আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম
আমি দশম শ্রেণিতে থাকাবস্থায় আবেগের বশে একজনকে লুকিয়ে বিয়ে করি। আট বছর পর আমার পড়াশুনা শেষ হলে এবং তার জব হওয়ার পরে পারিবারিক ভাবে আমাদের বিয়ে হয় আবার। ওই আট বছরেও বুঝতে পেরেছিলাম এবং দেড় বছরের সংসারেও টের পাচ্ছি যে, আমাদের আসলে মিলছেনা। আমাদের দুইজনের ফ্যামিলি স্ট্যাটাসে আকাশ পাতাল পার্থক্য। আমার ভুল ছিল। আমি ওই বয়সে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মানসিকভাবে আমি খুব ভেংগে পড়ছি। তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ, গালি এসব আমি মেনে নিতে পারিনা। কিন্তু আমার স্বামী তালাক ও দিবেনা আবার আমার উপর সন্তুষ্ট ও না। আমিও অনেক হক্ব আদায় করতে পারিনা যেহেতু আমি নিজেও এই সম্পর্কে খুশি না।
এই সম্পর্কে থাকলে আমি আরো গোনাহে জড়িয়ে যাবো। আমি কি তালাক নেয়ার অধিকার রাখি এমতাবস্থায়?  আমার শ্বশুর তাবিজ করে, পুরো পরিবার এসবে অভ্যস্ত। জিনের সাহায্য নেয়, এমন সব মানুষদের কাছে যায়। আর আমার স্বামী তার মা ভাইদের কথা দ্বারা খুব প্রভাবিত। তার ছোটভাই আমাকে অপমান করলেও উনি আমাকে প্রোটেক্ট করেনা। আমি একদমই পারছিনা এদের সাথে মানিয়ে নিতে। সব সময় একটা ভয় এর মধ্যে থাকা লাগে। আমি একদমই আর পারছিনা আর চাচ্ছিনা এই সম্পর্কে থাকতে। কি করতে পারি প্লিজ শায়েখ আমি জানি আমার ভুল ছিল। এখন কি করব?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললোহে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেনরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেনঅতঃপর বললেনহে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যেসে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধতালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবেযদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে। এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোকবা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

 

আরো জানুনঃ

ifatwa.info/12329/

 

ifatwa.info/10894/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

স্বামীর জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা,তার সাথে সদব্যবহার করা।

 

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩

 

সুতরাং স্ত্রীর উপর স্বামীর খেদমত আবশ্যক

শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা স্ত্রীর জন্য একটি অতিরিক্ত কাজ। এটা তার দায়িত্ব নয়,আবশ্যক নয়, । কিন্তু বর্তমান সমাজে মনে করা হয়, এটা তার অপরিহার্য দায়িত্ব বরং এটিই যেন তার প্রধান দায়িত্ব।

আমাদের সমাজের আবহমান কালের চলমান রীতি হলো, যৌথ পরিবারগুলোতে পুত্রবধূরা শ্বশুর-শাশুড়ির সেবাযত্ন করে থাকেন। এটাকে পারিবারিক দায়িত্ব হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।

ছেলের জন্য বউ আনাই হয় শ্বশুর-শাশুড়ির সেবার জন্য। এ সবই পরিমিতিবোধের চরম লঙ্ঘন। মা-বাবার সেবা করা সন্তানের দায়িত্ব, পুত্রবধূর নয়। (আল-বাহরুর রায়েক ৪/১৯৩, কিফায়াতুল মুফতি ৫/২৩০)

 

যদি স্বামীর মা-বাবার খেদমতের প্রয়োজন হয়, তাহলে স্বামীর কর্তব্য হলো তাঁদের সেবা-যত্ন করা। তবে কোনো স্ত্রী যদি সন্তুষ্টচিত্তে স্বামীর মা-বাবার সেবা করেন, এটা তাঁর পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। এর বিনিময়ে তিনি অনেক সওয়াব পাবেন। তবে এসব করতে আইনত তিনি বাধ্য নন। যদিও কাম্য এটাই যে স্বামীর মা-বাবাকে নিজের মা-বাবার মতো সম্মান ও সমীহের চোখে দেখবেন। তাঁদের মনেপ্রাণে ভালোবাসবেন এবং তাঁদের সেবা করতে পারাকে নিজের জন্য পরম সৌভাগ্য মনে করবেন। অনুরূপ শ্বশুর-শাশুড়িও পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের মতো আদর ও খাতির করবেন। তার সুখ-সুবিধার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

আরো বিস্তারিত জানুন- ifatwa.info/10894/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

আপনি আপনার পরিবারের মুরব্বিদেরকে তাদের মুরব্বিদের সাথে বৈঠক করাতে পারেন বা এলাকার মাতব্বরদের সাহায্য নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। কোনো ভাবেই কাজ না হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...