আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
177 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার পরিবার দ্বীন বুঝে না, বুঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু সবাই মিলে আমাকে ধমক ও বিদ্রুপ করে। রেফারেন্স বা আয়াত দেখালে তাদের মাথা আরো গরম হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমাকে বিয়ের জন্য ছবি দিতে বাধ্য করে। আমি ছবি দিতে চাই না। ছেলে নাকি দ্বীন প্র‍্যাক্টিস করে অথচ আমার বায়োডাটা পছন্দ করে বায়োডাটা নিয়ে যায়, নিজের বায়োডাটা দেয় না, আমার ছবি দেখে পছন্দ হলে তারপর তার মাকে দেখাবে। আমার বাবাকে বুঝানোর পরেও ছবির জন্য জোর দেয় আমাকে, বাধ্য হলে শুধু মুখমন্ডল দেখা যায় এমন ছবি দিয়েছি, তাতেও আমার বাবা অসন্তুষ্ট, এমন ছবি দিলে পাত্র পছন্দ করবে না তাই ইচ্ছা করে দিয়েছি, বিয়ে না করার জন্য এমন করছি এইটা তার ধারনা, তিনি সেটা প্রিন্ট করেছে, আমার যতদুর ধারনা তিনি ঘটককে দিবেন, সরাসরি ছেলেকে দিবেন না। আমি ভেংগে পড়ছি ওস্তাজ, আমার কথা আমার পরিবারে কেউ বুঝে না। তারা ভাবে আমি কোন হাইডেন কমিউনিটির সাথে যুক্ত যারা আমাকে এভাবে পরিচালিত করছে, আমার মাদ্রাসার পড়াও কন্টিনিউ করতে দেয় না। হেডফোন ইউজ করতে দেয় না ফলে তালিমেও জয়েন হতে পারি না। আমার ব্যাগ, বই খাতা সব চেক করে। আগে নিজের একটা রুম ছিল এখন সেটাও দেয় না। এই ছবি প্রিন্ট করাতে দোকানদার দেখেছে, ঘটক দেখবে, সেই পাত্রও দেখবে না জানি আরো কাকে কাকে দেখাবে, আল্লহ মালুম।
১.এইসবের ভাগীদার কি আমি হবো!? আল্লহ আমাকে কিভাবে মাফ করবেন?
২. এইসব পরিবেশ থেকে আমি নিজেকে কিভাবে শান্ত রাখবো? আমি খুব বেশী ভেংগে পড়ছি, আল্লহর সাহায্য চাই। জানি না আল্লহ কি পরিক্ষা নিচ্ছেন। আমার ও আমার পরিবারের জন্য দুয়ার অনুরোধ রইলো।

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পূর্বে পাত্রিকে দেখা জায়েজ আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ 
تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে।
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫ মিশকাত ৩০৯৮।)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمُ الْمَرْأَةَ فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلٰى مَا يَدْعُوهُ إِلٰى نِكَاحِهَا فَلْيفْعَلْ»

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, আর যদি তার পক্ষে এমন কোনো অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা বিবাহের পক্ষে যথেষ্ট, তখন তা যেন দেখে নেয়। 

(আবূ দাঊদ ২০৮২, সহীহাহ্ ৯৯, আহমাদ ১৪৫৮৬, ইরওয়া ১৭৯১, সহীহ আল জামি‘ ৫০৬।)

★ইসলামে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে,ছবির মাধ্যমে নয় ।
কারণ- একেতো বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা, ব্যবহার ও
আদান-প্রদান শরীয়তে নিষিদ্ধ ।
তাছাড়া ছবিতে বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি যাচাই সম্ভব নয় ।
অধিকন্তু পাত্রের নিকট ছবি পাঠানোর দ্বারা বারবার তার জন্য বেগানা নারীকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।
যেটি নাজায়েজ। 
 
অথচ বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্র পাত্রীকে বারবার
দেখার বৈধতা নেই ।
তাছাড়াও এ ছবি পাত্র ব্যতীত অন্যকোন পুরুষও দেখতে পারে ।
অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা জায়িয নয় । এ সকল কারণে ছবির মাধ্যমে পাত্রী দেখা বা
পাত্রীর ছবি পাত্রের নিকট পাঠানো ইসলামের
দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
{সূত্রঃ রদ্দুল মুখতার, ৬ : ৩৭০}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঘটককে ছবি দেয়া আপনার পরিবারের জন্য কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে যেহেতু পারিবারিক চাপে ছবি দিতেই হয়েছে, সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন,ও ইস্তেগফার পাঠ চালিয়ে যাবেন।

এভাবে ছবির মাধ্যমে নয়,বরং আপনি আপনার বাবার মাধ্যমে পাত্রকে সরাসরি দেখতে আসার আহবান জানাবেন।

(০২)
অবশ্যই দোয়া থাকবে,আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য পূর্ণ দ্বীনের পরিবেশে থাকা সহজ করে দিন,উল্লেখিত সমস্যার দ্রুত সমাধান করে দিন,আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...