আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
74 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
একভাই তার স্ত্রীর সাথে নানান কারনে বনিবানা না হওয়ায় সাংসারিক ঝামেলা চলমান এবং এখন তালাক সিন্ধান্ত সর্বসাকুল্যে নেওয়া হয়েছে উভয় পরিবারের দিক থেকেই উপায়েন্তর না হয়ে ।তিনি স্ত্রীকে রাগে চর দিয়েছেন এবং খারাপ আচরণ করেছেন আবার তার স্ত্রীও তার সাথে খারাপ আচরণ করেছেন সে নিজেও স্বামীকে গায়ে হাত তুলেছেন।গালি দিয়েছেন স্বামীকে।

সবকিছু ভুলে সেই স্বামী তার স্ত্রীর কাছে নিজের করা ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছে এবং স্ত্রীকেও ক্ষমা করে দিয়েছে অতঃপর সংসার শুরু করার প্রস্তাব করেছিলেন আগে।স্ত্রীও রাজি হয়েছিলেন এবং উভয় উভয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু তার নিজের পরিবারের কথায় বর্তমানে সেই স্ত্রী ও তার মা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তিন/চার মাস থেকে স্বামীর সাথে আর যোগাযোগ রাখছেন না এবং স্বামীকে জালিম সম্বোধন করে নিজেকে মজলুম দাবি করছে অথচ দুইজনাই সংসারে কম-বেশি দোষত্রুটি খারাপ আচরণ করেছে।
প্রশ্ন:

১/স্বামীকে এভাবে বদদুয়া করছে,জালেম বলছে অথচ সেই স্ত্রী তার নিজের দোষের ব্যাপারে তার অনুতাপবোধ নাই। এইপরিস্থিতিতে সেই নারী কি সত্যিই মজলুম?  তার বদদুয়া কি স্বামীর উপর পড়বে?


২/সেই নারী ফেসবুকে বিভিন্নভাবে পোস্টে স্বামীকে উদ্দেশ্য করে দিচ্ছে নিজেকে অনেক অসহায় দাবি করছে এবং নানান কথা সমালোচনা এসব স্বামীর নামে করছে। আল্লাহ বিচার করবেন এভাবে বলছে। স্বামী একাধিকবার ক্ষমা চেয়েছে আল্লাহকে ভয় করে সুন্দর জীবনযাপন করার নিয়্যাত করে অথচ এইভাবে স্ত্রী ও তার মা কোনভাবে সেটা গ্রাহ্য করেনি। এখন সেই স্বামীর প্রশ্ন, এসব পিঠ পিছনে যারা কথা বলছে,স্বামীর দোষত্রুটির কথা বলছে এতে করে সেই অভিশাপ কি তার উপর পড়বে?
৩/ স্বামী নিজের করা ভুলত্রুটির জন্য স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এরপরেও নিজস্ব ক্ষোভ ও আত্মমর্যাদায় সেই স্ত্রী ও তার পরিবার এভাবে সম্বোধন করছে,  "বারবার ক্ষমা চাও কেন। তুমি জান্নাতের সার্টিফিকেট পেয়ে গেছ" এভাবে তাচ্ছিল্য করছে। অথচ, সেই স্বামী বিনয়ের সাথে ও স্ত্রীকে পাওয়ার জন্যই বারবার ক্ষমা চাই। স্ত্রীর পরিবার তার নিজের মেয়ের দোষগুলো কিছুই ভাবছেনা।অথচ,স্বামীকে তুই বলা,গালি দেওয়া,চিল্লাচিল্লি করা ইত্যাদি সেও করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, তাদের কাছে সেই স্বামী আর ক্ষমা প্রার্থনা না করে আল্লাহর কাছেই বলছেন তাদের কাছে বিনয় দেখালে তারা আরও তাচ্ছিল্য করে। এই ক্ষেত্রে সেই স্ত্রীর উপর দুই/তিনটা যে দোষই সে করেছিল এগুলোর জন্য সে স্ত্রীর জন্য সাদকা করতে পারবে?  যাতে পরকালে আল্লাহ এই ত্রুটির জন্য স্বামীকে জবাবদিহি না করেন।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন,

 وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ فَإِن كَرِهۡتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰٓ أَن تَكۡرَهُواْ شَيۡٔٗا وَيَجۡعَلَ ٱللَّهُ فِيهِ خَيۡرٗا كَثِيرٗا [النساء: ١٩] 

আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন। [সূরা আন-নিসা: ১৯] 

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ  

فَاتَّقُوا اللّٰهَ فِى النِّسَاءِ فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانِ اللّٰهِ وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللّٰهِ وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَه فَإِنْ فَعَلْنَ ذٰلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

‘‘তোমরা তোমাদের নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করবে। কেননা তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছো আল্লাহর আমানাত হিসেবে এবং আল্লাহর নামে তাদের গুপ্তাঙ্গকে হালাল করেছো। তাদের ওপর তোমাদের হাক্ব হলো তারা যেন তোমাদের বিছানায় এমন কাউকেও আসতে না দেয়, যাকে তোমরা অপছন্দ কর। যদি তারা তা করে, তবে তাদেরকে মৃদু প্রহার করবে। আর তোমাদের ওপর তাদের হাক্ব হলো, তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের খাদ্য ও পোশাকের ব্যবস্থা করবে।’’
সহীহ : মুসলিম ১২১৮, আবূ দাঊদ ১৯০৫, নাসায়ী ২৭৬১, ইবনু মাজাহ ৩০৭৪, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১৪৭০৫, দারিমী ১৮৯২।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ؟، قَالَ: «أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ» 

হাকীম ইবন মুআবিয়া রহ. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! স্বামীদের উপর স্ত্রীদের কী হক? তিনি বলেন, “যা সে খাবে তাকেও (স্ত্রী) খাওয়াবে, আর সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে। আর তার (স্ত্রীর) চেহারার উপর মারবে না এবং তাকে গালাগাল করবে না। আর তাকে ঘর হতে বের করে দিবে না। [আবু দাউদ: হাদীস নং ২১৪২।] 

আরো জানুনঃ- 

★কাউকে অভিশাপ দিলে তার গুনাহ মাফের দোয়া চাইবে,অভিশাপের বিপরিত তার জন্য ভালো কিছু আল্লাহর কাছে চাইবে,এবং তওবা ইস্তেগফার পাঠ করবে।
ইনশাআল্লাহ ক্ষতি হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে স্ত্রীও মাজলুম ছিলো,তবে পরবর্তীতে স্বামীর গায়ে হাত তোলায় ও গালি  গালিগালাজ করায় সে তার প্রতিশোধ নিয়ে ফেলেছে,তাই এখন আর তাকে মাজলুম বলা যায়না।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার বদ দুয়া কবুল হবেনা,ইনশাআল্লাহ ।
তবে এক্ষেত্রে দুই নং প্রশ্নের জবাব মোতাবেক কাজ করবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে সেই অভিশাপ তার উপর পড়বেনা,ইনশাআল্লাহ। 
তবে এক্ষেত্রে আপনি তার গুনাহ মাফের দোয়া চাইবেন,অভিশাপের বিপরিত তার জন্য ভালো কিছু আল্লাহর কাছে চাইবেন,এবং তওবা ইস্তেগফার পাঠ করবেন।

(০৩)
সে স্ত্রীর জন্য সাদকা করতে পারবে,তবে তাহা আবশ্যক নয়। এটি তার ইচ্ছাধীন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...