আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ হযরত
আমার একটা মেয়ে আছে বয়স ১০মাস হয়নি।কয়েকদিন বাকি আছে।সিজার হয়েছিল আমার ওয়াইফ এর। এমতাবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আমার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। আজকে আলট্রাসনোগ্রাম করিয়েছি, ৭সপ্তাহ বা দেড় মাসের মতো। এখনও হার্টবিট আসেনি।  সময় অনুযাই অনেক ছোট রয়েছে বাচ্চা। ডাক্তার বলেছেন, পরে মায়ের সমস্যা হওয়ার চান্স আছে কিছুটা , ৩সপ্তাহ পর আবার দেখাতে বলেছেন। নস্টে হয়ে গেলে ডি.এম.সি. করাবেন। নইলে বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

আর অন্যদিকে আমার ওয়াইফ খুবই সেনসেটিভ সবকিছু ন্নিয়ে। কোনোভাবেই চাচ্ছেনা এখন বাচ্চা নিতে,কারন, দুধের বাচ্চা রয়েছে, মেয়েকে সামলাতে পারেনা ঠিকমতো। অনেক কষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে গর্ভে আরেকটা আসাতে অনেক ডিপ্রেসড। ইদানিং পেট ব্যাথাও করে। আমার শশুর শাশুড়ী সবাই আমাকেই দূষারুপ করছে, আমার বেখেয়ালিতে এইরকম হয়েছে।  আমার পরিবারের কেউও জানেনা। জানলে আমাকেই দূষবে। পরবর্তীতে আমার ওয়াইফ এর কিচ্ছু হলে তার পরিবার আমাকেই দূষবে। আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছিনা।

আবার আমার ইনকাম সীমিত। এই ইনকামে দুইজনের ঘর অনেক টানাপোড়েনে চলে। বড় ভাইয়ের দুকানে বেতন ভুক্ত কাজ করি। এই মাস পরে বাসা পাল্টাবো। কারন আমার ওয়াইফ, ভাবি, আমার মা একবারে বনিবনা হয়না। ভাবির সাথে হাতাহাতি হয়ে যায়। তাই বাসা পালটানো দরকার হয়ে গেছে।বাসা পাল্টালে আমার ওয়াইফ আরও একা হয়ে যাবে। একা একা মেয়ে আবার গর্ভের সন্তান পালা সম্ভব না তার জন্য। রাগের মাথায় বার বার বলতেছে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলবে।আমি ইচ্ছা করে এটা করেছি। আমি তার জীবন নষ্ট করেছি আমি যেনো তাকে ছেড়ে দেই। আরও অনেক কিছু।আমরা দুইজন মিলেও মেয়েকে সামলাতে পারিনা।এখন আরেকটা কিভাবে কি করবো।
এখন কি করবো? নষ্ট করলে কি গুনাহ হবে নাকি নষ্ট করা যাবে?  চাইনা কোনো গুনাহ করতে। কিন্তু বউএর চাপ, তার ফ্যামিলির কথাবার্তা, নিজের পরিবার জানলে আরও ঝামেলা।
by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম 
ডাক্তার বলেছেন আমার ওয়াইফ এর সমস্যা হতে পারে। ৩সপ্তাহ পরে আবার চেক করে বলবেন। কিন্তু আমার ওয়াইফ বলছে সে নিতে পারবেনা, তার পেট ব্যাথা করে, সিলাই ছিরে যাবে, মানষিক ভাবে অপ্রস্তুত, ধৈর্য নেই একবারে। বুঝতেই চায়না। অনেক ভয় পাচ্ছে,সে যদি মরে যায়। আর কত কি।   শাশুড়ী, শশুর সবাই একই কথা বলছে।অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি। এমনকি আজকে কথা সময় বলে, তাকে যেনো তালাক দিয়ে দেই,তারপরও সে এই বাচ্চা এখন নিতে পারবেনা । আমাকে বলেছে,তুমাকে এক তালাক দুই তালাক তিন তালাক দিলাম, তুমিও আমাকে দেও। আমি কিচ্ছু বলিনি এই ব্যাপারে। আমি এখন নিরুপায়।  এখন কি ঔষুধ খাইয়ে নষ্ট করা ঠিক হবে?( সে মনে করছে সে মরে যাবে,সিলাই ছিড়ে যাবে) এই কারনে

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে
জীবন্ত সমাধিস্থ করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা
মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাত নেই। এজন্য

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গর্ভের সন্তানের বয়স কেবল ৭সপ্তাহ বা দেড় মাসের মতো  হয়েছে,তাই এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর কোলে  দুধের শিশুও আছে।

সুতরাং এক্ষেত্রে গর্ভের দরুন যদি দুধ একেবারে শুকিয়ে যায়,যার কারনে দুধের শিশুকে দুধ পান করাতে না পারে,অথবা কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার আপনার স্ত্রীকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে আপনার স্ত্রীর জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে সেক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী গর্ভপাত করতে পারবে।
,
নতুবা গর্ভপাত করা জায়েজ হবেনা।
গুনাহ হবে।

তবে "ইনকাম কম" এই অজুহাত মাথায় আসতেই দেয়া হবেনা। এই অজুহাতে গর্ভপাত করা হারাম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...