আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
আসসালামু আলাইকুম।
জালিম যদি অনেক জুলুম করার পর কখনো তাঁর ভুল বুঝতে পারে। অনুতপ্ত হয় আর মাজলুম এর কাছে মাফ চায় ও তাঁর হক ফিরিয়ে দিতে চায়। কিন্তু মাজলুম টাকা নিতে চায়না। টাকা ছাড়াও আরো অনেক কিছু আছে যেমন জুলুমকারীর কারণে মাজলুম এর সংসারে বিচ্ছেদ হয়েছে। এখন সে বলছে,টাকা নাহয় দিলো কিন্তু আমার সংসার,আমার উপর দেওয়া অপবাদ ফিরিয়ে দিতে পারবেন? এখন আসলেই কিছু জিনিস ফেরত দেওয়া চায়না। তবুও বারবার টাকা দিতে চাইছে। সে নিবে না বলেছে,আরো বলেছে,আমি মাফ করে দিয়েছি কিন্তু বিচার আল্লাহ করবেন,পরকালে দেখা হবে। ইত্যাদি। এখন এক্ষেত্রে কি করণীয়? আসলেই কিছু বিষয় আর কখনো চাইলেও ফেরত দেওয়া যায় না। আর মাজলুম যদি এভাবে বলে তবে জালিমের এখন কি করণীয়? সে অনেক ভয় পাচ্ছে। সে মাফ চেয়েছেন প্রায় ৩-৪ বার। দয়া করে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (714,080 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।
যেমন হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - : " ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺭﺟﻞ ﻗﺘﻞ ﺗﺴﻌﺔ ﻭﺗﺴﻌﻴﻦ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎ ، ﺛﻢ ﺧﺮﺝ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﺄﺗﻰ ﺭﺍﻫﺒﺎ ، ﻓﺴﺄﻟﻪ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﻟﻪ ﺗﻮﺑﺔ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ; ﻓﻘﺘﻠﻪ ، ﻭﺟﻌﻞ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺟﻞ : ﺍﺋﺖ ﻗﺮﻳﺔ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ ، ﻓﺄﺩﺭﻛﻪ ﺍﻟﻤﻮﺕ ﻓﻨﺎﺀ ﺑﺼﺪﺭﻩ ﻧﺤﻮﻫﺎ ، ﻓﺎﺧﺘﺼﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﺮﺣﻤﺔ ﻭﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ، ﻓﺄﻭﺣﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﻘﺮﺑﻲ ، ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﺒﺎﻋﺪﻱ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻗﻴﺴﻮﺍ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻓﻮﺟﺪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻗﺮﺏ ﺑﺸﺒﺮ ﻓﻐﻔﺮ ﻟﻪ " ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বনি ইসরাঈল গোত্রে একজন ব্যক্তি ছিল,যে নিরানব্বই জনকে হত্যা করেছিল।অতঃপর যখন হেদায়তের নিকটবর্তী হল,তখন সে একজন পাদ্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল তার তাওবাহ কি কবুল হবে?ঐ পাদ্রী উত্তরে বলল,না, তোমার তাওবাহ কবুল হবে না। তখন সে ঐ পাদ্রীকেও হত্যা করে ফেলল।অতঃপর সে তার তাওবাহর কবুল হওয়া না হওয়া সম্পর্কে লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগল।তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক গ্রামে যাও সেখানে হয়তো কোনো সমাধান পেতে পারেন। সে ঐ গ্রামের দিকেই যেতে লাগল,তার বুক সেই গ্রামের দিকে থাকাবস্থায় রাস্তায় মধ্যখানে সে মূত্যুমূখে পতিত হল।সে সময় জান কবজের ব্যাপারে রহমতের ফিরিস্তা এবং আযাবের ফিরিস্তিাদের মধ্য ঝগড়া বেধে গেলো।তখনই আল্লাহ তা'আলা তার উদ্দিষ্ট ঐ গ্রামকে নিকটবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন।এবং ছেড়ে আসা গ্রামকে দূরবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন। তারপর আল্লাহ তা'আলা ফিরিস্তাদেরকে জায়গা পরিমাপন করার নির্দেশ দিলেন।জায়গা পরিমাপণ করে দেখা গেল যে, উদ্দিষ্ট গ্রাম ছেড়ে আসা গ্রাম থেকে অর্ধহাত কম।অতঃপর সেই ব্যক্তিকে মাফ করে দেয়া হল।(এবং রহমতের ফিরিস্তা তার জান কবয করল)
(মিশকাত-২৩২৭)

দেখুন, আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে গেলে বান্দার হক পর্যন্ত মাফ করে দিতে পারেন।কেননা যাকে হত্যা করা হয়েছে তার বেঁচে থাকার হক্বকে ধংস করা হয়েছিলো।সুতরাং এটাও একটা বান্দার হক।
কিন্তু এর পরও আল্লাহ তা'আলা মাফ করে দিয়েছেন।এবং হক নষ্ট হয়ে যাওয়া উক্ত বান্দাদিগকে এমন পুরুস্কার দান করবেন যে, তারা আর তাদের হক সম্পর্কে কোনো প্রকার অভিযোগ দায়ের করবে না। বান্দার হক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/641 (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যে ভাইয়ের প্রতি জুলুম করা হয়েছে, সর্বদা তার ভালো কিছু করার চেষ্টা করা।তার সমস্ত জরুরতকে পূর্ণ করার চেষ্টা করা। বিশেষ করে এমন কিছু কাজ করা,যাদ্বারা মজলুম খুশী হয়ে ক্ষমা করে দেয়। আজীবন এই চেষ্টা অভ্যাহত রাখা। এবং আল্লাহ রাজি ও খুশী করার চেষ্টা করা।যদি ঐ মাজলুমকে আজীবন খুশী করার চেষ্টা করা হয়, তারপরও সে মন থেকে ক্ষমা করে না দেয়, এবং আপনি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে নিতে পারেন, তাহলে আল্লাহ নিজ পক্ষ থেকে আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন। এবং ঐ মজলুমকেও এমনভাবে খুশী করে দিবেন যে, সে আর কিয়ামতের দিন কোনো প্রকার অভিযোগ করার চিন্তা করবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (714,080 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...