আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
১। আমরা জানি, স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততিও রিযকের অন্তর্ভুক্ত। যারা ইচ্ছে করেই অবিবাহিত থাকে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করে, তারা কি ইচ্ছে করেই এই রিযক থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখে? অর্থাৎ এইক্ষেত্রে স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততি পাওয়া-না পাওয়াটা মানুষের কর্মফলের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় নাকি মায়ের পেটে থাকাকালীন নির্ধারিত রিযকের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় যে, সে স্ত্রী এবং সন্তান পাবে নাকি পাবে না?
২। রিযক প্রাপ্তির বিষয়টা পুরোটাই কি তাকদীরের নির্ধারণের সাথে সম্পর্কিত নাকি মানুষের কর্মপ্রচেষ্টার উপর ভিত্তি করে রিযকের পরিমাণ নির্ধারিত হয়? যেমনঃ কেউ ইচ্ছে করেই একাধিক স্ত্রী এবং একাধিক সন্তান গ্রহণ থেকে বিরত থেকে কি এটা বলতে পারে যে, রিযকে ছিল না তাই সে একাধিক স্ত্রী এবং সন্তান গ্রহণ করতে পারেনি? কিংবা অসুস্থতার সময় কেউ ইচ্ছে করেই ওষুধ সেবন থেকে বিরত থেকে কি এটা বলতে পারে যে, রিযকে ছিল না তাই সে ওষুধও গ্রহণ করেনি এবং সুস্থও হয়নি?
৩। শুধু নেককার জীবনসঙ্গীকেই রিযক বলা হয় কিন্তু বদকার জীবনসঙ্গীকে রিযক বলা হয় না কেন? বদকার হলেও তো সেই জীবনসঙ্গী ব্যক্তির নিজের ভাগেরই অংশ।
প্রশ্নগুলোর উত্তর পয়েন্ট আকারে আলাদা করে দিলে অনেক উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یَمۡحُوا اللّٰہُ مَا یَشَآءُ وَ یُثۡبِتُ ۚۖ وَ عِنۡدَہٗۤ اُمُّ الۡکِتٰبِ ﴿۳۹﴾ 

আল্লাহ যা ইচ্ছে তা মিটিয়ে দেন এবং যা ইচ্ছে তা প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং তারই কাছে আছে উম্মুল কিতাব।
(সুরা রা'দ ৩৯)

এখানে (أُمُّ الْكِتَابِ) এর শাব্দিক অর্থ মূলগ্রন্থ। এর দ্বারা লওহে-মাহফুষ বুঝানো হয়েছে, যাতে কোনরূপ পরিবর্তন-পরিবর্ধন হতে পারে না। চাই সেটা শরীআত সম্পর্কিত হোক অথবা তাকদীর সম্পর্কিত হোক। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা তার শরীআতের মধ্য থেকে যা ইচ্ছা তা রহিত করেন। আর যা ইচ্ছে তা নাযিল করেন। কিন্তু মূলটি উম্মুল কিতাব তথা লাওহে মাহফুযে আছে। সেখানে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। অনরূপভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির তাকদীর সম্পর্কে লাওহে মাহফুজে যা লিখা আছে তাতে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। [ইবন কাসীর]

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- 
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)

★ তাকদীর দু’ভাগে বিভক্ত। 
১. তাকদীরে মুবরাম ২. তাকদীরে মাআল্লাক।
তাকদীরে মুবরাম হল, যা কখনোই পরিবর্তন হয় না। অনাদী থেকে আল্লাহর কাছে যা লিপিবদ্ধ আছে তাই সংঘটিত হবে।
আর তাকদীরে মুআল্লাক হল, যা ফেরেশেতাদের খাতায় লিখা থাকে। এই প্রকারের তাকদীর দোয়া বা বিভিন্ন কর্মের মাধ্যমে পরিবর্তন হতে পারে। কুরআন হাদিসে তাকদীর পরিবর্তনের ব্যাপারে যা বলা হয়েছে, তা এই প্রকার তাকদীরের ব্যাপারেই।

হযরত সালমান ফারসি রাযি থেকে বর্ণিত,

سَلْمَانَ رضي الله عنه ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَرُدُّ القَضَاءَ إِلَّا الدُّعَاءُ، وَلَا يَزِيدُ فِي العُمْرِ إِلَّا البِرُّ

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তাকদীরকে দু'আ ব্যতীত অন্যকিছু বদলাতে পারে না।আর নেকী ব্যতীত অন্যকিছু হায়াতকে বৃদ্ধি করবে না।(সুনানু তিরমিযি-২১৩৯)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এইক্ষেত্রে স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততি পাওয়া-না পাওয়াটা মানুষের কর্মফলের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়না।
বরং এই বিষয় মহান আল্লাহ তায়ালা আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে লিপিবদ্ধ করেছেন। 

(০২)
হ্যাঁ, এমনটি বলতে পারে।
তবে এভাবে তাকদীর নিয়ে গবেষণা করতে রাসুলুল্লাহ সাঃ নিষেধ করেছেন,বরং মানুষকে এ নিয়ে না ভেবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আদেশ করেছেন। 

(০৩)
জীবনসঙ্গীকে যেই অর্থে রিযক বলা হয়,সেই অর্থে
বদকার জীবনসঙ্গীকে রিযক বলা হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...