আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ হুজুর।
১) আমার বিগত অনেক কাযা রোজা আছে। থাকার জন্য চেষ্টা করি। কম কম করে থাকা হয়। শারীরিক দূর্বলতা ও বিভিন্ন অজুহাতে সব শেষ করতে পারিনি। আমি এগুলো নিয়ে চিন্তিত। একবার ওমরার ব্যাপারে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে হায়েজ বন্ধের ঔষধ সেবন করেছি। ঔষধটা অনিয়মিত হায়েজের জন্যও ব্যবহার হয় বলে জানলাম। খাওয়া বন্ধ করলে হায়েজ চালু হয়ে যায়। প্রায় সময় রমাদানের আগে থেকে আমার হায়েজ নিয়ে পেরেশানে পড়ি। এদিকে আমার কাযা রোজা বেড়ে যাচ্ছে। রোজা যা পূর্ণ করি তা আবার বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে অনেক অপারগ হয়ে চিকিৎসকের দেয়া ঔষধটা এবারও খাচ্ছি যাতে রোজা রাখতে পারি। কারণ আগের কাযা রোজা গুলো আগে পূর্ণ করতে চাই। এগুলো নিয়ে খুব অসহায় লাগে আমার।

এখন ঔষধ কি খেতে পারবো? আমার কি গুনাহ হবে? এমন অপারগতায় আমার কি করণীয়?

২)  ওজুর পর মুখের দাগের ঔষধ(মলম) ব্যবহার করার পর কি কুরআন স্পর্শ ও তিলাওয়াত করা যাবে? বা কাউকে বুঝায় দেয়া যাবে?
আর যদি তিলাওয়াত করা না যায় এতে কি ওজু নষ্ট হয়?

1 Answer

0 votes
by (683,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا عَلِيٌّ، - يَعْنِي ابْنَ مُسْهَرٍ - عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةِ، أَنَّ امْرَأَةً، سَأَلَتْ عَائِشَةَ أَتَقْضِي الْحَائِضُ الصَّلاَةَ إِذَا طَهُرَتْ قَالَتْ أَحَرُورِيَّةٌ أَنْتِ كُنَّا نَحِيضُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ نَطْهُرُ فَيَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلاَ يَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّلاَةِ .

আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... মুআযা আদাবীয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক মহিলা আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করল যে, ঋতুবতী মহিলা যখন ঋতু থেকে পবিত্র হবে তখন কি সে সালাত কাযা করবে? তিনি বললেন, তুমি কি হারুরী গোত্রের মহিলা? আমরা তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ঋতুবতী হতাম এবং যখন পবিত্র হতাম তখন আমাদেরকে সাওম কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হল কিন্তু সালাত কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হত না।
(নাসায়ী শরীফ ২৩২০।)

https://ifatwa.info/35487/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
ঔষধ খেয়ে মাসিক বন্ধ করে রোযা রাখলে রোযা হয়ে যাবে।  তবে মেয়েদের স্বাভাবিক অবস্থার বিরুদ্ধে এ নিয়মে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই ট্যাবলেট না খাওয়াই উত্তম। 

যদি কোন মহিলা রমজান আসার আগেই এবং হায়েজ শুরু হওয়ার আগে ওষুধ খেয়ে তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে তার জন্য রোযা রাখতে হবে। কারণ, এতে করে তার উপর রোযা না রাখার কোন কারণ বিদ্যমান থাকছে না। তাই তার জন্য রোযা রাখা আবশ্যক হবে।
কিন্তু যদি রমজান চলে আসে, আর রক্ত জারি হয়ে যাওয়ার পর ওষুধ খেয়ে বন্ধ করে দেয়, তাহলে হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা কমপক্ষে ৩ দিন পর্যন্ত রোযা রাখতে পারবে না। এর পর থেকে রোযা রাখা আবশ্যক। যেহেতু হায়েজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর হায়েজ শুরু হলে এর সর্বনিম্ন সময়সীমা হল তিন দিন। তাই হায়েজ শুরু হতেই ওষুধ খেয়ে বন্ধ করে ফেললেও ধরা হবে হায়েজ জারী আছে তিনদিন পর্যন্ত। তিন দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলে হায়েজ বন্ধ হয়ে গেছে হিসেবে রোযা রাখা আবশ্যক।  {কিতাবুল ফাতওয়া-৩/৪০৫}

‘হায়েজা মহিলার জন্য উত্তম হলো নিজের স্বাভাবিক অবস্থার ওপর থাকা। আল্লাহ তাআলা তার ওপর যে ফয়সালা করেছেন, তার ওপর সন্তুষ্ট থাকা। এমন কিছু ব্যবহার না করা, যার দ্বারা রক্ত বন্ধ হয়ে যায়। বরং হায়েজ অবস্থায় রোজা ছেড়ে দেয়া। অতঃপর রোজাগুলোর কাজা আদায় করে নেয়া। কেননা, উম্মুল মুমিনিন ও আকাবির মহিলারা এমনটিই করেছেন। আর যদি ওষুধ দিয়ে রক্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলেও রোজা হয়ে যাবে।’(আপকে মাসায়েল : খণ্ড ৩, পৃ. ২০৭)

وفی الفقہ علی المذاھب الاربعہ:
لا یجوز للمرأۃ أن تمنع حیضاً أو تستعجل إنزالہ إذا کان یضر صحتہا؛ لأن المحافظۃ علی الصحۃ واجبۃٌ۔
(کتاب الطھارۃ، ج: 1، ص: 124)
সারমর্মঃ
মহিলাদের উপর জায়েজ নেই,তাদের হায়েজ বন্ধ রাখা।
যখন এটি তাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়।
কেননা শরীর হেফাজত করা ওয়াজিব। 

قال في الإنصاف: يجوز شرب دواء مباح لقطع الحيض مطلقاً، مع أمن الضرر، على الصحيح من المذهب
সারমর্মঃ
হায়েজ বন্ধ করার জন্য ঔষধ খাওয়া সাধারণত  জায়েজ,তবে ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।

আরো জানতে উক্ত লিংক দ্রষ্টব্য।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হায়েজ বন্ধের ঔষধ খেলে আপনার স্বাস্থের জন্য যদি কোনো ক্ষতিকর না হয়,তাহলে আপনি হায়েজ বন্ধ হওয়ার ঔষধ খেতে পারবেন।
তবে না খাওয়াই ভালো। 

এক্ষেত্রে ঔষধ খেলে উপরোক্ত ফতোয়ার কিতাবের ফতোয়া ফলো করতে হবে।      

(০২)
হ্যাঁ এক্ষেত্রে কুরআন স্পর্শ ও তিলাওয়াত করা যাবে। বা কাউকে বুঝিয়ে দেয়া যাবে,এতে কোনো সমস্যা নেই।

এতে অযু নষ্ট হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...