর্স দেয়। 

★এখানে উক্ত ব্যাক্তি কয় তালাক দিয়েছিলো?
যদি এক তালাক বা দুই তালাক বা তালাকের কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করে থাকে,সেক্ষেত্রে তাদের এখনকার সংসার  হালাল। 

আর যদি সেই সময়ে তিন তালাক দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে মেয়েটির যেহেতু মাঝে অন্য কোনো ছেলের সাথে বিবাহ হয়নি,সুতরাং শরয়ী হালালাহ না হওয়ায় তাদের 
পরবর্তী বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।  তাই এখনকার সংসার  হালাল নয়,বরং হারাম। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৮)
অদৃশ্যমান নাপাকি লাগলে শুধু একবার ধোয়ার দরুন  কাপড়/চাদর পাক হবেনা।
তিনবার ধোয়া লাগবে,এবং প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নিতে হবে। 

হ্যাঁ যদি প্রবাহিত পানিতে (নদিতে/সরাসরি ট্যাপে) ধোয়ায় হয়,সেক্ষেত্রে নাপাকি চলে যাওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হলে কাপড়/চাদর পাক হয়ে যাবে।
সেক্ষেত্রে তিন বার ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...