আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম
১। হাদিসে উল্লেখ দেখেছি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ নামাজ পড়ার পড়ে জামাতের মুসল্লির দিকে ঘুরে বসে যিকির/দোআ করতেন। তারপর তার রুমে যেয়ে সুন্নাত নামাজ আদায় করতেন। আমি যদি এইটাকে সুন্নাত ভেবে সর্বদা সুন্নাত নামাজ বাসায় আদায় করি তাহলে কি সওয়াব পাবো? ( আমি বেশ কয়েকদিন এই হাদিস দেখে সুন্নাত নামাজ বাসায় আাদায় করতাম সব সময়। একদিন হঠাত কাছপর একজন ভাই আমাকে ডেকে বললো সুন্নাত বাসায় পড়ো ঠিক আছে কিন্তু সব সময় কেন? আমলটা আমাদের নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য খাস ছিল, আমরা উনার মত হবহু তো করতে পারবো না, তাই মাঝে মাঝে মসজিদে আদায় করা ভালো। ভাইটি কোনো আলেম না। কিন্তুু ু উনি নিয়মিত নামাজ আদায় করেন।)

আমি হুজুরের কাছে এই বিষয়ে মতামত জানতে চাচ্ছিলাম।

২। আমি এশার নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নাত পড়ি। সুন্নাত শেষ হলে আবার  দুইরাকাত নামাজ আদায় এর নিয়ত করি। তারপর সালাম ফিরিয়ে আলাদা এক রাকাআত বিতর আদায় করি। আমার এভাবে নামাজ আদায় কি ঠিক আছে? সুন্নাতের পড়ে যে দুই রাকাত নামাজ পড়ি এটা কি কিয়ামুল্লাইল হিসেবে গন্য হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,

فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ فَإِنَّ أَفْضَلَ الصَّلاَةِ صَلاَةُ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ الْمَكْتُوبَة

অর্থ: ‘হে লোকসকল! তোমরা বাড়িতে নামাজ আদায় কর, কেননা ফরজ নামাজ বাদে সকল নামাজ নিজ বাড়িতে পড়া সর্বোত্তম।’
[সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭৩১]

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নামাজের কিছু অংশ তোমরা তোমাদের ঘরসমূহে আদায় করো আর ঘরগুলোকে কবরস্থানে পরিণত করো না। 
(সহিহ বুখারি: ৪২২, সহিহ মুসলিম: ৭৭৭)

অন্য এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহা বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাকে হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নফল নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বর্ণনা দিলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে যুহরের পূর্বে ৪ রাকাআত পড়ে মসজিদে রওয়ানা করতেন আর মসজিদে গিয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করে আবার ঘরে ফিরে এসে দুই রাকাআত পড়তেন।
তিনি মানুষের সঙ্গে মাগরিবের নামাজ আদায় করতেন অতঃপর ঘরে ফিরে দু’রাকাআত পড়তেন। মানুষের সঙ্গে ইশার নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরে দুই রাকাআত পড়তেন। 
(সহিহ মুসলিম: ৭৩০)

وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا قَضَى أَحَدُكُمُ الصَّلاَةَ فِي مَسْجِدِهِ فَلْيَجْعَلْ لِبَيْتِهِ نَصِيبًا مِنْ صَلاَتِهِ فَإِنَّ اللَّهَ جَاعِلٌ فِي بَيْتِهِ مِنْ صَلاَتِهِ خَيْرًا ” .

আল্লাহর ইবাদত-আনুগত্য যেখানে করা হয়, সেখানে রহমতের ফেরেশতারা আসা যাওয়া করেন। এতে সেখানে কল্যাণ নেমে আসে। হযরত জাবির রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে ঘরে আদায়ের জন্য একটি অংশও যেন সে রেখে দেয়। কারণ, আল্লাহ তায়ালা নামাজের ফলে তার ঘরে কল্যাণ দান করবেন। 
(সহিহ মুসলিম: ৭৭৮)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
সুন্নাত নামাজ ঘরে আদায় করাই উত্তম।
সুতরাং আপনি যদি এইটাকে সুন্নাত ভেবে সর্বদা সুন্নাত নামাজ বাসায় আদায় করি তাহলে সওয়াব পাবেন,ইনশাআল্লাহ  

উল্লেখ্য যে যদি কাহারো ক্ষেত্রে বিষয় এমন হয় যে ঘরে সুন্নাত আদায়ের নিয়তে মসজিদ থেকে চলে আসলে আর সে সুন্নাতই আদায় করবেনা,বা অন্য কাজে লিপ্ত হয়ে যাবে,সেক্ষেত্রে তার জন্য মসজিদে সুন্মাত আদায় উত্তম হবে। 

(০২)
আপনি হানাফি মাযহাব অনুসারী হয়ে থাকলে এভাবে বিতির আদায় ঠিক হবেনা।
এতে বিতর আদায় হবেনা।
পুনরায় এ বিতর গুলোর কাজা আদায় করতে হবে।

তবে আপনি আহলে হাদীস দের অনুসারী হয়ে থাকলে আপনার এভাবে বিতর আদায় হবে,উক্ত দুই রাকাত কিয়ামুল লাইল এর অন্তর্ভুক্ত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...