আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
224 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১/ অন্তরের দিক থেকে মা বাবা দুনিয়াদার প্রচন্ড মাত্রায়। তাদের এই নেগেটিভ প্রভাব আমার উপরও পড়ে খুবই মারাত্মকভাবে।  আমি যখন নিজ থেকে তাঁদের খেদমত করার জন্য এগিয়ে যাই, তখন তাঁরা আমার উপর সন্তুষ্ট হয়। তাঁরা সন্তুষ্ট হলে দেখা যায়, আমার মধ্যে তাঁদের এই নেগেটিভ প্রভাবটা চলে  আসতে যাচ্ছে- মুনাফিক্বি দেখতে পাই নিজের মধ্যে। যেমন- অন্তরটা উড়ু উড়ু হয়ে যায়, নামাজে অনীহা চলে আসে, ধর্মকর্মের প্রতি মন উঠে যেতে লাগে, দুনিয়াটাকেই সব মনে হয়। এজন্য আমি তাঁদের সন্তুষ্ট করার জন্য নিজ থেকে এগিয়ে গিয়ে কোন খেদমত করি না বর্তমানে। যদি তারা কোন কাজ করে দিতে বলে, তখনই করার চেষ্টা করি। এর বাইরে তাদের সাথে কোন অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বা সখ্যতা না করার চেষ্টা করি। যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলি। এতে তারা কষ্ট পান। কিন্তু তাদের সন্তুষ্টের চেষ্টা করলে এদিকে আমার অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। আমার রব্ব হেফাজত করুন।
প্রশ্ন হলো- আমি নিজের দ্বীন ইমানের হেফাজতে আমার বাবা মায়ের থেকে যে দূরত্ব বজায় রেখে চলছি, তা কি ঠিক হচ্ছে?
আমি সারাজীবনই দেখেছি এটা নিজের মধ্যে যে, তাদের খেদমতে নিয়োজিত হলে আমি দুনিয়া মুখী হয়ে যাই। আমার রব্ব হেদায়েত দেবার পরে সেটা আরো একদম ভালোভাবেই বুঝতে পারছি।

২/ বিতির স্বলাত বা যেকোন ফরজ, সুন্নাত স্বলাতে যদি ওয়াসওয়াসা বশত খামোখাই  বিভ্রান্ত সৃষ্টি হয় যে,একটা ওয়াজিব আদায় হয়নি যেমন- সূরা ফাতিহা পড়া হয়নি, কিন্তু তার অন্তর থেকে স্পষ্ট মনে আছে যে সে পড়েছে, এটা শুধুই বিভ্রান্তি, এমন অবস্থায় সে নামাজের মধ্যেই বিভ্রান্তির জন্য শেষ বৈঠকে সাহু সেজদা আদায় করে অনর্থক,  তার স্বলাতটা হবে কি?

৩/ বাবা যদি এইকথা দিয়ে ছেলের জন্য বউ আনে যে, ছেলে যেহেতু ইনকাম করে না তেমন চাকরি পায় না বিধায়, তাই ছেলের বউকে সে চালাবে- আর এই রকম ওয়াদা করে ছেলের জন্য বউ আনে; বউ আনার পরে ছেলের বউয়ের খরচ দিতে গিয়ে নিজের মেয়েকে বঞ্চিত করে খোরপোষ দেয়া থেকে, এটা কি বাপের জন্য বৈধ হবে?
এহেন অবস্থায় মেয়ের খোরপোষ পাবার অধিকার আগে নাকি ছেলের বউকে দেয়া আগে?
ছেলের বউকে দিলে কি মেয়ের হক্ব নষ্ট হচ্ছে না?

৪/ বাবা যদি ছেলের বউকে মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছি বলে ঘোষণা দেয়, তবে কি শরীয়ত অনুযায়ী  সে মেয়ের অধিকার পাবে?
৫/ ঘরের বিবাহিত মেয়ে যদি ঘরে বেড়াতে আসে, তবে তার নিত্যপ্রয়োজনীয় যা লাগে বেড়াতে এসে যেমন-কোন খাবার কিনে খাওয়া, নাস্তা কিনে খাওয়া, এসবের খরচ কি তার বাবা মাকে দিতে হবে? যদি বাবা মা না দেয়, তবে কি মেয়ের হক্ব নষ্ট হবে?
by (0 points)
খুবই জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন 

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم 

আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।
.
হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)
.
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি এর দ্বারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না হয়,এবং মা বাবার হক,তাদের আদেশ মানা হয়,তাহলে জায়েজ আছে।
প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়ের ভিত্তিতে এটি আপনার জন্য ঠিক হচ্ছে।
,
(০২)
এতে নামাজ হয়ে যাবে,নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা। 
তবে এক্ষেত্রে কিছু ইসলামী স্কলারদের ভিন্ন মত রয়েছে।
তাই এভাবে অনার্থক সেজদায়ে সাহু আদায় করা ঠিক নয়।
,
ওয়াসওয়াসে কে মন থেকে  একেবাড়ে ঝেড়ে ফেলুন।
আল্লাহর কাছে পানাহ চান।
বেশি বেশি  
لا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم 
পড়বেন।
,
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
وَلَوْ ظَنَّ الْإِمَامُ السَّهْوَ فَسَجَدَ لَهُ فَتَابَعَهُ فَبَانَ أَنْ لَا سَهْوَ فَالْأَشْبَهُ الْفَسَادُ لِاقْتِدَائِهِ فِي مَوْضِعِ الِانْفِرَادِ.
(قَوْلُهُ: فَالْأَشْبَهُ الْفَسَادُ) وَفِي الْفَيْضِ: وَقِيلَ لَا تَفْسُدُ وَبِهِ يُفْتِيَ. وَفِي الْبَحْرِ عَنْ الظَّهِيرِيَّةِ قَالَ الْفَقِيهُ أَبُو اللَّيْثِ: فِي زَمَانِنَا لَا تَفْسُدُ لِأَنَّ الْجَهْلَ فِي الْقُرَّاءِ غَالِبٌ. اهـ. وَاَللَّهُ أَعْلَمُ.
( كتاب الصلاة، باب الإمامة، فُرُوعٌ اقْتِدَاءُ مُتَنَفِّلٍ بِمُتَنَفِّلٍ وَمَنْ يَرَى الْوِتْرَ وَاجِبًا بِمَنْ يَرَاهُ سُنَّةً، ١ / ٥٩٩، ط: دار الفكر)
সারমর্মঃ সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব না হওয়া সত্ত্বেও কেহ যদি আদায় করে,তাহলে তার নামাজ ফাসেদ হবেনা।
    
(০৩)
বিবাহের আগ পর্যন্ত বাবার উপর তার ভরনপোষণ এর  খরচ দেওয়া ওয়াজিব থাকবে। 
আরো জানুনঃ 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুত্রবধূর ভরনপোষণ এর দায়ীত্ব আপনার পিতার উপর নয়,আপনার ভরনপোষণ আপনার পিতার উপর ওয়াজিব। 
এটি আদায় না করলে আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। 
,
(০৪)
প্রথমে আমরা একটি আয়াত আর একটি মাসয়ালা জেনে নেই।
 
★কোরআনে কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর আল্লাহ তোমাদের পোষ্যপুত্রদের তোমাদের পুত্র করেননি, এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ সঠিক কথা বলেন এবং সরল পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকো। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সংগত বিধান। যদি তোমরা তাদের পিতৃপরিচয় না জানো, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে।’ (সুরা আহযাব : ৪-৫)

★লালন-পালনকারীর মৃত্যুর পর ওই সন্তান উত্তরাধিকার হিসেবে তার সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। লালন-পালনকারীরাও ওই সন্তানের ওয়ারিশ হবে না। হ্যাঁ, লালনকারী জীবদ্দশায়ই পালক সন্তানকে সম্পত্তি থেকে দান করতে পারবেন বা মৃত্যুর পর তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ দেওয়ার অসিয়ত করে যেতে পারবেন। শরিয়তের বিধান অনুযায়ী এই অসিয়ত কেবল এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকেই কার্যকর হবে। অনুরূপ সন্তানের আসল মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজন থেকে অবশ্যই সে উত্তরাধিকার সম্পত্তির অধিকারী হবে। তাকে পালক দেওয়ায় তার উত্তরাধিকার সম্পত্তির অধিকার খর্ব হয়নি। (তাকমিলাতু ফাতহিল কাদির : ১০/১২২)

★সুতরাং ইসলামী বিধান অনুযায়ী প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত    ""বাবা যদি ছেলের বউকে মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছি বলে ঘোষণা দেয়, তাহলে শরীয়ত অনুযায়ী  সে মেয়ের অধিকার পাবেনা।
সে কোনো ভাবেই মেয়ের স্বীকৃতি পাবনা।

(০৫)
এসব প্রয়োজনের খরচ স্বামীর  উপরেই ওয়াজিব।
আমাদের দেশে নিজ পিতা এসব খরচ আদায় করে।
উহা ইহসান মূলক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...